শিরোনাম:
●   রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতুসহ ৭২ জনের নামে মামলা ●   ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে রাঙামাটিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ ●   দেশব্যাপী ধর্ষণ ও সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন রাঙামাটি কলেজ ছাত্রদল ●   জিয়া হায়দার বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেস্টা হলেন ●   আত্রাইয়ে আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের উদ্বোধন ●   ফিলিপাইনের রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত অলিউর রহমান ●   ঝালকাঠি স্বর্ণ মার্কেটে বোমা বিস্ফোরন ●   কাউখালীতে জাতীয় দূর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ●   দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে মিরসরাই কলেজ ছাত্রদলের মানববন্ধন ●   ঈশ্বরগঞ্জে চেয়ারম্যানসহ ৮৬ জনের গণস্বাক্ষরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ●   সন্ত্রাসীদের দমনে বিলাইছড়িতে সেনা অভিযান ●   বাঙ্গালহালিয়াতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ●   ঝগড়াবিলে বনাঞ্চলে আগুন ●   রাঙামাটিতে জাতীয় ৪ রাজনৈতিক দলের ঐক্য ●   হাটহাজারীতে অগ্নিকান্ডে ৪ পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই ●   আত্রাইয়ে আমীর-গালিব, সেক্রেটারী-তোজাম্মেল ●   রাউজানে কৃষিজমিতে ঘর তৈরির হিড়িক ●   রাউজানে বসতঘরে আগুন ১ শিশুর মৃত্যু ●   ফটিকছড়িতে দলিল জালিয়াতির অপরাধে প্রতারক কারাগারে ●   খাগড়াছড়িতে শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু ●   ঝালকাঠিতে ডিবির অভিযান ইয়াবাসহ আটক-১ ●   রাঙামাটি জেলা পরিষদ পূর্নগঠন কেন অবৈধ নয় হাইকোটের রুল জারী ●   কাপ্তাইয়ে নারী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ●   ফটিকছড়িতে রক্তছড়ি খাল খননের উদ্বোধন ●   ফটিকছড়িতে ৩২০ পরিবারকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ ●   গ্যাসের চুলা থেকে আগুনে পুড়লো ৭ বসতঘর : আহত-৫ ●   চুয়েটে গাঁজা সেবনকালে ১৩ শিক্ষার্থী আটক ●   পাঁচ হাজার টাকার জন্য অবসরপ্রাপ্ত সৈনিককে কুপিয়ে হত্যা ●   অটোরিকশায় টোকেন বাণিজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ●   সর্বাবস্থায় অন্তঃকরণ পবিত্র রাখতে পারার নামই রোজা : শাহেদ আলী চৌধুরী
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ১৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মাটিরাঙায় বসতবাড়ির জায়গা দখলে নিতে মা’কে মারধর
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মাটিরাঙায় বসতবাড়ির জায়গা দখলে নিতে মা’কে মারধর
বুধবার ● ১৮ মে ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাটিরাঙায় বসতবাড়ির জায়গা দখলে নিতে মা’কে মারধর

--- খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: ফাতেমা বেগম (৭০)। স্বামী-মকবুল আহমেদ। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার ৯নং পৌর ওয়ার্ড, জিয়ানগরের বাসিন্দা ও তিন ছেলে সন্তানের জননী তিনি। স্বামী দীর্ঘদিন যাবত রোগ-শোকে বিনা চিকিৎসায় ভুগছেন। তিন ছেলেকে অনেক কষ্টে আদর-যত্নে বড় করেন মা ফাতেমা বেগম।
বড় ছেলে নজরুল ইসলাম বিগত অনেক বছর পূর্বে পরিবার পরিজন নিয়ে ফটিকছড়ির ভূজপুরের হেঁয়াকো বাজারে বসবাস করেন। মেঝ ছেলে মনির হোসেন(৪৫) মাটিরাঙায় বাবা মায়ের পাশেই ঘর বেঁধে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। ছোট ছেলে মো. জহিরই শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বয়ঃবৃদ্ধ বাবা-মা তার সাথে ভাঙা ঘরে বসবাস করে আসছেন।
ফাতেমা বেগমের বড়ই আশা ছিল অনেক আদর-যত্নে মানুষ করা তাঁর ছেলেদের আশ্রয়েই তার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করবেন। কিন্তু সেই আদরের বড় দুই ছেলের কাছে ঠাঁই হলো না গর্ভধারণী অভাগা মা-বাবার। মেঝ ছেলে মনির হোসেন বিয়ের পরেই মা-বাবাকে ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা হয়ে বসবাস করতে থাকেন। একদিকে আদরের ছেলের ভোরণ-পোষণ থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে স্বামীর ব্রেইন স্ট্রোক জনিত অসুস্থতার চিকিৎসা করতে না পেরে বড়ই অসহায় হয়ে পড়লেন। কি করবেন কোন দিশা পাচ্ছিলেন না। তারপরও ছোট ছেলে মনিরকে নিয়ে ঘুরে দাড়াঁবার নিরন্তর চেষ্টা ফাতেমার। শুরু করলেন ছোট ছেলেকে নিয়ে নিজেদের বসতবাড়ি সংলগ্ন কাঁঠাল বাগান সৃজনের মাধ্যমে কাঁঠাল বিক্রি করে সংসার চালানোর কাজ। সময় পেলে ছোট ছেলে জহির দিনমজুরের কাজ করে মা-বাবা ও স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সংসারের ঘানি টানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এভাবেই চলতে থাকে বৃদ্ধ স্বামী, ছেলে মনির, পুত্রবধূ ও নাতীকে নিয়ে ফাতেমার সংসার।
