শনিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কালীগঞ্জে একসাথে ৩ সন্তানের জন্মদান
কালীগঞ্জে একসাথে ৩ সন্তানের জন্মদান
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক দম্পতি। শুক্রবার দুপুরে সিজারের মাধ্যমে তিনটি সন্তানের জন্ম দেন আরমান-সীমা দম্পতি। এরমধ্যে একটি ছেলে ও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে তিনটি সন্তান জন্মের পর দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাবা আরমান হোসেন ও তার পরিবার। তারা উপজেলার বাদেডিহি এলাকার বেঁদেপল্লীর বাসিন্দা। স্বজনেরা জানান, উপজেলার বারবাজার এলাকার নিউ গরীবশাহ ক্লিনিকে শুক্রবার সকালে প্রসব বেদনা উঠলে সীমা খাতুনকে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসক তার রিপোর্ট দেখে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরের দিকে পরিবারের সম্মতিতে সিজার করেন ডা. সাফিয়া আফরিন। সফল অপারেশনের মাধ্যমে একে এক তিনটি সন্তানের জন্ম হয়। তারা বেঁদে সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে তিন সন্তান ও তার স্ত্রীর চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আরমান হোসেন। তার কোন সামর্থ্য নেই। তিনি সন্তানদের দুধ পর্যন্ত কিনতে পারছেন না। সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন। তার তিন সন্তানের এখনো নাম রাখা হয়নি। চিকিৎসক সাফিয়া আফরিন জানান, শুক্রবার দুপুরে সিজারের মাধ্যমে আরমান-সীমা দম্পতিরঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়েছে। তিন নবজাতক ও তাদের মা বর্তমানে সুস্থ আছে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের যশোর শিশু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
ড্রাইভারের লাশ উদ্ধার, অভিযোগ উঠেছে পিটিয়ে হত্যার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে বাবু হোসেন(২৬) নামে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত ড্রাইভারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ঘোড়ষাল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ লিল্টনের খানকা ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও ফেসবুকে গুঞ্জন উঠেছে, অজ্ঞাত কারনে গত শুক্রবার চেয়ারম্যানের চাকরি ছেড়ে গাড়ির চাবি রেখে চলে যায় ড্রাইভার বাবু। এরপর চেয়ারম্যানের লোকজন উপজেলার মহেশপুর শশুর বাড়ি থেকে তাকে খুঁজে বের করে। বৃহস্পতিবার রাতে ড্রাইভারকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। এতে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কৌশল করে তার লাশ চেয়ারম্যানের খানকা ঘরে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ লিল্টন জানান, সম্পর্কে ড্রাইভার আমার ভাগ্নে হয়। তবে কি কারনে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই। সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান,লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে আত্মহত্যা না হত্যা। তবে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
মৎস্য বিভাগের মহা দুর্নীতিবাজ উপ-সহকারী প্রকৌশলী এখন টাকার কুমির
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহসহ চার জেলার দায়িত্বে থাকা মৎস্য বিভাগের মহা দুর্নীতিবাজ উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদের বিরুদ্ধে ঠিকাদারী কাজ দেওয়ার নাম করে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পুকুর খনন বাবদ অনেক এক্সকেভেটর (ভেকু) মালিক তার কাছে টাকা পাবেন। ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য বিভাগ তার সীমাহীন দুর্নীতির কারণে গত দুই বছর কোন প্রকল্প গ্রহন করেনি। এদিকে টাকা অদায়ে ব্যর্থ হয়ে ঝিনাইদহের বিভিন্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের একাধিক মামলা করেছেন ঠিকাদাররা। ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদের দায়িত্ব ছিল ঝিনাইদ জেলার ৬ উপজেলায় স্কিম করা ও গৃহীত প্রকল্পসমুহ তদারকী করা। কিন্তু তিনি তার সরকারী দায়িত্বের বাইরে গিয়ে বেপরোয়া ভাবে ঠিকাদারী কাজে জড়িয়ে পড়েন। পুকুর খননের প্রল্পগুলো ঠিকাদারের কাছ থেকে নিয়ে তিনিই করে গেছেন। মৎস্য সেক্টরে তার এই একচ্ছত্র দৌরাত্ম্যে দেখে চার জেলার ঠিকাদাররা কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন কাজ পাইয়ে দেবার জন্য। শেষ মুহুর্তে তিনি এই টাকা পকেটস্থ করে নাটোর জেলায় বদলী হয়েছেন। ঝিনাইদহ ছাড়াও তিনি কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কুষ্টিয়ায় তার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে একাধিক পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে খবর প্রচারিত হলেও বদলী ছাড়া তার কোন শাস্তি হয়নি। ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেন ২০২১ সালের ১৯ আগষ্ট পাওয়ানা টাকা ফেরৎ পাবার জন্য আবেদন করেন। সদর উপজেলার কাজলী বিল খননের প্রকল্প করে দেওয়ার নাম করে কবির হোসেনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সেই টাকা এখনো দেননি বলে কবির হোসেন এ প্রতিনিধির কাছে স্বীকার করেন। এদিকে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রয়ারি অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য দপ্তরের সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রকল্প পরিচালক ও মহাপরিচারকের কাছে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়। ঠিকাদার ও এক্সকেভেটর (ভেকু) মালিকদের অভিযোগ শুনতে শুনতে নাকাল ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য অফিস ২০২২ সালের ৯ মার্চ উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদকে এই জেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদানের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিলেও তাৎক্ষনিক ভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। হরিণাকুন্ডুর ইমারত হোসেন নামে এক ঠিকাদার জানান, তিনি উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদের কাছে ঠিকাদারী কাজ পাবার জন্য ৬ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তিনি এক লাখ টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। বাকি টাকার জন্য মাসের পর মাস ঘুরছেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ঠিকাদার আব্দুল গনি জানান, তিনি ৯ লাখ টাকা দিয়েছিলেন ঠিকাদারী কাজ পাবার জন্য। কিন্তু কাজও পাননি আবার টাকাও দেননি। ফলে টাকা উদ্ধার করতে না পেরে আদালতে দুইটি চেকের মামলা করেছেন, যার নং ১২৮/২২ ও ১৩৩/২২। ঝিনাইদহ শহরের লিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক আশরাফুল আলম মফিজ জানান, তিনিও ঠিকাদারী কাজ পাবার আশায় ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদ তাকে রুপালী ব্যাংকের দুইটি চেক দিয়েছিলেন, কিন্তু টাকা তুলতে পারেননি। তিনি চেক ডিজঅনারের মামলা করবেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার তালহা এন্টারপ্রইজের মালিকসহ ঝিনাইদহের এক ক্ষমতাধর সংসদ সদস্যের ভাতিজাও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদের কাছে টাকা দিয়ে ধরা খেয়েছেন। এছাড়া অনেক এক্সকেভেটর (ভেকু) মালিক টাকার জন্য সোহেল আহম্মেদের পেছেনে ঘুরছেন। ঠিকাদারকের একটি সুত্র জানায়, ঝিনাইদহসহ চার জেলা থেকে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদ। সৎস্য বিভাগের মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালকের আশ্রয় পশ্রয়ে সোহেল আহম্মেদ বেপরোয়া ভাবে অপকর্ম চালিয়ে গেলেও তার শাস্তি স্বরুপ চার জেলার দায়িত্ব থেকে নাটোর জেলায় বদলী করা হয়েছে। শাস্তির পরিবর্তে সাধারণ এই বদলীর ঘটনায় মৎস্য সেক্টরে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ধুমায়িত হচ্ছে। ঝিনাইদহের সাবেক জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও বর্তমান যশোরের বিল বাওড় প্রকল্পের পরিচালক আলফাজ উদ্দীন শেখ জানান, সোহেলের বিষয়ে একাধিক চিঠি সে সময় মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো হলেও তড়িৎ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। তবে কিছুদিন আগে তাকে নাটোর জেলায় বদলী করা হয়েছে বলে শুনেছি। ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা গ্রহনের বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহম্মেদ বলেন, ইতিমধ্যে অনেকের টাকা ফেরৎ দিয়েছি। যারা চেক ডিজঅনারের মামলা করেছেন তাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমি সময় নিয়েছি। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় থাকতে আমার বিরুদ্ধে বহু লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু আমার কিছুই হয়নি, ডিপার্টমেন্ট আমার পক্ষে আছে।