বুধবার ● ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » শ্রীমঙ্গল থেকে চুরি হওয়া বাচ্চা মিলল ঝিনাইদহে
শ্রীমঙ্গল থেকে চুরি হওয়া বাচ্চা মিলল ঝিনাইদহে
ঝিনাইদহ :: কোহিনূর বেগম (২২), পেশায় ভিক্ষুক। প্রতিদিন শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন ও আশপাশের এলাকায় ভিক্ষা করে বেড়ান। তার সঙ্গে গত ৯ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে স্টেশনে পরিচয় হয় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার শাহপুর ঘিঘাটি এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে শিমুল হোসেন (২৫) ও একই এলাকার মৃত আবু কালামের মেয়ে ইয়াসমিন বেগমের (২৪)। তারা কোহিনূরকে খাবার খাইয়ে ও তাকে বোন বানিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কোহিনূর তার তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে পরদিন (গত ১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ভিক্ষা করছিলেন শহরের কালীঘাট রোডের কড়ইগাছ তলার রিকশাস্ট্যান্ড এলাকার আশপাশের দোকানগুলোতে। এমন সময় কোহিনূরের কোলের শিশু বাচ্চাকে আদর করার কথা বলে ওই দুই আগন্তুক বাচ্চাকে তাদের কোলে নেয়। বাচ্চাটিকে কিছুক্ষণ আদর করার পর দুই আগন্তুক হঠাৎ দৌড় দিয়ে শিশু বাচ্চাটিকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এদিকে কোহিনূর ও তার স্বামী শহীদ আলী শিশু বাচ্চাকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে যান। পরে দৈনিক করতোয়া শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি নূর মোহাম্মদ সাগর ও যুগান্তরের এই প্রতিবেদক সৈয়দ সালাউদ্দিন এ ঘটনা জানতে পেরে অনেক খোঁজাখুঁজি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের পর দুই শিশু অপহরণকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এদিকে সৌভাগ্যক্রমে পরদিন দুই শিশু আপহরণকারী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে সন্দেহজনক ঘোরাফেরার কারণে আটক হয়। এ সময় সংবাদকর্মী সাগরের ফেসবুকে লাইভ ও অপহরণকারী শিমুলের মোবাইল ফোনে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে যায়। পরে শ্রীমঙ্গল থানায় কোহিনূরের স্বামী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে অফিসার ইনচার্জ শামীম অর রশীদ তালুকদার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলাউদ্দিন, সঙ্গীয় ফোর্স, কোহিনূর ও তার স্বামীকে কালীগঞ্জ থানায় পাঠান। সেখান থেকে শিশু বাচ্চাকে উদ্ধার করে আসামিদের গ্রেফতার করে শ্রীমঙ্গল থানায় মঙ্গলবার সকালে নিয়ে আসেন। কোহিনূর নরসিংদী জেলার বেলাবো থানার ধুকুন্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গল কালীঘাট রোডের শাহেনা আক্তারের বস্তিতে থাকেন। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম অর রশীদ তালুকদার বলেন, আসামিরা শিশু পাচারকারী দলের সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সঙ্গে কারা কারা জড়িত রয়েছে তা বের করা হবে বলে তিনি জানান।
ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ৯৪তম আন্দোলন : কথা রাখেনি কেউ
ঝিনাইদহ :: ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি প্রদানের দাবিতে আন্দোলনের ৯৪তম দিনে আবারো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া এলাকায় ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহা-সড়ক অবরোধ করে তারা। এতে বন্ধ হয়ে যায় ওই সড়কে সকল যান চলাচল। সড়ক অবরোধের কারনে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। খবর পেয়ে ছুুটে যান প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। সজিব নামের এক শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ডিভিএম ডিগ্রী দেওয়ার কথা থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিএসসি ভেট সাইন্স এন্ড এএইচএস ডিগ্রী প্রদান করার চেষ্টা করছে। তাতে শিক্ষার্থীদের আগামীতে চাকরির ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই তারা ডিভিএম ডিগ্রীর দাবিতে মাসের পর মাস আন্দোল করছেন। গত ১২ জুন থেকে তারা ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন করলেও মন্ত্রনালয়ের কোন টনক নড়েনি। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ১৪ জুন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা: শুখেন্দু শেখর গায়েনকে ২২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরপরও তাদের বাদি মানা হয়নি। ফলে আবারো নতুন করে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ আতাউর রহমান ভুইয়া বলেন, আমরা যারা শিক্ষক আছি তারা সবাই প্রাণী সম্পদ বিভাগের অধীন আছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে। তারা সরাসরি বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হতে চায়। মন্ত্রনালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি মুরাদ বিশ^াস ও জিএস সজিব হাসান জানান, মাসের পর মাস আমরা আন্দোলন করছি, কিন্তু মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের কোন দৃষ্টি আকর্ষন করাতে পারেনি। রাস্তা অবরোধ করলে প্রশাসনের লোকজন আসেন, তারা আশ^াস দিয়ে চলে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভর্তির সময় বলা হয় ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি দেওয়া হবে। কিন্তু পরে বিএসসি ভেট সাইন্স এন্ড এএইচএস ডিগ্রী প্রদানের কথা বলা হচ্ছে। এই ডিগ্রী প্রদান করা হলে আমাদের শিক্ষা জীবন বিপন্ন হবে। কোথাও চাকরী হবে না।