রবিবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সাড়ে ১১ বছর পর আজ ঝিনাইদহ পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে চলছে ভোট
সাড়ে ১১ বছর পর আজ ঝিনাইদহ পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে চলছে ভোট
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: আজ রবিবার ১১ সেপ্টম্বরট ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ১১ বছর পর চলতি বছরের গত ১৫ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর উপর হামলার অভিযোগে নৌকা প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ আইনী জটিলতা কাটিয়ে শেষে উচ্চ আদালত দ্রুত নির্বাচন করার নির্দেশ দিলে নির্বাচন কমিশন ১১ সেপ্টম্বর ভোট গ্রহনের দিন ধার্য্য করে। নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী মেয়রপদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এরা হলেন নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেক, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল (নারিকেল গাছ), মিজানুর রহমান মাসুম (মোবাইল প্রতিক) ও ইশা আন্দোলনের মাওলানা সিরাজুল ইসলাম হাত পাখা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। চার মেয়র প্রার্থীর তিনজনই আওয়ামী পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। এদিকে নির্বাচন উপলক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তা। র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ইভিএমে সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহনের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে একজন করে নির্বাচন অফিসার। ভোটের দিন ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট গোটা পৌর এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ৯ সেপ্টম্বর মধ্য রাত থেকেই নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি’র সদস্যরা পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় টহল দিচ্ছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমানকে সন্ধ্যার পর অভিযান পরিচালনা করতে গেখে গেছে। সারা শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের সকল ধরণের প্রচারনা বন্ধ থাকলেও রাতের আঁধারে মানুষের আনোগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রার্থীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে পাড়া মহল্লায় প্রবেশ করছে এমন সব তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮২ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২ হাজার ২৪৯ জন। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭টি কেন্দ্র্র ও ২৬৫টি বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ১৮ জন নির্বাহী ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবেন। আর ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও ৩’শ ৫৫ জন পুলিশ ও ৮’শ ১ জন আনসার নিয়োজিত থাকবে। জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস ছালেক আরো জানান ভোট শান্তিপুর্ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কেউ কোন ঝামেলা করার চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল সর্বশেষ ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সীমানা নির্ধারনি মামলায় বছরের পর বছর আটকে যায় পৌরসভার নির্বাচন। দীর্ঘদিন নির্বাচন স্থগিত থাকার কারণে পৌরসেবার মান কমে আসে। নাগরিকরা ঠকমতো সেবা পায় না। নেই কাজের জবাবদিহীতা। চেক জালিয়াতি করে তুলে নেওয়া হয় পৌর ফান্ডের লাখ লাখ টাকা। জালিয়াত চক্রের প্রধানদের সনাক্ত করা গেলেও জড়িতদের এখনো কোন বিচার হয়নি। রাস্তাঘাটের বেহালদশার পাশাপাশি ময়লা, আবর্জনা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন নাগরিকদের জন্য খুবই গ্রহনযোগ্য আশার আলো সঞ্চা করেছে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন।
কমিটিতে স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের বিধিবহির্ভুত ভাবে সদস্য করা হলেও প্রকৃত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা সদস্য হতে পারেনি
ঝিনাইদহ :: কলেজে পুড়য়া ছাত্রীকে স্কুলে ভর্তি দেখিয়ে তার পিতাকে অভিভাবক সদস্য বানানো হয়েছে। এমন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আর এই জালিয়াতি, দুর্নিতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পায়তারা করছেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ওই কমিটিতে স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের বিধিবহির্ভুত ভাবে সদস্য করা হলেও প্রকৃত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা সদস্য হতে পারেনি। ফলে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত ও নির্বাচনের পূনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। শনিবার বিকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, অভিভাবক সদস্য শামিম হোসেন। এসময় ইমদাদুল হক, মাহমুদ আলী, আজব আলী, মিষ্টার, আলমগীর হোসেনসহ অন্যান্য