রবিবার ● ২১ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » মাদকের জোয়ারে ভাসছে আলামপুর দাসপাড়া ও পশুহাট (প্রথম পর্ব)
মাদকের জোয়ারে ভাসছে আলামপুর দাসপাড়া ও পশুহাট (প্রথম পর্ব)
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়ার শহর যেমনটি মাদকের জোয়ারে ভাসছে, ঠিক তেমনি ভাসছে অঁজপাড়া গাঁ কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আলামপুর দাসপাড়া ও বালিয়াপাড়া পশু হাট। আর এই মাদকের যোগান দিচ্ছে মাদক সম্রাট পোল্লাদ। গত এক বছর ধরে বীরদর্পে ইয়াবা, গাজা ও ফেনসিডিলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পেল্লাদ দাস একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ইয়াবা সহ ধরা পড়লেও আইনের বেড়াজাল দিয়ে বেরিয়ে এসেই শুরু করে তার অবৈধ ব্যবসা। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে একাধিকবার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। অপরদিকে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন দপ্তরে গণপিটিশন দায়ের করেছিল। অবশেষে স্থানীয় এক নেতার সহযোগিতায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় উপস্থিত হয়। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়ে ব্যবসা করবে না বলে কান ধরে উঠবস করেছিল। ওয়াদা করে এসেই পুনরায় শুরু করেছিল মাদকের ব্যবসা। তার কয়েকদিন পরেই ঝিনাইদহ র্যাবের হাতে ৪৭০ পিস ইয়াবা সহ আটক হয়েছিল। তারপর জেল থেকে বেরিয়ে প্রায় ছয় মাস ব্যবসা বন্ধ রেখে গত এক বছর সে আবারো ইয়াবার বাজার বসিয়েছে দাসপাড়া ও বালিয়াপাড়া পশু হাটের মধ্যে।
এলাকাবাসী জানায়, পেল্লাদ দাস শুধু আলামপুরেই ব্যবসা করছে না, সে পার্শ্ববর্তী বালিয়াপাড়া, রাতুলপাড়া, ভবানীপুর, দহকুলা, ভাদালিয়া, স্বস্তিপুর, কুড়ীপাড়ায় ফোনে ফোনে ভ্রাম্যমান হিসাবে তার সহযোগীদের দিয়ে মাদক সেবীদের কাছে মাদক পৌঁছে দিচ্ছে। তার ব্যবসা শুধু গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। কুষ্টিয়া শহরের মাদক সেবীরাও চলে যাচ্ছে তার কাছে মাদক কিনতে। তারা আরো জানায়, তার মাদকের হট স্পট এখন বালিয়াপাড়া পশু হাট। বিকেল থেকেই পশু হাটের মধ্যে বিভিন্ন ব্রান্ডের নামি দামি মোটরসাইকেল প্রাইভেট কার নিয়ে শহর থেকে মাদক সেবীরা এসে উক্ত পশু হাটের মধ্যে সেবন করে।
তার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা জানায়, গত এক বছরে সে অবৈধ ব্যবসা করে ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনে গেছেন। ক্রয় করছে একটি পর একটি জমি। অপর দিকে নিঃস্ব হচ্ছে স্থানীয় অভিভাবকরা। স্থানীয় অভিভাবকরা একদিকে সন্তানদেরকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছে, অন্যদিকে তারা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পোল্লাদের মাদকের ভয়াল থাবায় গ্রাস করেছে উল্লেখিত গ্রামের উঠতি বয়সী যুবকদের ফলে বিপথগামী হয়ে পড়ছে তারা।
এ বিষয়ে বালিয়াপাড়া গ্রামের একজন মাদকসেবী জানায়, হাত বাড়ালেই পোল্লাদের কাছ থেকে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা পাওয়া যায় অনাসেই। তবে গাঁজা ও ইয়াবা সবসময়ই পাওয়া যায়। ঐ মাদক সেবী এটাও বলেন, পোল্লাদ ব্যবসা করছে রাজনৈতিক নেতাদের মদদে ও কিছু আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগীতায়। তবে তার বিরুদ্ধে ধর্ষন, হত্যা ও মাদকের মোট ৫/৬টি মামলা চলমান আছে কুষ্টিয়ার আদালতে। স্থানীয় বাসিন্দারা আবারো সোচ্চার হয়ে উঠেছেন পোল্লাদের বিরুদ্ধে, তারা বলেন আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা না করে তাহলে আমরাই ব্যবস্থা নিব।