সোমবার ● ২৩ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে সরকারি টাকা নিয়ে উধাও
মহালছড়িতে সরকারি টাকা নিয়ে উধাও
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ৪লক্ষ ১৩হাজার ৬শত ১৬টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে নিরাপত্তা প্রহরী মো: ফারুক মিয়া(৪৩)।
ইতিপূর্বে (১৯ মে) বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসন কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর দাবী।
গত সোমবার(১৬ মে’২২)সকালে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের বিল ও মার্চ থেকে মে মাসের কম্পিউটার খাতের ৪লক্ষ ১৩হাজার ৬শত ১৬টাকার বিল নিয়ে পালাতক রয়েছে বলে মহলছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পলাতক ফারুক মিয়া গত ১৮নভেম্বর ২০১৫ইং হতে
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। নিরাপত্তা প্রহরী সরকারি টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বেড়েছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযুক্ত ফারুক হোসেন মহলছড়ি এলাকায় পরিবার নিয়ে স্থানীয় ইকবাল হোসেন এর বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০১৭ইং সালে প্রতিবেশি আব্দুর রশিদের বড় মেয়ের স্বর্ণ, ও নগদ ৩০হাজার টাকা চুরি করে ধরা পরলে পরবর্তীতে অন্য বাসায় গিয়ে ভাড়ায় থাকতেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে জুয়া খেলা ও মাদক সেবনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়দা আক্তার একজন নিরাপত্তা প্রহরীকে কেন এতগুলো সরকারি টাকা উত্তোলনের জন্য দেয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জোরদাবি জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
অভিযুক্ত ফারুক মিয়ার শশুর আমিনুল হক জানান, গত ১৬মে’২২ থেকে আমার মেয়ের জামাতা ফারুকের কোনো প্রকার সন্ধান পাইনি। তাকে উদ্ধারের বিষয়ে প্রশাসনেরও কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে, মহালছড়ি শাখা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার টনক চাকমা জানান, নিরাপত্তা প্রহরী ফারুক মিয়া ১৬মে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে ৪লক্ষ ১৩হাজার ৬শত ১৬টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। যাতে তার স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর বিলের সাথে সংযুক্ত রয়েছে এবং সে টাকা উত্তোলনের যথেষ্ট প্রমানাদী আমার ব্যাংকে সংরক্ষিত আছে।
টাকা নিয়ে উধাও হওয়া ফারুক মিয়ার বর্তমান ভাড়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির গেইট তালাবদ্ধ। ঘটনার পর দিনই ফারুকের স্ত্রী আয়েশা আক্তার(৩৩) দীঘিনালা তার বাবার বাড়িতে চলে যান বলে তার পিতা আমিনুল হক জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়দা আক্তারের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার(১৯ মে) দেখা করার উদ্দেশ্যে গিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক ভিজিটিং কার্ড জমা দিলেও তিনি সাক্ষাৎ এর জন্য কল দিবেন বলে অফিসের বাইরে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখলেও অদ্যাবধি তার কল পাওয়া যায় নি। তাছাড়া অন্যান্য
সাংবাদিকরা সাক্ষাৎ করতে চাইলে
তিনি উপজেলার বাহিরে আছেন বলে টেলিফোনে জানিয়ে দেন। অথচ ইতিপূর্বে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি ২২মে সাক্ষাত করার জন্য অফিসে যেতে বলেন। কিন্তু অফিসে গিয়ে তাকে না পাওয়ায় জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকেরা এক প্রকার হয়রানীর স্বীকার হন।
মাটিরাঙায় জাল টাকাসহ আটক-২
খাগড়াছড়ি :: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় ৩৩হাজার টাকার জাল নোটসহ দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (২২ মে) তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার(২১ মে) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাটিরাঙা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মাটিরাঙা বাজারে জাহাঙ্গীর আলমের মোটর সাইকেল গ্যারেজ থেকে তাদেরকে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন, মাটিরাঙা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজীপাড়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রুবেল(২৫) ও বেলছড়ি ইউনিয়নের খেদাছড়া গ্রামের মৃত আবুল হাশেমের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন(২৫)।
এসময় তাদের দেহ তল্লাশী করে এক হাজার টাকা মূল্যমানের ৩৩টি জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ আলী বলেন, জাল নোট নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগে ৩৩হাজার টাকার জালনোটসহ আটক দুই যুবকের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রামগড়ে ছাত্রী যৌন নিপীড়ন মামলা মিথ্যা বলে সংবাদ সম্মেলন
খাগড়াছড়ি :: খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন এর বিরুদ্ধে মামলা করায় এই অভিযোগ মিথ্যা এবং সাজানো নাটক দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার।
তাঁরা দাবী করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তার সহযোগী রুপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে এ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক নাটক মঞ্চায়ীত করেছে।
রবিবার(২২ মে) রামগড় লেকভিউ রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম ও পিতা নুরুল হুদা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তার দুই কন্যা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আয়েশা বেগম জানান, থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর সাথে তার স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। ২০১৯সালে ইন্দ্রানী দেবী ভৃগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালীন বেলায়েত হোসেনের ভাগিনা মোহাম্মদ তারেককে হাত বেঁধে বেদম প্রহার করে। তখন বেলায়েত হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমুলক ভাবে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় ইন্দ্রানী দেবী সর্বদা বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করতো।
ঘটনার কিছুদিন পর ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় প্রধান শিক্ষক ও স্বামী বেলায়েত হোসেনের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়গুলো তার স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অনেককেই অবহিত করেন এবং সমস্যায় পড়তে পারেন বলে বিভিন্ন জায়গায় আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, রুপম ত্রিপুরা নামের স্থানীয় এক বখাটে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর প্রভাব খাঁটিয়ে সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২জন নিয়ে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করতো এবং তাদের মোবাইল চার্জ দিতো। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রুপম ত্রিপুরার মাঝে তুমুল বাগবিতণ্ডা হয়। রুপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দেন । তার কিছুদিন পর রুপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানায়। এতে রুপম ত্রিপুরা তার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেন এর পিতা নুরুল হুদা দাবী করেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক উপজাতি মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং রুপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবী করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা ফুলবানু ত্রিপুরা অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি পরিস্থিতির স্বীকার। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা না করলে রুপম ত্রিপুরা তাদের পরিবারকে সমাজচ্যুত করবেন বলে জানান। ভয়ে তিনি মামলা করেছেন।
থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমীন জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাকে জানায় নি। ঘটনাটি মিথ্যা ও সাজানো নাটক বলে মনে হচ্ছে।