শনিবার ● ৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » পার্কের ম্যানেজারের সহায়তায় ৭ম শ্রেনীর ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষন
পার্কের ম্যানেজারের সহায়তায় ৭ম শ্রেনীর ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষন
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় একটি পার্ক অসামাজিক কার্যকলাপের আস্তানা হিসাবে গড়ে উঠেছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করছে। উপজেলার ছোট ধলহরা গ্রামের ব্লু-ম্যান গ্রামীণ শিশু পার্ক নামের এই জায়গা বেড়াতে গিয়ে ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রী দফায় দফায় ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অরিফুল ইসলাম খাঁ ও রতন মন্ডল নামের দুজন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। রতন মন্ডল এই পার্কটির ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্বে রয়েছে। পুলিশ ও ভিকটিমের স্বজনরা জানায়, শৈলকুপার ধাওড়া হাইস্কুলের ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে কাশিনাথপুর গ্রামের ইসলাম খাঁনের পুত্র আরিফুল ইসলাম ও ছোট ধলহরাচন্দ্র গ্রামের সিরাজের ছেলে রিয়াজ নামে দু যুবক স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্ত্যক্ত করতো। ছাত্রীর বাবা প্রতিবাদ করায় তাকে হুমকি দিত। গত ৪ এপ্রিল ওই ছাত্রী গ্রামের পার্কে গেলে তাকে একটি কুঠিরে নিয়ে ধর্ষন করে আরিফুল। ধর্ষনের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ব্লাক মেইল করতে থাকে। ঈদের দিন পার্কে বেড়াতে গেলে আরিফুল ও রিয়াজ ওই ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে পার্কের ভিতরে একটি কুঠিরে নিয়ে আবারও ধর্ষন করে। এতে ছাত্রীটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধর্ষনের ঘটনায় পার্কের ম্যানেজার ছোট ধলহরা গ্রামের ইন্জাল মন্ডলের ছেলে রতন মন্ডল সহায়তা করে। মেয়েটির বাবা বৃহষ্পতিবার রাতে শৈলকুপা থানায় তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই আরিফুল ও রতন মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে। রিয়াজ পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, ইদের দিন পার্কে গিয়ে তার কিশোরী কন্যা ধর্ষণের শিকার হয়, এসবের ভিডিও করে পরিবার কে ব্লাকমেইলিং করে আসছিল ধর্ষকরা। তিনি দ্রুত পার্কের নামে অসামাজিক কার্যক্রমের আস্তানা বন্ধের দাবি সহ ন্যায় বিচার চেয়েছেন। শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানিয়েছে কিশোরী মেয়েটিকে নানা প্রলোভনে দফায় দফায় ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইলিং করে আসছিল। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর আগে শৈলকুপা উপজেলার ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ছোট ধলহরা গ্রামে ব্লু-ম্যান গ্রামীণ শিশু পার্ক ও আবাসন প্রকল্প নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। তবে পার্ক টি চালু হবার পরপরই নানা বিতর্ক ওঠে এখানকার কার্যক্রম নিয়ে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পার্কে বেড়াতে এসে এক শ্রেণীর মানুষ ব্লাকমেইলিং করতে থাকে দর্শনার্থীদের। আস্তে আস্তে পার্কের নামে এখানে অসামাজিক কার্যক্রম শুরু হয়। নেশাক্তদের আড্ডার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান পতিতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। পার্কটিতে বেশ কিছু ছোট খুপড়ি গোপন ঘর দেখা গেছে। এসব ঘরে উঠতি বয়সী তরুন-তরুনীরা টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ ও কখনো কখনো ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে থাকে। এতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তারা এসব কাজে বাধা দিতে থাকে। তবে পার্কটির দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার( গ্রেফতারকৃত) রতন মন্ডল প্রভাব খাঁটিয়ে এসব অসামাজিক কাজ চালিয়ে আসছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা মহিউদ্দিন জোয়ার্দ্দার জানান, পার্কে নামে এখানে অসামাজিক কার্যক্রম চলছে, এতে উঠতি বয়সীদের মাঝে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম জানান, এটি মিনি পতিতালয় হিসাবে পরিণত হয়েছে, এটি বন্ধের জন্য অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে। ব্লু-ম্যান গ্রামীণ পার্কটির পরিচালক হিসাবে নাম রয়েছে মোস্তফা আজমল মুকুলের আর মালিক হিসাবে সৈয়দ লাবু নামের আমেরিকা প্রবাসী এক ব্যাক্তি বলে জানা গেছে। তবে বর্তমানে পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত পার্কটির ম্যানেজার রতন মন্ডলই সবকিছুর দায়িত্বে ছিলেন। এসব ঘটনায় পার্কের মালিক সৈয়দ লাবুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঝিনাইদহে পুলিশের কাছ থেকে মাদকসহ আসামী ছিনতাই