অভিভাবক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আফরিন জাহান লিজা নামের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থীকে কারিগরী শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি দেখিয়ে তার পিতা অহিদুল ইসলামকে ভোটার তালিকায় নাম অন্তভুক্ত করেছেন। এছাড়া হরিণাকুন্ডু সালেহা বেগম ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী অনন্যা খাতুনকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি দেখিয়ে তার পিতা রবজেল হোসেনকে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। অথচ দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া ও শান্তা খাতুনের অভিভাবককে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে অভিভাবক জাভেদ ইকবাল বাদী হয়ে বিজ্ঞ সহকারী জজ হরিণাকুন্ডু আদালতে দেঃ ২০৯/২২ মামলা দায়ের করেন। মামলায় এডহক কমিটির সভাপতি হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক এবং অহিদুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তিন কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন। এবিষয়ে খলিশাকুন্ডু গ্রামের নজরুল ইসলামও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের কাছে ফোন করা হলে তার মুঠোফানটি বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হওয়ায় আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহনের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, এখনও মামলার কপি হাতে পায়নি তবে মামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। আদালতে এবিষয়ে জবাব দেয়া হবে বলে তিনি জানান। মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা সম্ভব হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনী সামগ্রী
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনী সামগ্রী। শনিবার দুপুরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের হাতে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী উপকরণ বুঝে দেওয়া হয়। রোববার সকাল থেকে পৌরসভার ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দীর্ঘ ১১ বছর পর মামলা জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার ভোটগ্রহণ হবে কাল। পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের ৪৭ কেন্দ্রের ২’শ ৬৫ টি কক্ষে ইভিএম’র মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনে ৮২ হাজার ৬’শ ৯৫ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ১৮ জন নির্বাহী ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবেন। আর ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও ৩’শ ৫৫ জন পুলিশ ও ৮’শ ১ জন আনসার নিয়োজিত থাকবে।
বিয়ের প্রলোভনে বিধবা অন্তসত্তাকে লাথি মেরে সন্তান নষ্ট করলো যুবক : আদালতে মামলা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের নাটাবাড়িয়া গ্রামে এক বিধবাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক অতপর অন্তসত্তা হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই বিধবা অন্তসত্তা হওয়ার পর বিয়ের দাবী করলে পেটে লাথি মেরে তার গর্ভের ভ্রন নষ্ট করে দিয়েছে লম্পট ওই যুবক। এ ঘটনায় ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত ঘটনাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, হলিধানী ইউনিয়নের নাটাবাড়িয়া গ্রামের রুজদার মন্ডলের ছেলে বিপ্লব গ্রামের এক বিধবা নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। ওই নারী বিয়ের দাবীতে বিপ্রবের বাড়িতে গেলে বিপ্লব পেটে লাথি মেরে এক মাস ১৭ দিনের ভ্রন হত্যা করে। এঘটনায় ওই নারী ঝিনাইদহ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন স্পেশাল ট্রাইবুলানে অভিযোগ করেন। বিধবার নারীর অভিযোগ, ১৮ বছর আগে তার স্বামী মারা য়ায়। স্বামীর মৃত্যুর পর এক কন্যাকে নিয়ে পিতার বাড়ি নাটাবাড়িয়া গ্রামে তিনি বসবাস করতেন। মেয়ে বড় মহওয়ায় তাকেও অন্যত্র বিয়ে দিয়েছে। বাড়িতে একা থাকার সুযোগে বিপ্লব বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন বিধবা ওই নারীর সঙ্গে মেলামেশা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এদিকে বিপ্লব বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সম্প্রতি গোপনে হলিধানী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিয়ে করে। খবর শুনে বিধবা ওই নারী বিয়ের দাবীতে বিপ্লবের বাড়িতে গেলে তাকে চড় থাপ্পড়ে পাশাপাশি তলপেটে লাথি মারে। ফলে গত ৭ আগস্ট তার গর্ভপাত ঘটে। স্থানীয় জনপ্রতিধিরা বিচার না করায় ঝিনাইদহের আদালতে তিনি মামলা করেন, যার মামলা নং এনটিসিপি ২৭৬/২২। তবে অভিযুক্ত বিপ্লব জানান, ওই নারীর সঙ্গে প্রেম বা কোনো সম্পর্ক তার ছিল না। সব মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্র। এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আশরাফুল আলম জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা দাখিল হয়েছে। আদালত তদন্তভার ঝিনাইদহ পিবিআইকে দিয়েছেন।