শনিবার ● ২৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে চলছে পাহাড় কাটা : নীরব স্থানীয় প্রশাসন
মহালছড়িতে চলছে পাহাড় কাটা : নীরব স্থানীয় প্রশাসন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়ির কেয়াংঘাট রাঙাপানি ছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে সাবাড় করলেও যেন দেখার কেউ নেই। ফলে মারাত্মক জীবন ঝুঁকিতে বসবাস করছে পাহাড়ের পাদদেশে স্থানীয় বাসিন্দারা।
দিনে পর দিন সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পাহাড় কাটলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা না নেয়ায় এখনো বন্ধ হয়নি অবৈধ পাহাড় কাটা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর ভারি বর্ষণে পাহাড় ধ্বসের অন্যতম কারণ অবাধে পাহাড় কাটা। পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের কোনো ছাড়পত্র ছাড়াই দিনে-দুপুরে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে এই উপজেলায়।
তারপরও অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। ফলে আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠছে পাহাড় খেকোরা। তারা প্রতিনিয়তই পাহাড়ের মাটি বিক্রি ও অবৈধ বালু বিক্রয় করে বনে যাচ্ছে কোটি টাকার মালিক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌংরাছড়ি, রাঙাপানি ছড়াতে একাধিক স্থানে নানা অজুহাতে পাহাড় কাটছে একটি চক্র। পাহাড় কেটে তা ট্টাকে করে নিয়ে যাচ্ছে অন্যত্র। তবে পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসন কার্যকারী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহালছড়ির কেয়াংঘাট ইউনিয়নের রাঙাপানি ছড়ায় প্রশাসনিক ভাবে পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পাড়ায় বাড়ি-ঘর নির্মাণের পাশাপাশি ইটভাটা ও খাগড়াছড়ির প্রভাবশালী এক ঠিকাদারের রাস্তা নির্মাণ কাজে বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যাবহারের জন্যে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়।
অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। অবিলম্বে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা না গেলে ভয়াবহ পরিবেশ ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে।
আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১০বছরের কারাদণ্ড ও ১০লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
বাড়িঘর নির্মাণের কথা বলে ৬০থেকে ১০০ফুট উঁচু টিলা কেটে মাটির শ্রেণি পরিবর্তন করে সমতল করা হচ্ছে রাঙাপানিছড়ার মেইন সড়কের পাশে বসতবাড়ি সংলগ্ন ওই এলাকায়।
পাহাড় কাটা মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নদী, পুকুর ও নিচু জমি। প্রতিদিন অসংখ্য ট্টাক ও ট্রাক্টর বোঝাই করে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।
পাহাড় কাটা ও অবৈধ বালু উত্তোলনের সন্ধান পাওয়া যায় চৌংরাছড়িসহ ওই এলাকায়।
পাহাড় কাটার বিষয়ে পাহাড় কর্তনকারী মে. বাদশা মিয়া বলেন, বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটা হচ্ছে। তবে শুধু আমি একা নই, এখানে মো. মাজম আলী, হামিদের নাতি ছাইফুলসহ আরো অনেকেই পাহাড় কাটছে। আমরা কেউ পাহাড় কাটতে প্রশাসনের কারো কাছ থেকে কোন অনুমতি নেইনি, এটা আমাদের ভূলই হয়েছে।
এভাবেই প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় দুষ্টচক্ররা পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলেছে।
এবিষয়ে জানতে মহালছড়ির ক্যায়াংঘাট ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আলমগীরের সাথে সকালে ও বিকেলে একাধীকবার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোবাইদা আক্তারের সাথে পাহাড় কাটার বিষয় নিয়ে শুক্রবার(২৭ মে) বিকেল ৪টা ৩৩মিনিটে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনিও কল রিসিভ করেননি।
গুইমারা ইউপি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ
খাগড়াছড়ি :: আসন্ন ১৫ই জুন খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার(২৭ মে) সকালে গুইমারা উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সিনিয়র নির্বাচন কমিশনার ও রির্টানিং অফিসার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন।
গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মেমং মারমা (নৌকা) প্রতীক, ভাইস চেয়ারম্যান ইখতেয়ার উদ্দিন চৌধুরী পলাশ (টিয়া পাখি), ভাইস চেয়ারম্যান(মহিলা) ঝর্ণা ত্রিপুরা(ফুটবল), ভাইস চেয়ারম্যান(মহিলা) ফাতেমা বেগম(কলস), ভাইস চেয়ারম্যান কংজুরী মারমা(মাইক), ভাইস চেয়ারম্যান মানেন্দ্র ত্রিপুরা (টিউবওয়েল), ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফখরুল ইসলাম লিটন (তালা), প্রতীকে ভোট যুদ্ধে লড়বেন।
এছাড়া স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা পেয়েছেন (আনারস) প্রতীক ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সুজাইয়ু মারমা(দোয়াত কলম) প্রতীক পেয়ে ৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৪জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও ২জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন।
এর আগে শনিবার(২৬ মে) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে চাইথোয়াই চৌধুরী নামের ১(চেয়ারম্যান) পদপ্রার্থী ও হ্লামাপ্রু মারমা নামের ১মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।