শনিবার ● ১৩ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ক্লিনিকের বেডে শুয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন রহিমা
ক্লিনিকের বেডে শুয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন রহিমা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার আনন্দবাগ গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৮) পেটে ব্যথা নিয়ে ৬ আগস্ট ভর্তি হন কালীগঞ্জ হাসনা ক্লিনিকে। এ ক্লিনিকের ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানেই তার চিকিৎসা শুরু হয়। ক্লিনিক থেকে জানানো হয় তার পেটের মধ্যে নাড়ি পেঁচানো অবস্থায় রয়েছে। অপারেশন করা লাগবে জরুরি ভাবে, অপারেশন না করলে সে নাকি মারা যাবে। সে কারণে ১১ আগস্ট রাতে তার পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচার সম্পন্ন না করেই ডাক্তার তার পেট পুনরায় সেলাই করে বেডে স্থানান্তর করেন। ক্লিনিকের বেডে শুয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন রহিমা বেগম। রোগীর স্বামী জহুরুল ইসলাম জানান, আমার স্ত্রীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার সকল কাগজ দেখেশুনে ৬ দিন পর ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে অপারেশন করলেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অপারেশন টেবিলে রোগীর পেট কাটার পরে আমাদের জানানো হলো রোগীর নাড়িতে একটি টিউমার রয়েছে। এ কারণে অপারেশন সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও এই অপারেশন করতে হলে ৭ থেকে ৮ জন ডাক্তার লাগবে। এই বলে পেট সেলাই করে আবার বেডে দিয়ে দেয়। রোগী যদি অপারেশন করে ভালো করা নাই যাবে তাহলে কেন অপারেশন করা হলো? আমার স্ত্রীর জীবন এখন সংকটাপন্ন। আমি ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিচার চাই। আর আমার রোগীর যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে তার দায় দায়িত্ব¡ ওই ক্লিনিক মালিককেই নিতে হবে। হাসনা ক্লিনিকের মালিক আবদুর রহমান জানান,এই রোগীর অপারেশন করেন ডাঃ আসলাম হোসেন ও ডাঃ প্রবীর কুমার বিশ্বাস। অপারেশন কেনো সম্পন্ন করা হলো না সে ব্যাপারে আপনি ডাক্তারদের সাথে কথা বলেন। হাসনা ক্লিনিকে এই রোগীর সুচিকিৎসা সম্ভব নয় জেনেও শুধুমাত্র অর্থের লোভে অপারেশন করা হলো কেনো ? এই প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। অপারেশনের ব্যাপারে ডা: প্রবীর কুমার বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, রোগীর অপারেশন আমরা কমপ্লিট করেনি। ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশি থাকায় রিস্ক নেয়নি। পরবর্তীতে প্রস্তুতি নিয়ে যেকোন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই অপারেশন করা যাবে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাজহারুল ইসলামের সাথে এধরনের অপচিকিৎসার ব্যাপারে কথা হলে তিনি জানান,ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দিনে রাখা হচ্ছে কালো পাথর, রাতের বেলা চুরি
ঝিনাইদহ :: দিনে খোড়া হচ্ছে সড়ক। রাস্তার উপরের কালো পাথর রাখা হচ্ছে দুই পাশে। আর রাতের আধারে ট্রাকে করে তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অন্য কোথাও। এভাবে রাস্তার ‘ব্লাক টপ’ ক’দিন ধরে সরিয়ে পর অবশেষে জনতার হাতে আটক হয় ঠিকাদার প্রতিষ্টানের ট্রাক ড্রাইভার। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার লালন সড়কের নির্মান কাজে। নিয়ম অনুযায়ী উপরের ব্লাক টপ সড়কেই থাকার কথা। কর্তৃপক্ষ বলছেন, এগুলো সরিয়ে নেওয়া নিয়ম বহির্ভূত। সিডিউল অনুযায়ী এগুলো সড়কেই থাকার কথা। উপজেলা এলজিইডি দপ্তরের তথ্যমতে, শহরের দোয়েল চত্তর মোড় থেকে বাকচুয়া পর্যন্ত সড়কটির ১১.২৩০ কিলোমিটার পুনর্নির্মাণের জন্য ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১২ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ১৮৮ টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়। ইপিআইসি-কপোতাক্ষি জেভি নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরু করার কথা একই বছরের ১২ আগষ্ট। আর নির্মাণ কাজ শেষের মেয়াদ ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি। কার্যাদেশের দীর্ঘ এক বছরেও কাজ শুরু না হওয়ায় সড়কটিতে জনসাধারণের ভোগান্তি নিয়ে বিভিন্ন্ পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে শুরু করা হয় সড়কটির নির্মান কাজ। তবে চলছে ধীর গতিতে। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে নির্মাণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নিয়ে। গত সোমবার (৮ আগষ্ট) গভীর রাতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সড়কের ওপরের কালো পাথর সরিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দেয় স্থানীয় জনতা। তাঁরা দুই ট্রাক ড্রাইভার কে আটক করে খবর দেয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে। পরে সেখানে পাঠানো হয় পুলিশ। প্রথমে তারা দুই ট্রাক চালককে আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছেন, উপরের ওই কালো পাথর সড়কের অংশ। সেগুলি সড়কেই ব্যবহার করার কথা। সরিয়ে নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। হরিণাকুন্ডু শহরের চাতাল মোড় এলাকার নৈশ প্রহরি মঈনুদ্দিন হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রাতের বেলা ট্রাকে করে এগুলো চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এই পাথর সড়কেই থাকবে এমন বিষয় জানতে পেরে স্থানীয় জনসাধারণ রাতে পাথরভর্তি দুটি ট্রাক আটক করে। ওই এলাকার ব্যবসায়ী লিটন বলেন, এই পাথর সড়কেই বালি ও খোয়ার সাথে মিশিয়ে পরে সড়কের নির্মাণ কাজে দেওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার সেটি না করে এগুলো সরিয়ে নিয়ে যায়। ফলে প্রথমেই নিন্মমানের কাজ করায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ শুরু করেন। