বুধবার ● ২২ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নবীগঞ্জের ৯টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত
অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নবীগঞ্জের ৯টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯ টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমতাবস্থায় উপজেলায় ১২ টি জরুরী আশ্রয় কেন্দ্র্রে উঠছেন পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দারা। আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতজনদের উচুঁ বাড়িতে বা বহুতল ভবনে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই। আর যারা কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছেন না, তারা ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। সরকারিভাবে যে সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা অপ্রতুল। তাই আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা ভুগছেন খাদ্যসংকটে। ত্রাণের জন্য অপক্ষোয় রয়েছেন পানিবন্দি মানুষ।
২১ জুন মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ইনাতগঞ্জ, দীঘলবাক ইউনিয়নে পানি কিছুটা কমলেও আউশকান্দি নবীগঞ্জ সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে পানি বেড়েছে।
জানা গেছে, অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডাইকের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ৯ টি ইউনিয়নের সবকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রায় লক্ষাধিক বাাসিন্দারা। বেশিরভাগ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরও পানিতে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। অব্যাহত পানিবৃদ্ধিতে উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উমরপুর,মোস্তফাপুর, দক্ষিণগ্রাম,দিঘীরপাড়,বাউর কাপন,দিঘলবাক ইউনিয়নের কসবা,চরগাঁও, মথুরাপুর,জামারগাঁও,ফাদুল্লাসহ সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। । ফলে পানি বন্দি মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ত্রাণের সংকট। বন্যার পানিতে টিউব ওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, বন্যার্তদের জন্য ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে গত ৫ দিনে ২ শত ৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বুলবুল আহমেদ বলেন, বন্যার পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫ দিন থেকে পরিবার নিয়ে দূর্ভোগে রয়েছি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে
আশ্রয়কেন্দ্রই যেতে হবে। ঘরে যা খাবার ছিলো তা শেষ। তিনি সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন।
গতকাল ২১ জুন মঙ্গলবার আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ইনাতগঞ্জ, দীঘলবাক ইউনিয়নে পানি কিছুটা কমলেও আউশকান্দি নবীগঞ্জ সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে পানি বেড়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বলেন, গত সোমবার ভোরে উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বাল্লা-জগন্নাথপুর এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবেশ করে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এক দিনে প্রায় এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাঁর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়ন এখন প্লাবিত। জেলা প্রশাসক খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ২০৫ পরিবারের ১০০০ মানুষের জন্য খাবার প্রদান করা হয়েছে। শুকনো খাবার প্যাকেজের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া সরকারিভাবে শিশু খাদ্যর জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও গো খাদ্যর জন্য ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।