শনিবার ● ২ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » শুক্তাগড় ইউপি চেয়ারম্যান বিউটির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার ইউপি সদস্যদের অভিযোগ
শুক্তাগড় ইউপি চেয়ারম্যান বিউটির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার ইউপি সদস্যদের অভিযোগ
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউপি চেয়ারম্যান বিউটি শিকদারের দুর্নীতি-অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগে প্যানেল চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যসহ ৩ জন ইউপি সদস্যরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
চেয়ারম্যান বিউটি শিকদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যসহ ৩ জন ইউপি সদস্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, (২২ জুন ২০২২ইং) তারিখ বেলা ১২টায় শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানসহ ৪ ইউপি সদস্যর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে এবং ছয় দফা দাবি সম্মিলিত একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান বিউটি শিকদার, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, দুর্ব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতা সহ কয়েকজন অনুসারী ইউপি সদস্যদের দিয়ে তার ইচ্ছে মত,বিরোধী দলিয় নেতা ও বিশিষ্ট ঠিকাদারের কথামত স্বজনপ্রীতি করে আসছে।
চেয়ারম্যান পরিষদে হঠাৎ করে সদস্যদের না জানিয়ে মাসিক মিটিং ডেকে মন গড়া কার্যক্রম ও এজেন্ডা তৈরি করেন। পরিষদে কখন কি পরিমাণ সরকারি বরাদ্দ আসে তা সদস্যদের জানানো হয় না।
পরিষদের জনগনের ভোটে নির্বাচিত সদস্যরা চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরোধিতা করলে তাদেরকে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করা হয় বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।
২০২১সালে শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করার পর থেকে অদ্যাবধি হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ কত টাকা আয় হয়েছে? উক্ত টাকা কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তা চেয়ারম্যান ও সচিবকে জিজ্ঞাসা করা হলে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এসকল তথ্য ইউপি সদস্যদের জানানো যাবে না বলে হুমকি প্রদান করেন।
২০২১-২০২২ অর্থবছরের ট্যাক্সের দেড় লক্ষাধিক টাকা আদায় করে। যে,টাকা দিয়ে সদস্যদের সম্মানী ভাতা দেওয়ার কথা তাহা আজ পর্যন্ত না দিয়ে সকল টাকা তিনি নিজে আত্মসাৎ করেছেন।
উক্ত ভাতা দেওয়ার সরকারের নির্দেশনা থাকলেও সম্মানী ভাতা চাইলে তিনি ইউপি সদস্যদের লাঞ্চিতসহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন বলেও লিখিত অভিযোগে তারা এসকল কথা উল্লেখ করেন। পরিষদে মাসিক মিটিং এর রেজুলেশন খাতায় কোনো এজেন্ডা না লিখে পূর্ববর্তী মিটিংয়ের রেজুলেশন করে এবং উক্ত লিখিত রেজুলেশন খাতায় উপস্থিত সদস্যদের অগ্রিম স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন। এরপর সচিবের সহযোগিতায় চেযারম্যান বিউটি শিকদারের নির্দেশে ইচ্ছেমত রেজুলেশন তৈরি করেন।
এ সকল বেআইনি কর্মকান্ডের জন্য কোন ইউপি সদস্য প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান বিউটি সিকদার বলেন, তোদের মত মেম্বার আমার পরিষদে লাগবেনা পরিষদ থেকে বেরিয়ে যা? আমি বিউটি শিকদার! শহিদুল্লাহ ফরাজির মেয়ে আমার চেয়ারম্যানি করতে বা পরিষদ চালাইতে কোন মেম্বার লাগে না।
উক্ত ইউপি সদস্যরা ৬দফা দাবিতে উল্লেখ করেন, (১)আমরা জনগনের ভোটে নির্বাচিত আমাদের সম্মান ও জনতার সম্মান এক সুতায় গাঁথা। আমরা সম্মানের সাথে পরিষদ পরিচালনা করতে চাই বরাদ্দকৃত প্রকল্পের কাজ সকল সদস্যের মধ্যে সমান হারে বন্টন করতে হইবে।
(২)রাজস্ব খাতের এক পার্সেন্টের টাকার আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
(৩)করোনা আক্রান্তের সময়ে বরাদ্দকৃত টাকার ব্যয়ের খাত এর স্বচ্ছতার সাথে প্রকাশ করতে হবে।
(৪)২০২১ ও ২০২২ অর্থবছরে ট্যক্স আদায়ের টাকা হইতে অনতিবিলম্বে আমাদের এক বছরের সম্মানী ভাতার টাকা পরিশোধ করতে হইবে।
(৫)মাসিক মিটিং এর রেজুলেশন খাতায় এজেন্ডা লিখে আলোচনার পর রেজুলেশনে পূর্ণাঙ্গ লেখা না হওয়া পর্যন্ত আমরা উপস্থিত সদস্যগণের পূর্ণ স্বাক্ষর না দেওয়া ইহা নিশ্চিত করতে হবে।
(৬)সচিবের কাছে নির্বাচিত কোন সদস্য যে কোন তথ্য চাওয়া মাত্র প্রকাশ করিতে হইবে বা পরিপত্র করে দিতে বা দেখাতে বাধ্য থাকবে।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যরা লিখিত অভিযোগে আরো জানান, ৬-দফার অনিয়ম ও এর প্রতিকার যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে জনস্বার্থ রক্ষার্থে বাস্তবায়নে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো তৃণমূলের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ ব্যর্থতায় পরিণত হইবে ও এলাকার সাধারণ অসহায় হাজার হাজার মানুষের অধিকার থেকেও সেবা পেতে বঞ্চিত হবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, জন্ম নিবন্ধন করতে আসা সাধারণ মানুষকে চরমভাবে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান বিউটি সিকদার এলজিএসপির সকল কাজ থেকে ৩০ পার্শেন্ট কমিশন অবৈধভাবে আদায় করে আসছে।
স্থানীয় ৬ ভুক্তভোগী জানিয়েছেন ভিজিএফ কাঠ থাকা সত্বেও কার্ডের চাল পাচ্ছেন না হতদরিদ্ররা। তাদের চাউল দীর্ঘদিন যাবত আত্মসাৎ করে আসছেন চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিউটি সিকদার সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জানিয়েছেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা ইউনিয়ন পরিষদ কে কলঙ্কিত করতেছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তদন্ত শেষে আপনাদেরকে ডাকবো?
অভিযোগের ব্যাপারে আমি শুনেছি যে,জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে ও ইউওনো ম্যাডামের কাছে দিয়েছে? আমি দেখেছি সেদিন মিটিংএ গিয়েছিলাম তখন। আপনারা সাবেক রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে খোঁজ খবর নিয়ে জানেন সে ভালো বলতে পারবেন ঐ ৬জনের চাল কোথায় যায়। এ প্রতিবেদক চেয়ারম্যান কে বলেন,ম্যাডাম আপনি নৌকা কিনে চেয়ারম্যান হয়েছেন ও চেয়ারম্যান হইতে অনেকের সাথে খেলাধুলা করে চেয়ারম্যান হয়েছি,এই কথা বারবার সদস্যদের হুমকি দিলে বলেন বলে সদস্যরা বলেন। চেয়ারম্যান উত্তরে বলেন,ভাই এ সকল কথা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক ভাবে হেও প্রতিপন্ন করার হচ্ছে বলে দাবী করেন।