সোমবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মৃত্যুর এক বছর পর আদালতে হাজিরা দিলেন নুর
মৃত্যুর এক বছর পর আদালতে হাজিরা দিলেন নুর
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর শহরের নুর ইসলাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২০১২ সালের ১৫ জুন। অথচ ২০১৩ সালে আদালতে হাজির হয়ে ছলেনামায় সাক্ষর করেন। এমন এক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের নওদাগ্রামে। মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে জমি আত্মসাতের জন্যই এমন জালিয়াতির ঘটনা ঘটানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। নওদাগ্রামের মৃত তৈইজ উদ্দীনের ছেলে কুরবান আলী অভিযোগ করে বলেন, তার বড় ভাই নুর ইসলাম ২০১২ সালে মারা গেলেও ২০১৩ সালে আদালতে হাজির হয়ে ছলেনামায় সাক্ষর করেন। জমি দখলের জন্য একই গ্রামের আইনদ্দীন নামে এক ব্যাক্তি এই জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ভুক্তভুগী কুরবান ও তার পরিবার পৈত্রিক সুত্রে ১৭ শতক জমির মালিক। প্রভাবশালী আইনদ্দীন ও তার ভাইদের নজর পড়ে এই জমির উপর। জাল দলিল করে জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। জমি দখলে নিতে ২০১৩ সালে প্রতারক আইনদ্দীন আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত জমির প্রকৃত মালিক কোরবান আলীদের নামে নোটিশ জারি করলে সুচতুর আইনদ্দীন আদালতের নোটিশ গায়েব করে দেয়। আদালতের হাজিরার দিন আইনদ্দীন তার অনুগত লোকদের বিবাদী সাজিয়ে ২০১৩ সালের ১ জুলাই আদালতে হাজির করিয়ে কুরবানের সকল ভাই বোন এমনকি মৃত ভাই নুর ইসলামের জাল স্বাক্ষর করে ছলেনামা করার চেষ্টা করে। কোটচাদপুর পৌরসভার মৃত্যু সনদ অনুযায়ী কোরবানের বড় ভাই নুর ইসলাম ২০১২ সালের ১৫ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও আইনদ্দীন জালিয়াতি করে ১৩ সালে হাজিরা নামায় সাক্ষর করায়। কুরবান আলীর প্রশ্ন তুলে বলেন, আমার ভাই ২০১২ সালে মারা গেলে ২০১৩ সালে কিভাবে আদালতে হাজিরা দিলো? বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসি মোঃ মঈন উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মামলা জটিলতা শেষে দুই মাস ২৫ দিন পর ঝিনাইদহ পৌরসভার ভোট গ্রহনের তারিখ নির্ধারণ
ঝিনাইদহ :: মামলা জটিলতা ও দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে দুই মাস ২৫ দিন পর ঝিনাইদহ পৌরসভার ভোট গ্রহনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। অনুষ্ঠিত হবে। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সাথে আচরণবিধি প্রতিপালন ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মত বিনিময় সভায় এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ আহসান হাবিব খান। নুতন তারিখ ঘোষনার পরপর আবারো সরব হয়ে উঠেছে পৌর নির্বাচনের পরিবেশ। রোববার সকাল থেকেই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জনসংযোগ করতে দেখা গেছে। পাড়া মহল্লায় দল বেধে প্রচারাভিযান চালানোর পাশাপাশি পোষ্টার ও মাইকিং বের করা হয়েছে। তবে প্রথম দিকের মতো তেমন আমেজ নেই। দীর্ঘদিন নির্বাচন স্থগিত থাকার কারণে ভোটাররা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ভোটারদের মাঝে ভাঙ্গাগড়ার খেলা শুরু হয়েছে। ভোটারদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ভোট বন্ধ থাকায় পৌরসেবার মান কমে এসেছে। নাগরিকরা ঠকমতো সেবা পাচ্ছে না। নেই জবাবদিহীতা। রাস্তাঘাটের বেহালদশার পাশাপাশি ময়লা, আবর্জনা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ আহসান হাবিব খান ঝিনাইদহ সফরকালে রোববার দুপুরে বলেন, ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনের সকল প্রার্থীকে আচরণ বিধি সঠিক ভাবে মেনে চলতে হবে। আচরণ বিধি ভঙ্গের ঘটনা ঘটেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নির্বাচন সুন্দর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ভোটারেরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ প্লাটুন বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোটের দুই দিন আগে থেকেই দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। সব কটি কেন্দ্রেই ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহন অনুষ্টিত হবে বলেও জানান তিনি। সভায় জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম, ঝিনাইদহ পুলিশ সুপর মোহাম্মদ আশিকুর রহমান, খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির, জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস ছালেকসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন। এর আগে, চলতি বছরের ১২ জুন একাধিক সংঘর্ষ, আচরন বিধি ভঙ্গসহ নানা কারনে সদর পৌর সভা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেকের প্রার্থীতা বালিত করে নির্বাচন কমিশন। ফলে আইনী জটিলতায় স্থগিত হয়ে যায় ২০২২ সালের ১৫ জুন তারিখের ভোট। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮২ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২ হাজার ২৪৯ জন। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭টি কেন্দ্র ও ২৬৫টি বুথ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, শহরে চালু হয়েছে ভ্রাম্যমান টয়লেট
ঝিনাইদহ :: ভ্রাম্যমাণ টয়লেট চালুর মাধ্যমে এক ব্যতিক্রমী উদ্যগ গ্রহণ করেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা। পৌর এলাকা, গ্রামাঞ্চলসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নামানো হয়েছে এ টয়লেট সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কথাও গুরুত্বসহকারে মাথায় নিয়ে এ উদ্যগ বলে জানিয়েছেন কালীগঞ্জ পৌরপিতা আশরাফুল আলম। রোববার দুপুরে শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট সেবা প্রদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুমসহ পৌরসভার কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা। আয়েশা খাতুন নামে এক নারী জানান, তিনি গ্রাম থেকে শহরে বাজার করতে এসেছেন। শহরের বেশিরভাগ মার্কেটে টয়লেটের সুবিধা নেই। পৌরসভার এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশেষ করে নারীদের জন্য খুবই জরুরি। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, পৌরসভার একটি পরিত্যক্ত গাড়িতে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট বানানো হয়েছে। পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে এটি তৈরির ব্যয় বহন করা হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের কথা মাথায় রেখে ভ্রাম্যমাণ টয়লেটটি তৈরি করা হয়েছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, কালীগঞ্জ উপজেলাসহ দূর-দূরান্ত থেকে শহরে আসা সাধারণ মানুষ প্রকৃতির কাজ সারতে টয়লেটের অভাবে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়ে থাকেন। তাদের অসুবিধার কথা মাধায় রেখেই পৌরসভার একটি পুরাতন পিকআপ গাড়িতে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট বানানো হয়েছে। পৌর ফান্ডের প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। মেয়র আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট গাড়িটি পৌর বাজারের বিভিন্ন জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দুই ঘণ্টা করে অবস্থান করবে। এ সময়ের মধ্যে জনসাধারণ সামান্য ৫-১০ টাকা দিয়ে এটি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। পৌরসভার নেওয়া এমন উদ্যোগটি দেশের থানা পর্যায়ের মধ্যে কালীগঞ্জেই প্রথম চালু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।