সোমবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » জেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝালকাঠিতে আগ্রহী প্রার্থীরা সরব
জেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝালকাঠিতে আগ্রহী প্রার্থীরা সরব
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি:: নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তাই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জেলার প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, বেশিরভাগ জেলাতেই বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক যারা গত ৫ বছর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারাই দলীয় মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। তাদের তালিকা এখন প্রধানমন্ত্রী‘র হাতে রয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
ঝালকাঠিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি,সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সরদার মো.শাহ আলমের। চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ঝালকাঠিসহ দেশের ৬১টি জেলায়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদেরই জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। সেই হিসাবে এ বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে সরদার মো.শাহ আলম জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ঝালকাঠি জেলার সব জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নেন সরদার মো.শাহ আলম। বিশেষ করে সব জনপ্রতিনিধিদের তিনি উন্নয়নমূলক কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত করায় ঝালকাঠির গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত জেলা পরিষদের উন্নয়ন পৌঁছে গেছে। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের মাঝে সরদার মো.শাহ আলমের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
আইন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে থাকেন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটেই নির্বাচিত হয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ঝালকাঠিতে আগ্রহী প্রার্থীদের প্রচার বেড়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড তুলে ধরে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।
তবে ১৭ অক্টোবরের এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাইরে আর কোনো দলের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।
ঝালকাঠিতে চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সরদার মো. শাহ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ঝালকাঠি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান, জেলা পরিষদের সদ্যবিদায়ী সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ফায়জুর রব আজাদ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সালাহ্উদ্দিন আহম্মেদ সালেক।
তফসিল অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচন হবে জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০২২ অনুসারে। এতে প্রথমবারের সঙ্গে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের সংখ্যায় কিছু পার্থক্য হবে।
“আগে প্রতি জেলায় ১৫ জন সাধারণ সদস্য এবং পাঁচ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকার বিধান ছিল। তা সংশোধন করে প্রত্যেক উপজেলায় (জেলার মোট উপজেলার সমানসংখ্যক) একজন করে সদস্য এবং চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হবে।
আরও জানান, উপজেলার সংখ্যা যাই হোক, সংরক্ষিত নারী সদস্য দুইজনের কম হতে পারবে না। ভোটাররা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট দেবেন।
এব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, সংশোধিত আইন অনুযায়ী, এবার ঝালকাঠিতে একজন চেয়ারম্যান, চারজন সাধারণ সদস্য ও দুজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন।
তিনি আরও বলেন, জেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার ৪৫৪ জন। এখনও এ ব্যাপারে কোনো কাগজ-পত্র আসেনি। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি আমারা নিচ্ছি। ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক আলহাজ্ব সরদার মো. শাহ আলমকে আবার দলীয় প্রার্থী দেখতে চেয়ে ফেইসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন তার সমর্থকরা।
প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম দূর্দিনের পরীক্ষিত, দলের প্রবীন ও ক্লিন ইমেজের নেতা। তার বিরুদ্ধে তৃনমুল আওয়ামীলীগে কোনো বির্তর্ক নেই। ঝালকাঠি জেলার অভিভাবক আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি মহোদয়ের নির্দেশে তিনি ইতিমধ্যে দু’দফা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি দূর্নীতি ও টেন্ডারবাজী মুক্ত রেখে দায়িত্ব পালন করার নজির স্থাপন করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আলহাজ্ব সরদরা মো. শাহ আলম বলেন, “আমি বিগত সময়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। যদি সব দিক বিবেচনায় নিয়ে আমার অভিভাবক আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি মহোদয় আবার আমাকে চেয়ারম্যান পদের জন্য যোগ্য মনে করেন, তাহলে আমি সেই দায়িত্ব পালন করব।”
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি প্রচার হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনিরের নাম।
এব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যড, খান সাইফুল্লাহ পনির বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু। জেলার অনেক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা তার নির্দেশের অপেক্ষায় থাকি।
“আমার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি দলীয় সীদ্ধান্তের ওপর নির্ভর কবরে। দল চাইলে আমি প্রার্থী হতে পারি।”