সোমবার ● ৬ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » সার্ভেয়ার ধীমান চাকমার মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট
সার্ভেয়ার ধীমান চাকমার মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ধীমান চাকমা ভূমির তদন্তে মনগড়া প্রতিবেদন দিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
তার অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকার চেয়েছেন ভুক্তভোগী কামরুল।
রবিবার(০৫ জুন) সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও হয়রানী করাই এ প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য।
জানা যায়, মহালছড়ি উপজেলার টিএন্ডটি পাড়া, ২৫২নং থলিপাড়া মৌজার মো: আজিজুর রহমানের ছেলে ভুক্তভোগী মো. কামরুল ইসলাম ইতিপূর্বে থানায় ও পরে খাগড়াছড়ি এডিএম কোর্টে দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে
জানা যায়, ভুক্তভোগী কামরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. মোর্শেদা বেগম(২৫) কর্তৃক থানায় দেওয়া অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৬/১২/২০২১ পিতা মো.খলিলুর রহমান ২৪মাইল মহালছড়ি সরকারি কলেজের সামনে থলিপাড়া মৌজায় ২১৭(ক)নং হোল্ডিং এর ০.৮০(আশি শতক) একসনা বন্দোবস্তীর আবেদিত ১ম শ্রেণির ভূমি না-দাবীনামা ও দখল হস্তান্তর মূলে প্রাপ্ত হয়ে নগদ টাকার প্রয়োজনে ০.০৩-১/২(সাড়ে তিন শতক) জমি মোট ৩লক্ষ টাকা মূল্যে নগদ ২লক্ষ টাকা বুঝিয়া পাইয়া কামরুল ইসলামের নিকট আঞ্চলিক দলিল মূলে বিক্রি করেন। ২৫/০১/২০২২ইং আরো ৪৫হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী সমূদয় টাকা মে’২২ইং তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। তখন থেকে আমরা ওই জায়গায় ঘর করার জন্য ইট, বালি, সিমেন্ট ক্রয় করে স্তুপাকার করে রাখি। কিন্তু ১৭/০২/২০২২ইং ভাগিনা মো. খায়রুর বাদশা মোবাইলে জানায়, আমার পিতা খলিলুর রহমান ওই জায়গা পারভিন ও রোজিনা আক্তারের নিকট পূণরায় অধিক মূল্যে বিক্রি করেন।
পরে নিরুপায় হয়ে এ ব্যাপারে ১৭/৪/২০২২ইং খাগড়াছড়ি এডিএম কোর্টে ১৪৫ধারায় মামলা নং- ৬২/২০২২দায়ের করা হয়।
এরপরই বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। আদালতের মামলা ও নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই ভূমিদস্যুদের খপ্পরে পড়ে কামরুল ইসলামের জমি পারভিন ও রোজিনা আক্তারের নিকট বিক্রি ও নালিশী জায়গার উপর ক্রয়সূত্রে জমির মালিক পারভিন আক্তার ও রোজিনা আক্তার উল্লেখ করে গত গত মঙ্গলবার(১৭ মে) জোরপূর্বক রাতারাতি সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি), মহালছড়িকে নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি মহালছড়ি থানার ওসিকে বিরোধীয় জায়গায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী কামরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর সহকারি কমিশনার(ভূমি) বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তাঁর অফিসের সার্ভেয়ার ধীমান চাকমাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু সার্ভেয়ার আমার শ্বশুর খলিলুর রহমান গংয়ের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে একটি মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে আমার নামে ক্রয় করা জমিতে আমি ব্রিক ফিল্ড মালিক আব্দুস সালামের (S.H.S) এসএইচএস ব্রীকস, মুড়াপাড়া মহালছড়ির নিকট ৭৪৫নং চালানে ইট ও বালু ক্রয় করে আমার ক্রয়কৃত দখলীয় জায়গায় স্তুপ করে ভোগ-দখলে থাকলেও রোজিনা আক্তার ও পারভিন আক্তার আমার ক্রয়কৃত ইট বালু তারা স্তুপ করে ভোগ দখলে আছে মর্মে অসত্য তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন সার্ভেয়ার ধীমান চাকমা।
ভূক্তভোগী কামরুল ইসলাম দাবী করেন, সার্ভেয়ার ধীমান চাকমা খলিলুর রহমান গংদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাকে জমির অবৈধ দখলদার বানিয়ে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে তিনি মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দাখিল করবেন বলেও জানান।
এব্যাপারে মহালছড়ি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ধীমান চাকমা মুঠোফোনে বলেন, রোজিনা আক্তার ও পারভিন আক্তার আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারীকৃত জায়গায় তাদের মালিকানা সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করায় আমি মনে করেছি তারাই ইট ও বালু স্তুপ করে রেখেছে। যদিও এব্যাপারে তারা কোন ডকুমেন্টস দেখাতে পারে নাই, এলাকার কতিপয় লোকজন আমাকে বলেছে বিধায় সে অনুযায়ী ইট-বালু স্তুপ করে ভোগ দখলে আছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। কামরুল ইসলাম এসএইচএস ব্রীকসের মালিক আবদুস সালামের নিকট চালানের মাধ্যমে (ইট-বালু) দেড় নং ২০০০ইট ও বালু ক্রয়ের বিষয়েও তিনি অবগত নয়, শুধু তাদের নামের সাইনবোর্ড দেখেই অনুমানের ভিত্তিতে অনুরূপ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা স্বীকার করছেন তিনি।