শনিবার ● ২৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মিরসরাইয়ে র্যাবের উপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার-১৩
মিরসরাইয়ে র্যাবের উপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার-১৩
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ে র্যাব সদস্য ও সোর্সের উপর হামলার ঘটনায় এপর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ছিনতাই হওয়া অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর এলাকায় অভিযানে গেলে মাদক কারবারিরা ডাকাত আখ্যা দিয়ে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলা করে। এসময় র্যাবের দুই সদস্য ও সোর্স আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় র্যাবের দুই জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। র্যাব সদস্য ও সোর্সের উপর হামলার ঘটনা এবং ঐসময় অস্ত্র ছিনতাইয়ের ক্লু উদঘাটনে ছায়া তদন্তে নামে র্যাব সদস্যরা। অভিযানে ১৩ জনকে গ্রেফতার, হামলার সময় ছিনতাই হওয়া অস্ত্র এবং মাদক কারবারিদের কাছ থেকে বেশকিছু মাদক উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে র্যাব-৭ এর অধিনায়কের পক্ষে সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো: নূরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বুধবারে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে আমাদের টিম জোরারগঞ্জ থানাধীন ধুমঘাট এলাকায় অবস্থান নেয়। মাদক ব্যবসায়ীরা সেটি টের পেয়ে আরো কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে বারইয়ারহাট ফুটওভার ব্রিজের নিচে শান্তির হাট রোডের মাথায় দুটি কাভার্ডভ্যান দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে ডাকাতির গুজব ছড়িয়ে আমাদের টিমের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের দুই সদস্যসহ তিনজন আহত হন।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, ঘটনার পর আমরা আশপাশের সিসি ক্যামরার ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করেছি। আটককৃতদের মধ্যে সাইদুর রহমান সাইদ আমাদের আহত সদস্য থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছিল। সেটি সাইদের তথ্যমতে এসএম শাফায়েত হোসেনের কাছ থেকে উদ্ধার করেছি। ঘটনায় সম্পৃক্তদের আটকে আমাদের টিম কাজ করছে।
আটক অপর ১১ জন হলো- আনোয়ার হোসেন (৪৫), মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিঠু (৩৬), শহিদুল ইসলাম আকাশ (২৫), সোয়েব উদ্দিন আবির (২৯), সাইদুল ইসলাম সুমন (৩০), নাহিদ উদ্দিন (৩৩), আবু সাঈদ (২৮), নাসির উদ্দিন (৩৮), মাঈন উদ্দিন (৩২), ইমাম হোসেন (৩৩), ফাহাদ প্রকাশ ফরহাদ (২৬)। আটককৃতরা সবাই মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানায় র্যাব।
এদের আটক করার সময় ফরহাদের কাছ থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা, ৫২ বোতল ফেনসিডিল ও এক কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় র্যাব। তারা ফেনী জেলার সামান্তবর্তী ছাগলনাইয়া, মিরসরাই এলাকায় মদ, গাঁজা, ফেনসিডিলের ব্যবসা করে বলে দাবি র্যাবের। এছাড়াও হামলার সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কাভার্ড ভ্যান আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের জোরারগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এবিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মিরসরাইয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা
মিরসরাই :: মিরসরাইয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে মো. হারুন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মধ্যম জামালপুর এলাকার নুর আহাম্মদ ভূইয়া বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
দা’য়ের কোপে আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতাল ও পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর বারোটা দিকে সে মারা যায়।
নিহত হারুন খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় থানাধীন মাষ্টারপাড়া এলাকার মৃত জসিমের পুত্র এবং দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। স্ব পরিবারে জামালপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো এবং সিএনজি অটোরিকশা দেখবাল করতো।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি হারুন গাড়ি নিয়ে আসলে তার দুই ড্রাইভার সোহেল ও শরিফ গাড়ি পরিষ্কার করছিল। এইসময় আমি এবং হারুন পাশে বসে কথা বলতেছিলাম। এমন সময় হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড মধ্যম জামালপুরের অলি আহম্মদের পুত্র সালাউদ্দিন (৩৮) হারুনের পিছন দিক থেকে এসে আচমকা মাথার বাম পাশে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই, তারপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মস্তান নগর ভর্তি করার পর সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
পূর্বের কোন বিষয়ে মনোমালিন্য, আক্রোশ বা শত্রুতার জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে বুঝা যাচ্ছে।
এবিষয়ে হারুনের গাড়ির ড্রাইভার মো. সোহেল বলেন, আমি এবং শরিফুল দুইজনে মিলে গাড়ি পরিষ্কার করতেছিলাম। এসময় সালাউদ্দিন আমার মালিক হারুনকে বলে যে, তুই কি বলতে চাস, এই কথা বলে তার হাতে থাকা দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। তবে কি বিষয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না তবে হয়তো এর পূর্বে কোন বিষয়ে মনোমালিন্য বা শত্রুতা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জোরাগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এনামুল হক বলেন, হারুনের মৃত্যুর ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, শুনেছি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে হারুনের মৃত্যু হয়েছে। হারুনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সালাউদ্দিন বৃহস্পতিবার (ঘটনার দিন) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চিনকী আস্তানা এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে চলার সময় জোরারগঞ্জ থানার টহল পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়। এবিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।