বুধবার ● ১৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ঢাকা » সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি বংলাদেশ নিশ্চিত করা জরুরি : আর্টিকেল নাইনটিন
সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি বংলাদেশ নিশ্চিত করা জরুরি : আর্টিকেল নাইনটিন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন, যৌন বৈচিত্র্যপূর্ণ মানুষসহ সকল মানুষের মানবাধিকারের পূর্ণতা এবং সমতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রচলিত নারী-পুরুষ ধারণার বাইরে যৌন বৈচিত্র্যপূর্ণ মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবসের প্রাক্কালে আর্টিকেল নাইনটিন এই আহ্বান জানায়।
প্রতি বছর ১৭ মে দিবসটি পালন করা হয়। ২০২২ সালের দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে “আমাদের দেহ, আমাদের জীবন, আমাদের অধিকার”।এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কোন পরিস্থিতিতে মানুষের যৌন বৈচিত্র্যতা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান সম্মান এবং মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।”
আজ সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন-এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেনঃ “ যৌন বৈচিত্র্যতা, লিঙ্গ পরিচয় বা লিঙ্গ বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষের উপর আক্রমণ, অবিচার, সহিংসতা,বৈষম্য, নাগরিক হিসাবে তাদের সুরক্ষা ও অধিকারের অভাব এবং তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক মন্তব্য মৌলিক মানবাধিকার এর মারাত্মক লঙ্ঘন। যৌন ও লৈঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিক এর সম্মানজনক নিরাপদ জীবনযাপনের ও সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে। বিশ্বজুড়ে মানুষ তাদের প্রকৃত বা অনুভূত যৌন অভিমুখীতা, লিঙ্গ পরিচয় বা লিঙ্গ বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রতিদিন সহিংসতা, এবং বৈষম্যের সম্মুখীন হয়।সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও যৌন বৈচিত্রমুখী মানুষ যে আছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বাংলাদেশে আমাদের প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতই যৌন বৈচিত্রমুখী মানুষ সাংস্কৃতিক পক্ষপাতের কারণে ও আইনী সুরক্ষার অভাবে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে আসছেন এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যৌন অভিমুখিতা বা লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার নিশ্চিত করতে দেশের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের অণুচ্ছেদ ২৮(১) এ বলা হয়েছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।“ জাতিসংঘের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র অনুসারে মানব পরিবারের সকল সদস্যের সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারসমূহ এবং সহজাত মর্যাদার স্বীকৃতিই হচ্ছে বিশ্বে শান্তি, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তি। যৌন ও লিঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিক এর সম্মানজনক জীবনযাপনের ও সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সকলের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
এই দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী যৌন বৈচিত্রমুখী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্যমান সহিংসতা, বৈষম্য এবং দমনের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই দিবস গণমাধ্যম, নীতিনির্ধারক, অধিকারকর্মী এবং বৃহত্তর সুশীল সমাজের মধ্যে এই বিষয়ে সংলাপ করার এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়।
বিশ্বব্যাপী বৈষম্যমূলক আইন, নীতি এবং অনুশীলনের কারণে যৌন বৈচিত্রমুখী ব্যক্তিরা এখনও তাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।বাংলাদেশ প্রায়শঃই তাদের পরিচয় গোপন করে জীবন যাপন করতে হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, এখনো ৭০ টি দেশে যৌন বৈচিত্রমুখীতা অপরাধ হওয়ায় তারা তাদের নিজস্ব পরিচয়কে ধারণ করার ও নিজের ভালবাসাকে প্রকাশ করার ভয় নিয়ে জীবনযাপন করে।
আর্টিকেল নাইনটিন, সকল মানুষের মানবিক মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং একটি ন্যায্য ও সকলের প্রতি সহনশীল সমাজ নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
আর্টিকেল নাইনটিন যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, যেটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। এটি ১৯৮৭ সালে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সংস্থাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তা নিশ্চিত করণের ক্ষেত্রে কাজ করে। সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ করে আসছে।