সোমবার ● ১৮ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সড়ক দূর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে জন্ম নিয়ে বেঁচে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিলেন ডিসি
সড়ক দূর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে জন্ম নিয়ে বেঁচে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিলেন ডিসি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-স্বামী ও সন্তানসহ তিনজন নিহত হওয়ার সময় অন্তঃসত্ত্বা নারীর(মায়ের) পেটে থাকা শিশু চাপ খেয়ে(গর্ভ ফেটে) রাস্তায় প্রসব হয়ে (জন্ম দেওয়া) পড়া আহত নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ এনামুল হক।
গতকাল শনিবার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়ার লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুকে দেখতে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা ও পরবর্তী ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘আমি ওই শিশুকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে শিশুটির বর্তমান অবস্থা সহ তার সকল বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। সড়ক দূর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন মারা গেলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে নবজাতকটি বেঁচে আছে এবং সুস্থ আছে। আপনজনদের হারালেও আমরা তার পাশে আছি।শিশুটির চিকিৎসা খরচসহ ভবিষ্যতে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে দেব।’
এর আগে শিশুটির চিকিৎসা খরচ ও ভরণপোষণসহ সকল দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রিশালের এক ব্যক্তি।
এদিকে দূর্ঘটনার পরপরই প্রথমে আহত শিশুকে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।সে আশঙ্কামুক্ত এবং সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি মেডিকেল সিবিএমবির সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি আরও জানান, শিশুটির সামগ্রিক অবস্থা আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। যেহেতু তার মা নেই, সেহেতু তাকে ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। বাচ্চাটির ডান হাতে দু’টি হাড় ভাঙা রয়েছে। সেটির জন্য আলাদা চিকিৎসা করা হচ্ছে। আশা করছি তার কোনো ধরণের সমস্যা হবে না।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে ত্রিশাল পৌর শহরের ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনার আগে ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রাম থেকে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) তাঁর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রতœা বেগম (২৬)ও ছয় বছরের কন্যা সন্তান সানজিদা জান্নাতকে নিয়ে প্রসূতি স্ত্রী’র আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ত্রিশাল পৌর এলাকায় আসেন। পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে সড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগামী মালবাহী ময়মনসিংহগামী ঢাকা মেট্রো-ট-২০-৩৫৮০ ট্রাকটি তাদের চাপা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম, তাঁর স্ত্রী রতœা বেগম ও মেয়ে জান্নাত নিহত হয়। আর দূর্ঘটনার সময় অন্তঃসত্ত্বা রতœা বেগমের পেটে থাকা নবজাতক শিশু চাপ খেয়ে (গর্ভ ফেটে)রাস্তায় প্রসব হয়ে পড়ে। পরে নবজাতক মেয়ে শিশুকে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।কিন্তু রাস্তায় যানজটের কারণে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।সে আশঙ্কামুক্ত এবং সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি মেডিকেল সিবিএমবির সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।