ধীরে ধীরে মনির হোসেন স্বামী-স্ত্রী মিলে ফন্দি আঁটে কিভাবে মা-বাবা ও ছোট ভাইকে তাড়িয়ে তাদের বসবাসরত বসতঘরটিসহ বাড়ির জায়গা দখল করা যায়।
পারিবারিক প্রয়োজনে একসময় পিতা তার ভোগদখলীয় (০.৬০)একর খাস খতিয়ানের জায়গা হতে ৪গন্ডা(০.০৮) একর জায়গা তার মেঝ ছেলে মনির হোসেন এর নিকট ২লাখ টাকায় বিক্রি করেন। কিন্তু মনির হোসেন কৌশলে সাদা কাগজে পিতা মকবুল আহমেদের সই-স্বাক্ষর নিয়ে ১কানি (০.০৮) একর জায়গা লিখে নেয়।
এভাবে স্বামী-স্ত্রী মিলে শুরু করলেন নানা ষড়যন্ত্র ও অবিচার। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে একা পেয়ে প্রায়শই নানা অযুহাতে চলতে থাকে নির্যাতন।
ছোট ছেলে জহির কাজ শেষে ফিরে এসে প্রতিবাদ করা মাত্রই আবার শুরু হয় মা-বাবা ছোট ভাই ও তার স্ত্রীর ওপর ঝগড়া-বিবাদ ও নির্যাতন। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেক নালিশ-সালিশ দরবার হলে কিছুদিন শান্ত থাকে। পরে আবার শুরু হয় এসব নির্যাতন। লক্ষ্য একটাই যেভাবেই হউক মা-বাবা, ছোট ভাইকে উচ্ছেদ করে বসতবাড়ি দখল চাই।
সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ মে) সকাল ৯টার দিকে মা ফাতেমা বেগম পাইকারের নিকট
তাদের কাঁঠাল বাগানের কাঁঠাল বিক্রি করতে গেলে আদরের মেঝ ছেলে মনির বাঁধা দেয়। এদিকে মনির তার লিচু গাছের লিচু বিক্রি করতে গেলে মা বাঁধা দিয়ে বলেন, আমাদের বাগানের কাঁঠাল বিক্রি করতে না দিলে কারো বাগানের ফল বিক্রি করতে দিবনা।
এসময় লিচু বিক্রি করতে নিষেধ করা মাত্রই সত্তোর্ধ মা ফাতেমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয় ছেলে মনির। এতে তার স্ত্রী ও নাতীরা বাঁধা না দিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে ও ইন্ধন যোগায়। এমন সময় মায়ের আত্নচিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসেন।
অনেকক্ষণ পরে খবর পেয়ে কাজ থেকে ছোট ছেলে মনির ফিরে এসে ও পাড়ার স্থানীয় কয়েকজন লোক এসে মাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে ফাতেমা বেগমের ডান হাতের এক্সরে করালে হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
এদিন বিকেলে কেঁদে কেঁদে আক্ষেপ করে ছেলের এমন নির্মম নিযার্তনের চিত্র তুলে ধরে ৭০বছর বয়সী বৃদ্ধ হতভাগী মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমার ছেলে মনির আমাদেরকে কোন ভোরণ-পোষণ করে না। তদুপরি আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে রেখেছে। এই বয়সে এসে আমরা ছেলের দেয়া মামলার ঘানি টানছি। এধরণের ছেলে কেউ যেন পেটে না ধরে। ইতিপূর্বেও আমাদের বাগানের কাঁঠালসহ ফলফলাদি বিক্রি করতে বাঁধা দিলে লিগ্যাল এইড খাগড়াছড়ি বরাবর অভিযোগ দাখিল করি। পরে লিগ্যাল এইড কার্যালয় হতে মনিরকে প্রতি মাসে আমাদেরকে ৩হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ৭/৮মাস অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি কোনো টাকা না দিয়ে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। ইতিপূর্বে আমার ছেলে মনির আমাকে ও তার বাবাকে একাধীকবার মারধর করতে উদ্যত হলে গত ৯/৫/২০২২ইং সুবিচার চেয়ে মাটিরাঙা সদর জোন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আজ আবারও আমাকে মারধর করে হাত ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে কুলাঙ্গার ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আহত ফাতেমার প্রতিবেশী রাহি ও মমতাজ বেগম বলেন, বসতঘর ও বাড়ির জায়গা দখলে নেয়ার লোভে গর্ভধারণী মাকে এভাবে মারধর করে উচ্ছেদ করার হীন মানসিকতা কোনভাবেই কাম্য নয়। দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কুলাঙ্গার ছেলে মনির ও তার স্ত্রী। আমরা এলাকাবাসী এ ঘটনার সুষ্টু বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় ৯নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুর রহমান বলেন,
আমরা জানি মনির হোসেন তার পিতার নিকট থেকে ৪গন্ডা জায়গা কিনেছে। ৬০হাজার টাকা এখনো বকেয়া রেখেছে। এ বকেয়া টাকা পরিশোধ করলে নিজেদের মধ্যে সমস্যার অবসান ঘটতো। তাছাড়াও বাবা-মায়ের বাগানের কাঁঠাল ও ফলফলাদি বিক্রিতে ছেলে মনির হোসেন বাঁধা প্রদান করে বলে শুনেছি। যা ছেলে হিসেবে মোটেই কাম্য নয়। ছেলের লাগানো গাছের ফলও যদি মা-বাবা ভোগ করে তাও ছেলে নিষেধ করতে পারেনা। এটা অত্যন্ত অন্যায় ও গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)