শনিবার ● ৯ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহ পৌরসভায় ভিজিএফ কার্ড বিতরণে ঘাপলা
ঝিনাইদহ পৌরসভায় ভিজিএফ কার্ড বিতরণে ঘাপলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ পৌরসভায় ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দেয়া ভিজিএফ কার্ড বিতরণ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দুঃস্থরা কার্ড না পাওয়ায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভ আর অসন্তোষ। কার্ড বিতরণে দলীয়করণের অভিযোগ করেছে দুস্থ হতদরিদ্ররা। তাদের ভাষ্য পাড়া মহল্লায় যারা সরকারী দল করেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা ভিজিএফ কার্ড পেয়েছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দুই ঈদে ঝিনাইদহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৪৬’শ ২১টি কার্ড বিতরণ করা হয়। এলাকার কাউন্সিলরা ভোটার আইডি সংগ্রহ করে হতদরিদ্রদের তালিকা প্রস্তুত করতেন। কিন্তু এবার পৌর পরিষদ না থাকায় কার্ড বিতরণে চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়, দেখা দেয় বিশৃংখলা। পৌরসভার ৯ কর্মকর্তা নয়টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব নিয়ে কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত হলেও তাদের দেওয়া হয় মাত্র এক’শ করে ভিজিএফ কার্ড। বাকী কার্ডে ভাগ বসান সরকারীদলের লোকজন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন, নির্বাহী কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ (১ নং ওয়ার্ড), প্রকৌশলী মুন্সি আবু জাফর (২ নং ওয়ার্ড), নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন (৩ নং ওয়ার্ড), প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান কাজল (৪ নং ওয়ার্ড), একাউন্টস অফিসার আব্দুল মজিদ (৫ নং ওয়ার্ড), বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা বদরউদ্দীন কামরান (৬ নং ওয়ার্ড), প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান (৭ নং ওয়ার্ড), প্রকৌশলী ওবাইদুর রহমান (৮ নং ওয়ার্ড) ও প্রকৌশলী বাবুল ইসলাম (৯ নং ওয়ার্ড)। এ সব কর্মকর্তারা জািনয়েছেন তাদেরকে ১০০টি করে কার্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে প্রায় ৩৬’শ কার্ড দলীয় ভাবে বিতরণ করা হয়েছে। আর এই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ঝিনাইদহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বক্তব্য থেকে। পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান জানান, তিনি ৭ নং ওয়ার্ডে দায়িত্ব পেয়েছেন। এই ওয়ার্ডে ভোটার প্রায় ৯ হাজার। প্রতি ঈদে সেখানে ৫১৪টি করে কার্ড দেওয়া হতো। কিন্তু আমাকে মাত্র এক’শটি ভিজিএফ কার্ড দেওয়া হয়েছে। বাকী কার্ডের কোন হিসাব আমি জানি না। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভা থেকে নিযুক্ত প্রতিটি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মাত্র এক’শ করে ভিজিএফ কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে ৯’শ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। বাকী ৩ হাজার ৭১৪টি কার্ডের হিসাব কেও বলতে পারেনি। সবার একই কথা ‘ওরা’ নিয়ে গেছে। “ওরা” কারা? ঝিনাইদহ পৌরসভার একাউন্টস অফিসার আব্দুল মজিদ ৫ নং ওয়ার্ডে দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, আমাকে ৫১৪টি কার্ডের হিসাবে সাক্ষর করতে হচ্ছে। কার্ড কে কোথায় দিচ্ছে আমি বলতে পারবো না। ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জানান, আমাকে মাত্র একশটি কার্ড দেওয়া হয়েছে, যা আমি ১ নং ওয়ার্ডে বিতরণ করেছি। বাকী কার্ডের হিসাব আমি জানিনা। ১ নং ওয়ার্ডের কাকে দিয়েছে কেউ বলতে পারছেন না। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনিক ভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন জানান, পৌরসভার উপদেষ্টা স্থানীয় এমপি মহোদয়। তিনি তো কিছু কার্ড নিতেই পারেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরবকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক ইয়ারুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