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল আক্তার বলেন, ওই দিন রাতে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। অসৎ উদ্দেশ্যে রাতের আধারে পাথর সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাই সরিয়ে নিয়ে সড়কের অন্য খারাপ জায়গায় দিচ্ছি। উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, ঘটনাটি আমি রাতেই শুনেছি। সেখানে আমি অফিসের লোক পাঠিয়েছিলাম। মঙ্গলবার সকালে আমি নিজেও সরজমিনে সড়কটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে ওপরের কালো পাথর সরিয়ে নেওয়ার সত্যতা পেয়েছি। সিডিউল অনুযায়ী এই অংশ সরিয়ে নেওয়ার কোনো বিধান নেই। এগুলো সড়কের সম্পদ সড়কেই থাকবে। প্রথমে সড়কের ওপরের অংশ খুড়ে সেখানে সমান করে তারপর রোলার দিয়ে ম্যাকাডাম করতে হবে। সবশেষে কার্পেটিং হবে। এই অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও সুস্মিতা সাহা বলেন, রাতে ঘটনাটি জানার পর আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ব্যবস্থা নিতে। জনগুরত্বপূর্ণ এই সড়কের নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য জানতে সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।
কালীগঞ্জে স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী আটক, আলামত উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: ঘরে থাকা গরু খুটা পোতা কাঠের খেটে দিয়ে মাথায় কয়েক বার আঘাত করি। এ সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর মারা গেছে বুঝতে পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। গত ৯ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চাঁদবা গ্রামে পারুল বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূ হত্যাকারী স্বামী মতিয়ার রহমান এভাবেই পুলিশের কাছে জবানবন্ধি দেন। হত্যার দুইদিন পর শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে যশোর সদর উপজেলা ফুলবাড়ি ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রাম থেকে তাকে আটক করে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ। এরপর বিকালে পুলিশ ঘাতক স্বামীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় হত্যার গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। ওসি আবদুর রহিম মোল্লা জানান, ঘটনার পর থেকে ঘাতক মতিয়ার রহমান পলাতক ছিল। এরপর তাকের ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। শুক্রবার গোপন সংবাদে জানতে পারি, সে যশোরের লেবুতলা গ্রামে অবস্থান করছে। সংবাদ পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে থেকে তাকে আটক করা হয়। নিহতের প্রতিবেশিরা জানিয়েছে, প্রায়ই মতিয়ার - পারুল দম্পতির মধ্যে সংসারের নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। ঘটনার দিন রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। তবে, প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটায় প্রতিবেশিরা গুরুত্ব দেয়নি। বুধবার সকালে পারুলকে মৃত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
ঝিনাইদহে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ছাত্র নিহত; চালক পলাতক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চারমাইলে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় শিমুল হোসেন (১৩) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের চারমাইলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিমুল হোসেন ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর চাঁনপাড়া এলাকার আনারুল ইসলামের ছেলে। সে আরাপপুর রংধনু কিন্ডারগার্টেনের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। ঝিনাইদহ আরাপপুর হাইওয়ে থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বিকেলে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের নানা বাড়ি থেকে বাইসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল শিমুল। পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কাভার্ডভ্যান তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জোবাইদা আফরোজ রুমা বলেন, শিশুটি হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছে। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।
ঝিনাইদহে মামলা, হামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে গ্রামবাসীর মানববন্ধন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে দুই পরিবারের হয়রানি, মামলা ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার মধুপুর চৌরাস্তা বাজারে উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের মানুষ এ কর্মসূচী পালন করে। গ্রামবাসী ও বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে এলাকায় কয়েক’শ নারী-পুরুষ অংশ নেয়। এতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজু, আদিবাসী নেতা রনজিত রায়, কৃষ্ণ রায়, আন্না রায়সহ ভুক্তভোগীরা অংশ নেয়। ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজু তার বক্তব্যে বলেন, ওই গ্রামের সাবান খান ও তার ভগ্নিপতি ইদ্রিস আলী গ্রামের অসহায়, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জমি জোরপুর্বক দখল করে নিচ্ছে। বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে তারা। ২০০৩ সালে একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করে যা ২০২০ সালে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ভুক্তভোগী আদিবাসী আন্না রায় বলেন, ইদ্রিস আলী মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা নিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। কৃষ্ণ রায় নামের এক আদিবাসি নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এছাড়াও এলাকার মানুষের নামে মামলা করে বাড়িছাড়া করে তাদের জমি জোরপুর্বক দখল করেছে। এছাড়াও এলাকার, ওবাইদুল, আসাদুল, আনোয়ার, আসাদ, আকাশ, বজলু, তুহিন বিশ্বাস, আশিক বিশ্বাস, মনিরুল মালিতা, রানা হোসেনসহ কয়েকজনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। হয়রানি বন্ধ ও জমি ফিরে পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় মানববন্ধন থেকে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইদ্রিস আলীর বলেন, সব মিথ্যা কথা। আমি কারো জমি জোর করে দখল করে রাখিনি। একটি রায় হয়েছিল তার বিরুদ্ধে আমি আপিল করেছি।