বৃহস্পতিবার ● ১২ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পিতার হয়রানিমুলক মামলা ও ঘর থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চার কন্যা
পিতার হয়রানিমুলক মামলা ও ঘর থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চার কন্যা
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালার চোংড়াছড়িতে সৎ মায়ের কুপরামর্শে পিতা কর্তৃক নির্যাতন, হয়রানি, মামলা ও ঘর থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চার কন্যা।
গতকাল বুধবার ১১ মে সকাল ১১টায় উপজেলার হোটেল ইউনিটি কনফারেন্স রুমে এ সংবাদ সম্মেলন করে পিতা সোহরাব হোসেন সওদাগরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলেন তারই কন্যা মারুফা, খাদিজা, জেসমিন ও সুমাইয়া আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চোংড়াছড়ি এলাকার মৃত মোকসেদ আলী হাওলাদারের পুত্র পিতা সোহরাব হোসেন সওদাগরের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় কন্যা খাদিজা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমাদের মা পরিতন নেছা গত ১৯ বছর পূর্বে ইন্তেকাল করেন৷ মায়ের মৃত্যুর এক মাস পর আমার পিতা সোহরাব হোসেন সওদাগর আমার আপন খালা ফাতিমা আক্তারকে বিয়ে করেন৷ তার গর্ভে দুই পুত্র সন্তান জন্ম নেয়৷ দুই পুত্র সন্তান জন্ম নেয়ার পর থেকেই সৎ মায়ের কুপরামর্শে পিতা আমাদেরকে অবহেলা করতে শুরু করেন৷ আমার বড়বোন মারুফা আক্তারের বিয়ের কিছুদিন পর আমার সৎমায়ের সেলাই মেশিন ধরাকে কেন্দ্র করে আমাকে রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং আমার বইখাতা পুড়িয়ে দেয়।
এসময় আমি আমাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী চোংড়াছড়ি আর্মি ক্যাম্পে আশ্রয় নেই৷ যা সামাজের গণ্যমান্যরা অবগত। গত ৮বছর পূর্বে আমার পিতা আমাদের তিন বোনকে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে আমার বড়বোন মারুফা আক্তার ও তার স্বামী ফজলুল করিম আমাদেরকে আশ্রয় দেয় এবং আমাদেরকে পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহন করে।
সম্প্রতি আমি খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ হতে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি। আমার ছোটবোন জেসমিন আক্তার দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজ হতে স্নাতক পাশ করেছে। পাশাপাশি আমার ছোটবোন সুমাইয়া আক্তার দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করেছে। আমার ছোটবোন জেসমিন আক্তারকে গত ৭বছর আগে আমার পিতা রড দিয়ে মারধর করে। এসময় ওর একটি হাত বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। পাশাপাশি এককানে কম শুনতে শুরু করে। আমার পিতা বিভিন্ন সময়ে আমাদের চরিত্র নিয়ে সমাজে কুৎসা রটিয়ে আমাদের বিবাহ ভেঙে দেয়। সম্প্রতি চোংড়াছড়ি আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন একটি খাস ভুমিতে আমার বড়বোন মারুফা আক্তার ও ভগ্নিপতি ফজলুল করিম একটি ঘর নির্মাণ করতে গেলে আমার পিতা তার দ্বিতীয় সংসারের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আমার ভগ্নিপতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে যখম করে।
আমার পিতা আমার সৎ মায়ের কুপরামর্শে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন, হয়রানি, মামলার পাশাপাশি পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করছে। আমরা প্রাপ্ত বয়স্ক তিন বোন বর্তমানে নিরুপায়। আমাদের পিতা আমাদেরকে সন্তান হিসেবে স্বীকারও করে না। আমরা আমাদের অধিকার চাই। এ বিষয়ে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি বলে সংবাদ সম্মেলনে আকুতি চার মেয়ের।