রবিবার ● ২১ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » শোক দিবসের অনুষ্ঠান পরিণত হলো ভুরিভোজে, অতিথিরা খেলেন খাসির গোস্ত ইলিশ ও দই
শোক দিবসের অনুষ্ঠান পরিণত হলো ভুরিভোজে, অতিথিরা খেলেন খাসির গোস্ত ইলিশ ও দই
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে নোটিশ করে ছুটি দিয়ে স্কুল মাঠে শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করা হয়েছে। এমনকি বিদ্যালয়ে টানানো হয়নি জাতীয় পতাকা। আর এ অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। শনিবার মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আযোজন করে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী, মহেশপুর থানার ওসি সেলিম মিয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানায়, শুক্রবার সারাদিন ধরে স্কুলের ভবনের সামনে স্টেজ করা হয়। শনিবার সকাল থেকেই ৪/৫ টা মাইক লাগিয়ে আলোচনা শুরু করে। স্কুলে শিক্ষকরা এলেও কোন ক্লাস নেওয়া হয়নি। ৭ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, গত বৃহস্পতিবার ক্লাসে এসে স্যাররা নোটিশ করে বলে দিয়েছেন যে শনিবার স্কুল বন্ধ। আমরা আজ ক্লাস করতে পারিনি। ১০ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, আগে থেকেই স্কুল ছুটি দিয়েছে। আজ শোক দিবসের অনুষ্ঠান তাই এসেছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করা হচ্ছে। তাই বলে স্কুল ছুটি দিয়ে কেন? ওই দিন কি ঘটেছিলো তা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে এ আলোচনা করে কি লাভ হবে? আলোচনা সভা বিকেলে করলে ভালো হতো। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষক মিলনায়তনে গণভোজের নামে ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। সভায় আগতদের খিচুড়ি দেওয়া হলেও অতিথিরা ইলিশ মাছ, মাংস, দই, মিষ্টি দিয়ে গণভোজে অংশ নেয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আজ আবহাওয়া খারাপের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম ছিলো। স্কুল ছুটির কথা তিনি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে আয়োজক শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, আমি বিকালে গিয়েছিলাম। ক্লাস হলো কি না আপনি ওই স্কুলের হেডমাস্টারকে জিজ্ঞাসা করেন। শোক দিবসের আলোচনায় গিয়ে, খাসির গোস্ত, ইলিশমাছসহ ভুড়িভোজ হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা আয়োজন করেছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, স্কুল ছুটি দিয়ে আলোচনা সভা করতে হবে এমন কোন নির্দেশনা নেই। যদি নোটিশ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে তাহলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহে সাবেক চেয়ারম্যানের ডিভোর্সি স্ত্রী ৩ সন্তান রেখে উধাও, ছেলের পরিবার অবরুদ্ধ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েলের প্রথম স্ত্রী কুলসুম বেগম তিন সন্তান রেখে ঘর ছেড়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে বাজারগোপালপুর এলাকার চিত্ত দত্তের চেলে বিপুল দত্তের হাত ধরে সে পালিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে এলাকায় হৈ চৈ পড়ে গেছে। সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর এলাকার চায়ের দোকানে সাবেক চেয়ারম্যানের স্ত্রী অন্যের হাত ধরে চলে যাওয়ার বিষয় নিয়ে মুখরোচক আলোচনার হচ্ছে। তবে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল বলছেন কুলসুমকে তিন মাস আগে তিনি তালাক দিয়েছেন। এদিকে বিপুল দত্তের হাত ধরে কুলসুম পালিয়ে যাওয়ায় ছোট ভাইয়ের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এলাকাবাসি। বাজারগোপালপুর গ্রামের আব্বাস আলী জানান, স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিপুল দত্তের সাথে কুলসুম বেগমের বহুদিন থেকে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। শুনেছি গত ১৪ আগস্ট বিপুল দত্ত কুলসুম বেগমকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। কুলসুম কোটাচাঁদপুর উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের শাহজান আলীর মেয়ে। এদিকে বিপুল দত্তের অপরাধের কারণে ছোট ভাই বিকাশ দত্তের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এলাকাবাসী। অবরুদ্ধ বিকাশ দত্তের স্ত্রী বেবী রানী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পাড়ার লোকজন আমাদের সাথে কথা বলছে না, দোকানে বাজার করতে গেলে দোকানীরাও আমাদের কাছে কোনকিছু বিক্রি করছে না। এমনকি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কিছু লোকজন এসে আমাদের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছে। আমি আমার নবজাতক সন্তানকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি নিয়ে মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন জুয়েল জানান, কুলসুমের সাথে গত তিনমাস আগে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে। এখন সে আমার স্ত্রী না। আমি আর বেশকিছু বলতে পারবো না। মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ আহমেদ জানান, বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। এমন ঘটনা ঘটলে এলাকার জন্য লজ্জার বিষয়। তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে মাতুব্বরদের সাথে আলাপ করে সমাধানের চেষ্টা করা যায় কিনা দেখছি। এ বিষয়ে বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই উত্তম কুমার জানান, চেয়ারম্যানের ডিভোর্সি স্ত্রী পালিয়ে গেছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, এক সম্প্রদায়ের মানুষ অন্য সম্প্রদায়ের মেয়েকে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি যাতে ঘোলাটে না হয় পুলিশ সেদিকে নজর রাখছে।
কালীগঞ্জ সড়কে বাঁশ দিয়ে গতিরোধ করে ৬ জনকে বেঁধে রেখে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সড়কে বাঁশ দিয়ে গতিরোধ করে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সদস্যরা। কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পায় তারা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে শহরের সুগার মিল-রেলস্টেশন সড়কে। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রায় সবাইকে মারধর করে। ছিনতাইকারীদের মারধরে আহত একজনকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরের পর খবরটি এলাকায় চাউর হয়। জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে মোটরসাইকেলে প্রথমে দুইজন ব্যক্তি যাওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করা হয়। এ সময় পরপর তিনটি মোটরসাইকেল থামিয়ে রাখা হয়। এরপর তিনটি মোটরসাইকেলে থাকা ৬ জনকে হাত-মুখ বেঁধে পাশের একটি আখক্ষেতে নিয়ে মারধর করা হয়। এরমধ্যে একজন পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। ছিনতাইকারীর কবলে পড়া ৬ ব্যক্তিরা হলেন- শহরের আড়পাড়া এলাকার সোহান উদ্দিন, হাসানুজ্জামান, বাড়েডিহি এলাকার আলী হোসেন, বিল্লাল হোসেন, ঈশ^রবা এলাকার মাসুদ হোসেন ও তার ফুফাতো ভাই কাজল হোসেন। আড়পাড়া এলাকার সোহান হোসেন জানান, রাতে সুগার মিলের পিছন দিয়ে আসার পথে ৭/৮ জন মানুষ তাদের গতিরোধ করে। তাদের দুইজনের হাতে দুইটি পিস্তল ছিল। এছাড়াও দা ও লাঠি ছিল। এ সময় তারা পিছনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পারেননি। এরপর আমাদের ধরে তাদের মোটরসাইকেল বাগানের মধ্যে ফেলিয়ে দেয়। এরপর তিনি তার ছোট চাচাকে গোপনে ফোন করেন। তার ছোট চাচা পুলিশকে জানালে দ্রুত পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। ছিনতাইকারীর মারধরে হাসপাতালে ভর্তি মাসুদ হোসেন জানান, ঈশ^রবা থেকে এশার নামাজের পরে ওই পথ দিয়ে তিনি ও তার ফুফাতো ভাই যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখেন বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া। প্রায় সবার হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এরপর তারা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এরপর মারতে মারতে আখক্ষেতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর খুব কষ্ট করে তাদের হাত থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসি। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, শুক্রবার রাতে এমন খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। দ্রুত পুলিশী তৎপরতায় চক্রের সদস্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে পারেননি। চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।