শুক্রবার ● ২৫ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » বিশ্বনাথে নদীর চর দখলের মহোত্সব!
বিশ্বনাথে নদীর চর দখলের মহোত্সব!
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি ::সিলেটের বিশ্বনাথে প্রভাবশালীদের নেপথ্যে বিভিন্ন নদ-নদীর চর দখল করে দোকানঘর নির্মাণ অব্যাহত রাখার অভিযোগ রয়েছে৷ উপজেলার আট ইউনিয়নের বিভিন্ন নদ-নদী-খালের চর দখল করে প্রভাবশালী মহল বিগত কয়েক বছর ধরে দোকানকোঠা,বাসাভাড়া নির্মাণ করে আসছেন৷ উপজেলায় বর্তমানেও সরকারি জায়গা দখলের মহা-উত্সব চলছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন৷
জানা যায়, নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশে দিন দিন নদী-নালা, খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে “নদীমাতৃক পরিচয়টি “হারাতে বসেছে তেমনি ভূমি খেকো মানুষজনও অবৈধ ভাবে এসকল জায়গা দখল করে গড়ে তুলছেন দোকানকোঠা৷ তাইতো তারা মনের আনন্দে গাইতে থাকে “নদীর এপাড় ভরেছে, ওপাড় ভরেছে-মধ্যভাগটা কেন ভরছে না/ দখল করে তাতে বানাতে চাই মোরা বড় বড় অট্রালিকা”৷ এসকল ভূমি খেকো মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বনাথের বেশ কিছু প্রভাবশালীরা ব্যসত্ম সময় কাটাচ্ছেন নদীর চর দখল করে তাতে অবৈধভাবে অট্টালিকা বানাতে৷ কেউবা আবার বানাচ্ছেন রান্না ঘর, কেউবা গরু ঘর, কেউবা আবার টয়লেট, কেউবা আবার দোকান কোঠা৷
নদী-নালা, খাল-বিল ভরাটের পর আবার ভূমি খেকো এ মানুষ গুলোর কারন সিলেটের বিশ্বনাথের প্রান কেন্দ্র দিয়ে বয়ে যাওয়া এককালের খরস্রোতা বাসিয়া নদী কালের বিবর্তনে এখন তার ঐতিহ্য হারিয়ে যেন এখন একটি ছোট খালে পরিনত হয়েছে৷ এক সময় যে নদী দিয়ে স্রোত বয়ে যেত, সে নদী দিয়ে এখন পায়ে হেঁটে পার হওয়া যায় অতি সহজেই৷ মাটি ভরাটের সঙ্গে সঙ্গে প্রভাবশালীরা নদীর চর দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা বাড়ীর জন্য নির্মান করছেন বড় বড় অট্রালিকা৷ গত ১৫/২০ বছর আগেও বাসিয়া নদীতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পালের নৌকাসহ বড় বড় নৌকা, লঞ্চ, ষ্টিমার দেখা গেলেও এখন আর এসব দেখা যায়না৷ উপজেলার রাজাগঞ্জবাজার দিয়ে বয়ে যাওয়া মাকুন্দা নদীও ভূমিখেকোদের দখলে চলে যাওয়ার কারনে মাকুন্দা নদী আজ বিলিন হয়ে যাওয়ার পথে৷
বিশ্বনাথে সর্ববৃহৎ চরচন্ডীর খালকে আজ ছোট ড্রেইনে পরিণত হয়েছে৷ চরচন্ডী খালটি দীর্ঘ দিন ধরে ভূমিখেকোদের দখলে থাকার কারনে এর তীরে প্রভাবশালীরা বাসা-বাড়ী-দোকান ঘর নির্মান করে চলছেন অবাধেই৷ এক সময় এই খাল দিয়ে নৌকার মাধ্যমে জগন্নাথপুর ও ছাতক থানা থেকে বিশ্বনাথে টাটকা সবজি আমদানী করা হলেও বর্তমানে এখন আর সেই সুযোগ নেই৷ যার ফলে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, অন্যদিকে টাটকা সবজি খাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন৷
নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া ও অবৈধ দখলের ফলে কৃষকদের দুঃচিনত্মা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ কারণ পানির অভাবে বোরো ফসল উত্পাদনে মারাত্নক বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে৷ ফলে বিশ্বনাথে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ যার কারনে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ে বিশ্বনাথবাসীর কষ্ঠ দিন দিন ভেড়েই চলছে৷ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে নদীগুলো খনন করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান এলাকাবাসি৷
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমীন বলেন, অবৈধ দখলের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে৷ ইতি মধ্যে কয়েকটি মৌজার কাজ শেষ হয়েছে৷ দখলের তালিকা কাজ শেষ হওয়ার পর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে৷