রবিবার ● ২৭ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » ঝিনাইদহের শাহ আলমের সৌদি আরবে মরুভূমিতে সবজি চাষে ভাগ্য বদল
ঝিনাইদহের শাহ আলমের সৌদি আরবে মরুভূমিতে সবজি চাষে ভাগ্য বদল
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ::(২৬ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত১১.৫২মিঃ) ঝিনাইদহের নতুন কোর্টপাড়া এলাকার বেলায়েত আলী সরকারের বড় ছেলে শাহ আলম সরকার ৷ মরুভূমির বুকে সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন তিনি ৷ ১৯৮৯ সালে এসএসসি আর ১৯৯১ সালে এইচএসসি পাস করার পর চরমপন্থীদের অত্যাচারে দেশ ছাড়েন শাহ আলম ৷
পাড়ি জমান মরুভূমির দেশ সৌদি আরবে ৷ সামান্য বেতনে কাজ নেন একটি মাজরাতে (কৃষি খামার)৷ হাল ছাড়েননি শাহ আলম ৷ বেশ কয়েক বছর অল্প বেতনে কাজ করে কফিলের (স্পন্সর) কাছ থেকে সামান্য জমি ভাড়া নিয়ে নিজেই শুরু করেন চাষাবাদ ৷ এরপর আর ফিরে থাকাতে হয়নি শাহ আলম সরকারকে ৷
বর্তমানে শাহ আলমের ভাড়া নেওয়া জমির পরিমাণ ৭০ হেক্টর (প্রায় ১২০ বিঘা)৷ এই জমিতে চাষ হচ্ছে বেগুন, লাউ, সিম, মরিচ, ক্যাপসিকাম, সুদানী ফুল, কুচা সহ রকমারী সবজি৷ শাহ আলমের বর্তমান কৃষি খামারটি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ‘আল খারিজ’ নামে জায়গায় অবস্থিত ৷ সেখানে আরও বেশ কিছু কৃষি খামার রয়েছে যার অধিকাংশই পরিচালনা করছে বাংলাদেশিরা৷
এক সময় অন্যের অধীনে সামান্য বেতনে কাজ করা শাহ আলমের বর্তমান শ্রমিকের সংখ্যা ৪৫ এর বেশি ৷ এবং এর অধিকাংশই বাংলাদেশি ৷ শাহ আলম বলেন, ‘আমার এখানে কাজ করা শ্রমিকের অধিকাংশই বাংলাদেশি ৷ শুধু তাই নয়, ক্ষেত্র বিশেষ অন্য দেশের শ্রমিকের চাইতে বাংলাদেশিদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ ৷ বাংলাদেশিদের ভিসা চালু হলে বাংলাদেশ থেকে আরও কিছু শ্রমিক নেওয়ার কথাও জানান শাহ আলম ৷
তিনি আরও বলেন, এখানে কাজ করা অনেক বাংলাদেশিরই ইকামা ছিল না ৷ সৌদি বাদশার সাধারণ ক্ষমার সময় নিজের পকেটের টাকা দিয়ে সবাইকে বৈধ করেছি ৷ কারণ একটাই, বাংলাদেশিরা খুব সহজে সব কাজ আয়ত্বে আনতে পারে ৷ তারা কাজে ফাঁকি দেয় না ৷ যোগ করেন সফল এই সবজি চাষি ৷ স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে আল খারিজে বসবাস করা শাহ আলমের আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মুচকি হেসে তিনি বলেন, এমনিতে খরচ অনেক ৷ তার ওপর বেড়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ৷ সব খরচ বাদ দিলে বছরে কোটি টাকার মতো সেভ করতে পারি ৷
উত্পাদিত পণ্যের বিপণন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের গাড়িতে করে রিয়াদের সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজির বাজার আজিজিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে পাইকারি বিক্রি হয় তার খামারের সবজি ৷
বাংলাদেশ থেকে স্বল্প খরচে শ্রমিক নেওয়া গেলে এই খামারের ব্যবসাকে আরও কয়েকগুণে উন্নীত করা সম্ভব ৷ তাই এই ব্যাপারে কূটনৈতিক তত্পরতা বাড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শাহ আলম সরকার ৷