ভ্যানযাত্রী গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপায় এবার ভ্যানচালক কর্তৃক ভ্যানের এক গৃহবধূ যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এঘটনায় ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে গলাই জুতার মালা দিয়ে স্থানীয় বাজারে ঘুরিয়েছে এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রামচন্দ্রপুর গ্রামের মেয়ে মিমি ( ছদ্মনাম) গৃহবধূর দুই বছরের বাচ্চাসহ শ্বশুরবাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্য মেয়েটির বাবা মা একই গ্রামের বিশ্বস্ত ভ্যানচালক বকুল সদ্দারের ভ্যানযোগে গত সোমবার সন্ধায় ফুলহরি যাওয়ার জন্য বাড়ী থেকে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে তার স্বামী মোটরসাইকেল যোগে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাবে এমনটি কথা ছিল। কিন্তু মির্জাপুর ইউনিয়নের পরমন্দপুর ফাঁকা মাঠের মধ্যে পৌঁছাতে অন্ধকার হয়ে যায়। এসময় ফাঁকা মাঠ পেয়ে লম্পট ভ্যানচালক গৃহবধূ কে ধর্ষণের চেষ্টা করে। মেয়েটি বাধা দিতে গেলে তার দুই বছরের সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।শুরু হয় ধস্তাধস্তি,গৃহবধূ নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে থাকে। কাঁদতে থাকে শিশু বাচ্চাটি।একপর্যায়ে মেয়েটির স্বামী ও পরিবারকে ফোন করলে মেয়েটির স্বামী ও স্থানীয় রামচন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ শামীম আহমেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ভ্যানচালক বকুল সদ্দার ভ্যান রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ ভ্যানটিকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে জব্দ করে। এঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে শুরু হয় তুলকালাম। গত বুধবার স্থানীয় ইউপি সদস্য পলাশ ও গ্রাম্য মাতব্বরা শালিস মিমাংসা করে ধর্ষণ চেষ্টাকারী বকুল কে গলাই জুতার মালা দিয়ে রামচন্দ্রপুর বাজারে ঘুরায়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে ভ্যানযোগে বিভিন্ন জায়গায় যায়৷ আর যদি ভ্যানচালক তার যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তাহলে নারীরা নিরাপদ কোথায়! আর তার শাস্তি হিসেবে জরিমানা নিয়েছে ৭০ হাজার টাকা আর গলাই জুতার মালা,এটা কেমন বিচার! তারা আরো জানায়, ইউপি সদস্য পলাশ ভ্যানচালক বকুল সদ্দারের কাছ থেকে গরু বিক্রি করা ৭০ হাজার টাকা নিয়ে শালিস মিমাংসা করেছে। অথচ মেয়ের পরিবারকে একটি টাকাও দেয়নি। এদিকে মেয়ের পরিবার নিরীহ অসহায় হওয়ায়,তারা মামলায় জড়াতে চাই না। যেকারণে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। রামচন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ শামীম আহমেদ জানান,ভ্যানচালক কর্তৃক গৃহবধূ যাত্রী কে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। ঘটনার মৌখিক অভিযোগ শুনে তাৎক্ষনিক ওইদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ভ্যানচালক পালিয়ে যায়। যেয়ে দেখতে পায় মেয়েটির বাচ্চা খুবই ভয় পেয়েছে, কান্নাকাটি করছে। আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয় ও ভ্যানটি জব্দ করে ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। তবে এবিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ৪জনকে কুপিয়ে যখম
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মিয়াকুন্ডু গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ৪ জনকে কুপিয়ে যখম করেছে প্রতিপক্ষরা। তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এ ঘটনায় ঘটে। আহতরা হলো-ওই গ্রামের মৃত মকসেদ আলী বিশ^াসের ছেলে জাহিদ বিশ^াস (৫৮), রিপন বিশ^াস (৩৯) মিজানুর রহমান (৪২) ও মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান (৬০)। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামের উলফাৎ হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমি ভোগদখল করে আসছিল। কিন্তু কিছুদিন পুর্বে একই গ্রামের ইরাক আলী, হারুন মিয়া, মিটুল হোসেন, নজরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সোলাইমান হোসেন জমিতে জমিতে ভাগ দাবী করে আসছিল। কিছুদিন পুর্বে কয়েক বিঘা জমি জোরপুর্বক দখলও করে নেয় তারা। বিষয়টি নিয়ে থানায় মিমাংসা করা হয়। শুক্রবার সকালে সিদ্দিকুর রহমান তার জমিতে চাষ করতে গেলে ইরাক আলী, হারুন মিয়া, মিটুল হোসেনসহ আরও কয়েকজন তার উপর হামলা চালায়। সিদ্দিকুরের আত্মচিৎকারে অন্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, মারধরের ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।