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ মধুপুর চৌরাস্তা থেকে মাদকসহ আটক আকিদুল ইসলাম ওরফে দরবেশ নামে এক আসামীকে ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানিয় ইউপি সদস্যর নেতৃত্বে একদল ব্যাক্তি। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানার দুই এসআইসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আসামী উদ্ধার ও দোষীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে। আহতরা হলেন এসআই আনোয়ারুল হোসেন, এসআই আজিজুর রহমান, কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম, সমেল ও এলেম। ঝিনাইদহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান শুক্রবার সন্ধা ৭টার দিকে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ঝিনাইদহ থানা পুলিশের একটি দল ঝিনাইদহ-ঢাকা মহাসড়কের কালীচরণপুর ইউনিয়নের মধুপুর চৌরাস্তায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ এক চায়ের দোকান থেকে ৩’শ গ্রাম গাঁজাসহ দোকানদার উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আকিদুল ওরফে দরবেশকে আটক করে। আটকের খবর পেয়ে এলাকার ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজুর নেতৃত্বে বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ী হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে আসামী আকিদুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। তিনি আরো জানান আসামী উদ্ধারসহ পুলিশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের জোর অভিযান চলছে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতয়েন করা হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামীকে ফের গ্রেফতারের জন্য এলাকায় পুলিশী অভিযান চালানো হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এপর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন কালিচরণ পুর ইউনিয়নের মেম্বার মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে স্থানীয়রা সঙ্গবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা দুই এসআইসহ পাঁচ পুলিশকে যখম করে।
মহেশপুরে স্বামীর কুড়ালের কোপে স্ত্রী নিহত
ঝিনাইদহ :: মাদকাসক্ত স্বামীর কুড়ালের আঘাতে স্ত্রী জুলিয়া খাতুন (২৩) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত আটটার দিকে মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়নের সেজিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ স্বামী বাবলুর রহমান (২৭) কে গ্রেপ্তার করেছে। স্ত্রী হন্তারক বাবলুর রহমান সেজিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে মাদক সেবন করে এসে বাবলু প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তাদের ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। শুক্রবার রাত আটটার দিকে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে স্বামী ঘরে থাকা কুড়াল দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়। খবর পেয়ে দ্রুত মহেশপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্বামী বাবলুর রহমানকে গ্রেফতার করে। নিহত জুলিয়া খাতুন তিন সন্তানের জননী। মহেশপুর থানার ওসি সেলিম মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
আতশবাজি ফোটানো নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকালে হলিধানী মাঠপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন ওই গ্রামের আবদুর রহিম বাদশা, ইরান বাদশা, সেলিম মোল্লা, আমিনা খাতুন, লিটন মিয়া, আলী হাসান, রহমত আলী, সালাম মিয়া, রাসেল হোসেন ও নাজমুল হোসেন। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাতে হলিধানী চাতাল এলাকায় কে বা কারা আতশবাজি ফোটায়। এ নিয়ে সন্ধ্যায় ওই গ্রামের মসলেম উদ্দিনের সমর্থকদের সঙ্গে ওমর আলী সর্দারের সমর্থকদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে নারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালীগঞ্জে বাল্যবিবাহ দিতে গিয়ে ধরা কনের বাবা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাল্যবিবাহ আয়োজনের দায়ে কিশোরী কনের বাবাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার বেলা ১ টার দিকে উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের মাঝদিয়া গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতটি পরিচালনা করেন কালীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুল্লাহ হাবিব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুল্লাহ হাবিব জানান, গোপন সংবাদে জানতে পারেন, শুক্রবার উপজেলার মাঝদিয়া গ্রামে একটি বাল্য বিয়ের আয়োজন চলছে। এরপর তিনি দুপুর ১ টার দিকে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ওই গ্রামের কনের পিতা আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে হাজির হন। কনের কাগজপত্রের রেকর্ড দেখে নিশ্চিত হন বয়স হয়নি। ফলে তিনি বাল্য বিয়েটি বন্ধ করেন। তবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কনের বাবাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে বিয়ে বাড়িতে প্রশাসনের অভিযান চলছে খবর পেয়ে মাঝপথ থেকেই পালিয়ে যায় বর। সঙ্গে বরযাত্রীরাও হাওয়া। ফলে নববধু ছাড়াই বাড়িতে পালিয়ে যেতে হয়েছে বর মাসুদ রানাকে। সে মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামের শাহজাহান মালিতার ছেলে।
হরিণাকুন্ডতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ১৫
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আজ সকালে উপজেলার যাদবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিক্রয় করা জমি নিয়ে কয়েক মাস যাবত ওই গ্রামের বজলু ফকিরের সাথে একই গ্রামের নাসিম মোল্লার বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার সকালে বিরোধপুর্ণ ওই জমিতে থাকা ফসল নষ্ট করে চাষ করে বজলু ফকিরের লোকজন। এতে বাঁধা দিলে নাসিম মোল্লাকে মারধর করে তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কোন পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।