শনিবার ● ২৫ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » হিল উইমেন্স ফেডারেশন পুনর্গঠিত : নীতি সভাপতি ও রিতা সম্পাদক
হিল উইমেন্স ফেডারেশন পুনর্গঠিত : নীতি সভাপতি ও রিতা সম্পাদক
গত ২০ জুন ২০২২ খাগড়াছড়িতে আহুত এক বিশেষ সম্মেলনে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। এতে নীতি চাকমাকে সভাপতি ও রিতা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।
সভায় সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি নিরূপা চাকমা হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দীর্ঘ সংগ্রামী ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে নিজের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন।
নিরূপা চাকমা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে হিল উইমেন্স ফেডারেশন একটি অন্যতম লড়াকু নারী সংগঠন। এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনে কাজ করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক নারীরা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ফিলিস্তিন সংহতি দিবসে সেনাবাহিনী মিছিলে হামলা করে পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে নারী নেত্রীদের জেলে দেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অগ্রসর নারী আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে রাষ্ট্রীয় বাহিনী সৃষ্ট মুখোশ বাহিনী কর্তৃক দুই নারী নেত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল। পাহাড় সমতলে প্রবল প্রতিবাদের মুখে সন্ত্রাসীরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। শত বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও হিল উইমেন্স ফেডারেশন জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। শাসকগোষ্ঠী যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন এই আন্দোলন কোনদিন ভুন্ডুল করে দিতে পারবে না।
নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে নিরূপা চাকমা বলেন, শাসকগোষ্ঠির জাতিগত নিপীড়নের পরিকল্পনাকে ভেস্তে দিতে নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও দ্বিগুন শক্তি নিয়ে আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি এলাকায় নারী সংগঠন ও নারী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।
তিনি নারী সমাজকে পূর্ণস্বায়ত্বশাসনের আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
দেশীয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির সকল দিক পর্যালোচনা করে সংগঠনের নিজস্ব বাস্তবতার আলোকে কমিটি পুনর্গঠন অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে বলে উপস্থিত প্রতিনিধিগণ সবাই একমত হলে নীতি চাকমাকে সভাপতি ও রিতা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় পুনর্গঠন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন রেশমি মারমা, রূপসি চাকমা, দয়া চাকমা, এ্ন্টি চাকমা, জেসি চাকমা, রিপনা চাকমা ও ইশা চাকমা। করতালির মাধ্যমে উপস্থিত অতিথি ও সংগঠনের কর্মীরা নতুন কমিটিকে স্বাগত জানান। পরবর্তী কাউন্সিল অধিবেশন আহুত না হওয়া পর্যন্ত এটি কেন্দ্রীয় কমিটি হিসেবে সংগঠনের কার্যক্রম সম্পাদন করবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমা।
সভার শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা পরিস্থিতির সময়ে সাংগঠনিক কাজে ধারাবাহিকতা লঙ্ঘিত হলেও হিল উইমেন্স ফেডারেশন অন্যদের মতো নিষ্ক্রিয় ছিল না। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতন ও জনগণের ওপর পরিচালিত দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সরব ছিল।