বৃহস্পতিবার ● ৯ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের
ঝালকাঠিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি :: নারীর শ্লিলতাহানীর অভিযোগে থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতের দারস্ত হলেন ভুক্তভোগি জেসমিন বেগম। ঝালকাঠিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী নারীকে মারধর ও শ্লিলতাহানীর অভিযোগে নলছিটি থানায় মামলা না নিলে আদালতের দারস্ত হয়েছেন ভূক্তভোগি গৃহবধু জেসমিন বেগম।
বর্তমানে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি আছেন।
ঝালকাঠি নলছিটি মগর ইউনিয়নের খাওক্ষীর গ্রামে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল বড় ভাই ও ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে। বড় ভাই ইউনিয়ন পরিষদে দুই ভাইয়ের নামে জমি-জমা বিরোধের নিস্পত্তির দরখাস্ত দেয়। এরপর গত ৬ জুন সকালে ভাইয়ের স্ত্রী ও বোন পরিষদে তাদের সালিসদারের নাম দেওয়া নিয়ে ইউপি সদস্যে শেলিম হাওলাদারের সাতে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নারীকে মারধর করে বোরকা ছিঁড়ে ফেলে ও তাদের ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দেওয়ার অভিযোগে নলছিটি থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করলেও দুই দিন অতিবাহিত হওয়ারপরে মামলা নেয়নি ভুক্তভোগি নারী জেসমিন বেগমের। (৮ জুন বুধবার) ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেসমিনের স্বামী আব্দুল হক বাদী হয়ে ৪/৫ জনকে বিবাদী করে একটি এমপি মামলা স্বারক নং ১৬০/২২(নলছিটি) দায়ের করেন। বিজ্ঞ মহামান্য আদালত নলছিটি থানার ওসি কে এঘটনার তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগি আহত জেসমিন বেগম বলেন, আমার স্বামীর সাথে বড় ভাই আব্দুস সালাম শিকদার পিতা.মৃত্যু ইসমাইল সিকদার, মগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর, পৈতৃক সম্পত্তির বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয় উল্লেখ করে একটি দরখাস্ত দেয়।
উক্ত অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান মো.এনামুল হক শাহিন বিবাদীদের নোটিস দিয়ে ও তাদের স্বপক্ষে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দাখিল করে উভয় পক্ষের সালিশকারীদের নাম দেওয়ার জন্য বলেন।
সোমবার (৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে আমি ও আমার ননদ শাহানুর বেগমকে সাথে নিয়ে মগর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাদের মনোনীত সালিসদার এর নাম দেওয়ার কথা ও সালিশ বৈঠক বসবে কোন স্থানে। এই কথা নিয়ে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো.সেলিম হাওলাদারের সাথে কথার কাটাকাটি হলে একপর্যায় আমাদেরকে পরিষদ থেকে ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দেওয়া হয়েছে।
তাতেও খ্যান্ত হয়নি উক্ত ইউপি সদস্য মো.শেলিম হাওলাদার,আমাদের কে বাহিরের আমিরাবাদ বাসস্ট্যান্ডে রাস্তায় গিয়ে গালাগালি ও চরথাপ্পর মারতে মারতে আমার সলিলের বুকের উপরে বোরকায় থাবা মেরে ছিরে ফেলে। এমনকি আমার তলপেটে লাথি মারে ও বুকের উপরে কিল ঘুসি মারায় আমি গুরুত্ব আহত হয়ে বুকের ব্যথার যন্ত্রনায় আমার অবস্থা খুবই গুরুত্ব হয়। এসময় ৯৯৯ এ কলদিয়ে পুলিশ খবর দিলে তারা আমাদেরকে উদ্ধার করে,নলছিটি স্বাস্থ্য কম্প্রেক্সে পাঠিয়ে দেয়। আমাকে প্রাথমিক চিটিকৎসা দিয়ে তাদের ভয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়েছি। আমি বর্তমানে ঝালকাঠি সদর হাসপাতারে ভর্তি আছি। আমার চিকিৎসার জন্য ও এলাকার গন্যমান্যদের সাথে আলাপ আলোচনা করে মামলা দায়ের করতে একটু বিলম্ব হয়েছে।
এ ব্যাপারে নলছিটি মগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো.শেলিম হাওলাদার এবিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমি পরিষদে উপস্থিত এ সময় চৌকিদার একটি কাগজ চেয়ারম্যানের সামনে দিলো যে,এদের ভাই ভাইয়ের বিষয়ে সালিশ মনোনয়ন দেওয়া হবে।
আমি বললাম আমাকেও ফোন করেছিল বাদী। তাই সালিশ বৈঠক হবে পরিষদে এসময় মহিলারা একটু উত্তেজিত হয়ে যায়। তখন আমি তাদের সাথে একটু ধমক দিয়ে কথা বলে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া আর কিছুই হয়নি। তিনি মারধরের বিষয় ও শ্লিলতা হানির ঘটনা অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে নলছিটি থানার এ এস আই মামুন বলেন, মগর ইউনিয়নের খাওক্ষীর গ্রামের জেসমিন বেগমকে ৯৯ তে কল পেয়ে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।
এব্যাপারে মগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিনের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার পরিষদে এই ঘটনা হয়েছে? এ ঘটনায় কি ব্যবস্থা নিয়েছেন তাহা জানা যায়নি।