মঙ্গলবার ● ২৯ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » ৪৪ বছরেও বাঘইলের বদ্ধভুমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়নি
৪৪ বছরেও বাঘইলের বদ্ধভুমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়নি
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি :: আগামিকাল ৩০ মার্চ (বুধবার) ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের বাঘইল পূর্বপাড়ায় কিয়ামউদ্দিন মুক্ত দিবস পালিত হবে ৷ বাঘইলের কৃতি সন্তান,মৃদুভাষি ও সমাজসেবক মরহুম কিয়ামউদ্দিনের যোগ্য ছেলে বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের পক্ষ থেকে নিজ বাড়িতে মিলাদ ও দোওয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে ৷ প্রতি বছর এইদিনে মরহুমের বাড়িতে মিলাদ ও দোওয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় ৷
কিয়ামউদ্দিনের ছেলে ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীরা জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখ (বুধবার) বিকালে কয়েকজন রাজাকারের সহায়তায় পাকবাহিনীর একটি দল ট্রেনযোগে ঈশ্বরদী-পাকশী রুটে রওনা দেয় ৷ মাঝপথে শহীদ এলাহী বক্সে(স্বর্ণকার) বাড়ির সামনে হঠাত্ করে ট্রেনটি থামিয়ে দেয় ৷ পাকবাহিনী ও রাজাকাররা ট্রেন থেকে ঝুপঝুপ করে নেমে বাঘইল পূর্ব পাড়ায় ঢুকে পড়ে ৷ নিজ নিজ বাড়ি ও বাড়ির আসপাশ থেকে মৃত সৈয়দ আলী সরদারের বড় ছেলে শহীদ উম্মেদ আলী ওরফে বড় গেদু, হাবিবুর রহমান হাবু ও আব্দুস সাত্তার আলীসহ ৭ জনকে এলাকার সমাজ সেবক মরহুম মোহাম্মদ আলী সরদারের কৃষি জমিতে লাইনে দাঁড় করে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে পাকবাহিনীর সদস্যরা ৷ একই সময় মাত্র পাঁচ ফুট দুরে রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ডিসিও অফিসের উচ্চমান সহকারী ,বাঘইলের কৃতি সন্তান,মৃদুভাষি ও সমাজসেবক মরহুম কিয়ামউদ্দিনকে পাকবাহিনীর মেজর আলাদা করে দাঁড় করিয়ে স্টেনগানের ট্রিগারে চাপ দেয় ৷ কিন্তু বিধি বাম ! স্টেনগানের ট্রিগার নষ্ট হওয়ায় গুলি ফোটেনা ৷ মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে কিয়ামউদ্দিন তখন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে সর্বোচ্চ গতিতে দৌঁড় দিয়ে পালাতে গিয়ে সবুর মিস্ত্রীর বাড়ির পাঠখড়ির বেড়াতে বেধে পড়ে যান ৷ এসময় পাকবাহিনী আবারও তাকে লক্ষ্য করে এলোপাথারী গুলি ছুঁড়তে থাকে ৷ কিন্তু তার গায়ে গুলি না লাগায় সে আবারও দৌঁড়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেও মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি গত ২০০৮ সালের ৩ আগস্ট তারিখে মৃত্যু বরণ করেন ৷ এদিকে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও বাঘইলের ঐ বদ্ধ ভুমি চিহ্নিত করণ এবং ঐ বদ্ধভুমিতে কোন স্মৃতি সৌধ নির্মাণ না করায় কিয়ামউদ্দিনের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ৷ এবিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় ও প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে ৷