মঙ্গলবার ● ২৩ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » দেশে মৎস্য হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প মাছের রেনু উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য
দেশে মৎস্য হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প মাছের রেনু উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: চীন ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত মাছের রেনু নিয়ে এক সমৃদ্ধ ভান্ডার গড়ে উঠেছে বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে। চলতি বছর থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প জাতীয় মাছের রেনু উৎপাদন শুরু করেছে। প্রথম বছরে মাঠ পর্যায়ের মাছ চাষিরা সাফল্য পাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় কদর বেড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রেনুর। বর্তমান এই হ্যাচারিতে চীন থেকে আমদানীকৃত সিলবার, বিগহেড ও গ্রাসকার্পের রেনু ও ভিয়েতনামীয় পাঙ্গাস, কালিবাউস এবং সুবর্ন রুই মাছ লালন পালন করা হচ্ছে। আর এই কৃতিত্বের কারণে ৩৮ বছর পর বলুহর হ্যাচারির ললাটে যুক্ত হয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের পালক। হ্যাচারি কর্মকর্তারা আশা করছেন পুরানো ব্রুড মাছের সাথে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত মাছ সংযোজন হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারিতে রেনুর ব্রুড ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষকে উন্নত জাতের কার্প জাতীয় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আমিষের ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০৩ একর আয়তন বিশিষ্ট এই হ্যাচারিতে রয়েছে ৩০টি দৃষ্টিনন্দন পুকুর। ঝিনাইদহ ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, রাজবাড়ি, মেহেরপুর ও সাতক্ষিরাসহ বিভিন্ন জেলায় এই হ্যচারির উৎপাদিত রেনু পৌছে যাচ্ছে। একাবাসি ও হ্যাচারির কর্মচারিরা জানান, হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিবর্তন ফিরে আসে। করোনাকালীন বা যে কোন দুযোর্গের মধ্যেও শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ লাখ ১১ হাজার টাকা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আব্দুল করিম নামে ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা এলাকার এক মৎস্য চাষি জানান, ব্রুড উনয়নের পাশাপাশি ১৫ বছর বন্ধ থাকা প্রশাসনিক ভবন চালু চালু করা হয়েছে। অথচ আগে কোন হ্যাচারি ম্যানেজার প্রশাসনিক ভবন সংস্কার বা উন্নয়নের মাধ্যমে চালু করতে পারেনি। ফলে কর্মকর্তা কর্মচারিদের কোন অফিস ছিল না। এখন চিরচেনা এক পরিপাটি ভবনে দাপ্তরীক কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, হ্যাচারির মধ্যে আবর্জনা স্তুপে ভরা ছিল। সেগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফুল বাগান তৈরীর মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে মজবুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। আর এসবই হয়েছে হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর। হাটগোপালপুর এলাকার চাষি তুষার আহম্মেদ জানান, আমার মতো দাক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মৎস্য চাষিরা বলুহর হ্যাচারির রেন নিয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন। অনেক বেকার যুবক পুনবার্সিত হয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে লোকবলের অভাবে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। মোট ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি পদ শুন্য রয়েছে। গুরুত্বপুর্ন পদগুলো জনবল নিয়োগ করা হলে এই হ্যাচারি রেনু উৎপাদে আকাশ ছোয়া সাফল্য এনে দিত। তাছাড়া হ্যাচারির অতিপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। অনেক ভবন এখনো জরাজীর্ন। হ্যাচারি ম্যানেজার মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম জানান, বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্পন্ন রেনু উৎপাদন করে মৎস্য চাষিদের কাছে সুলভ মুল্যে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া আধুনিক কলাকৌশল ও সর্বশেষ লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ চাষিদের জীবন মান উন্নত করে থাকে। ফলে এলাকায় বেকারত্ব হ্রাসের পাশাপাশি ব্যপক হারে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন দক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষের পুকুরে ৬০ ভাগ রেনু বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি থেকে যায়। তিনি বলেন শুন্যপদে জনবল নিয়োগ ও হ্যাচারির মধ্যে অতিপ্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করা হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারির মান আরো বৃদ্ধি হতো।
ঝিনাইদহে চোরের ঘুষিতে মাল্টা চাষি নিহত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে চোরের ঘুষিতে মনু পাঠান (৬৫) নামে এক মাল্টা চাষির মৃত্যু হয়েছে। রোববার মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে। নিহত মনু পাঠান ওই গ্রামের মৃত আলী পাঠানের ছেলে। নাজমুল হুদা নামে এক গ্রামবাসি জানান, মনু পাঠান বাড়ির পাশের ১৫ কাঠার একটি জমিতে মাল্টার আবাদ করেন। মাল্টা খাওয়ার উপযোগী হওয়ায় তিনি ওই বাগান প্রতি রাতে পাহারা দিতেন। রোববার রাতে বাড়ির ছাদ থেকে মাল্টা বাগান দেখছিলেন তিনি। এমন সময় দুই যুবক বাগানে প্রবেশ করে ফল ছিঁড়তে থাকে। এ দৃশ্য দেখে মনু পাঠান বাগানে যান। এসময় এক যুবক পালিয়ে গেলেও আরেকজনকে ধরে ফেলেন তিনি। ওই যুবক মনু পাঠানকে কিলঘুষি মারলে তিনি বুক গেলো বলে চিৎকার করে ওঠেন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার মৃত্যু হয়। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, অপরাধী শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে রয়েছে।
শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
ঝিনাইদহ ::ঝিনাইদহে ৪ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে নির্যাতিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: মিজানুর রহমান এ দন্ডাদেশ প্রদাণ করেন। মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শৈলকুপা উপজেলার ফলিয়া গ্রামে শিপন মন্ডল প্রতিবেশী ৪ বছরের শিশুকে মিষ্টি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটি বাড়িতে গিয়ে নির্যাতনের কথা বলার পর তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই শিশুটির দাদা বাদি হয়ে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সোমবার আদালত অভিযুক্ত শিপন মন্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়। একই সাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
কারাগারে বিনা বিচারে আটক সেই প্রতিবন্ধি মৃনাল রায় ৩২ মাস পর মুক্ত
ঝিনাইদহ :: বিনা বিচারে ঝিনাইদহ কারাগারে আটক থাকা প্রতিবন্ধি মৃণাল রায়ের মুক্তি মিলেছে। ৩২ মাস পর গতকাল সোমবার সকালে নিলফামারী থেকে তার মামা চিনেন্দ্র নাথ রায়সহ তার স্বজন ঝিনাইদহ সদর থানা জুডিসিয়াল আমলী আদালতে প্রমানাদি দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট যাচাই অন্তে কাগজ পত্র সঠিক আছে মর্মে নিশ্চিত হয়। আদালত থেকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে পাঠানো হয় মৃণাল রায়ের মুক্তির আদেশ। বিকালে জেলা কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পর কারা ফটকে মৃণাল রায় তার আত্মীয় স্বজনদের দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেছেন নিরাপদ হেফাজতে থাকা প্রতিবন্ধি মৃণাল রায়কে আদালতের আদেশে মুক্তি দিয়ে তার মামার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মৃণাল তার মামাকে আনান্দে জড়িয়ে ধরেন। কারা ফটকে মামা ভাগ্নের এই মিলন দৃশ্য উপস্থিত সবার মাঝে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মৃনালের বাড়ি নিলফামারী সদর উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের দক্ষিন চাওড়া গ্রামে। মামা চিনেন্দ্র নাথ রায় জানান মৃণালের পিতা যতিন্দ্রনাথ রায় স্কুলের ইংরাজী শিক্ষক ছিলেন। তিনি বিজ্ঞ আদালতের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য ঝিনাইদহ সদর থানার তৎকালীন এসআই মোঃ ইউনুস আলী গাজী ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা ওই প্রতিবন্ধিকে স্থানীয় লোকজনের হেফাজত থেকে উদ্ধার করে সেফ কাষ্টডির জন্য আদালতে প্রেরণ করেন। বিষয়টি নিয়ে গনমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে আদালত আটক ব্যক্তির নাম পরিচয় উদ্ধারের জন্য জেলা কারাগার, জেলা নির্বাচন অফিস ও টেকনাফ, উখিয়া ও ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আদেশ প্রদান করেন।
ট্রাকের ধাক্কায় গ্রাম্য চিকিৎসকের মৃত্যু; আহত ১
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ট্রাকের ধাক্কায় এক গ্রাম্য চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও একজন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের নগর বাথান ব্রিজ এলাকায় রোববার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত মিলন হোসেন (৪০) মেহেরপুর পৌরসভার ঈদগাহ পাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। আহত খোকন হোসেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। তিনি মেহেরপুর সদর উপজেলার কাশরিপাড়ার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে। ওসি সোহেল বলেন, “হতাহতরা খুলনা থেকে ওষুধ কিনে মোটরসাইকেলে করে মেহেরপুর যাচ্ছিলেন। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মিলনের মৃত্যু হয়। পরে খোকনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
বেশী দামে সার বিক্রির অভিযোগে কালীগঞ্জে ৪টি দোকানে জরিমানা
ঝিনাইদহ :: বেশী দামে সার বিক্রি করার অপরাধে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের পর এবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে নেমেছে। সোমবার বিকালে অধিদপ্তরটির অভিযানকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ৪ টি দোকানে অনিয়ম ধরা পড়ে। সে সময়ে মোট ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাছাড়াও একটি খাবার হোটেলেও ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হক জানান, চলমান পরিস্থিতিতে অনেক অসাধু দোকান মালিক ও সার ব্যবসায়ী বেশী মুনাফার আশায় বেশী দামে সার বিক্রি করছে। এমন কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ শহরের থানা সংলগ্ন এলাকার সারের দোকানে অভিযান চালালে সত্যতা মেলে। এ সময় বেশ কিছু অপরাধে ৪ টি দোকান হতে মোট ২৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সাথে সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে তাদেরকে সতর্ক করা হয়। অভিযানকালে শহরের অস্বাস্থকর পরিবেশে খাবার বিক্রি করায় একটি হোটেলেও আরও ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উল্লেখ্য,কালীগঞ্জের কৃষকদের অভিযোগ, শহরের নির্মল ভৌমিক কোন তোয়াক্কা না করে এখন আরও বেশি দামে সার ও কৃষি সামগ্রী বিক্রি করে আসছে। কাজেই তার বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া হোক। চলমান আমন চাষে কৃষকদের প্রয়োজন মত সার পাওয়ার নিশ্চয়তায় অভিযান আরও জোরদার করা হবে।