বৃহস্পতিবার ● ৩১ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা
পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা
তৌহিদ আক্তার পান্না, ঈশ্বরদী :: ঈশ্বরদীর কয়েকটি রাইচ মিলে মোটা চাউল ছেঁটে চিকন ও পালিশ করার পর চটকদার পলিথিন-চটের বস্তায় ভরে নামি-দামি চাউল বলে বাজার জাত করা হচ্ছে ৷ দীর্ঘদিন থেকে অব্যাহতভাবে এসব মোটা ও নিম্নমানের চাউল বেশী দামের চাউল বলে বাজার জাত করায় ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হয়ে আসছেন ৷ বিষয়টি জানার পরও সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না ৷ ফলে সাধারণ ক্রেতারা একদিকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ৷ অন্যদিকে নানা প্রকার পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে নানা ভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ৷ ভুক্তভোগী ক্রেতা, চিকিত্সক, বিজ্ঞানী ও চাউল ব্যবসায়ীদের দে’য়া অভিযোগ সুত্রে এসব তথ্য জানাগেছে ৷
সূত্রমতে, যোগাযোগসহ নানা কারণে দেশের মধ্যে ঈশ্বরদী অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ এলাকা ৷ এখানে সহজেই উত্তরাঞ্চলের বৃহত্ চাউল মোকাম গড়ে উঠেছে ৷ এখানে ছোট বড় প্রায় সাত শতাধিক ধান চাতালও গড়ে উঠেছে ৷ একারণে এখানে প্রায় বিশ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে ৷ গত বিশ বছরে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা প্রায় চৌদ্দশত ট্রাকের মালিক হয়েছেন ৷ এসমস্ত নানা কারণে সরকার ও বিভিন্ন ব্যাংক ব্যবসায়ীদের লোন দে’য়ায় বেশ কিছু ব্যবসায়ী চোট-বড় অটো রাইচ মিলের মালিক হয়েছেন ৷ অটো রাইচ মিলের ব্যবসা ভালো হওয়ায় হাস্কিং মিল মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৷ ঈশ্বরদীসহ দেশে বর্তমানে প্রায় তেত্রিশ হাজার হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে ৷ অটোরাইচ মিলে ভালো ব্যবসার সুযোগে কতিপয় মিলমালিক অবৈধভাবে মোটা চাউল ছেঁটে চিকন করার প্রকল্প হাতে নেয় ৷ তারা দীর্ঘদিন থেকে নিম্নমানের ইরি ধানের মোটা চাউল ছেঁটে চিকন করে বাঁসমতি, কাটারীভোগসহ নামি-দামী চাউলের সাথে মিসিয়ে বাজার জাত করে আসছে ৷ ঐসব অসাধু ব্যবসায়ীরা আর্থিভাবে লাভবান হলেও ক্রেতারা ধীর্ঘদিন থেকে প্রতারিত হয়ে আসছেন ৷ আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি তারা নানা প্রকার পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রানত্ম হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ৷ প্রতিদিন ঈশ্বরদী অঞ্চলে ১শ/১৫০’শ টন চাউল উত্পাদিত হয় ৷ এসব চাউলের সাথে যোগ করা হয় বিদেশী চাউল ৷ আবার বিভিন্ন জেলা থেকেও চাউল এখানে আনা হয় ৷ এসব সকল প্রকার চাউল নানা কায়দায় বাজার জাত করা হয় ৷ এরমধ্যে থেকে অসাধু ভ্যবসায়ীরা মোটা চাউল নির্দিষ্ট কয়েকটি অটোরাইচ মিলে ছেঁটে চিকন ও দামি ব্রান্ডের চাউলের সাথে মিশিয়ে স্থানীয় বাজার ও ডাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে ৷ এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাসোয়ারা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ৷ ভুক্তভোগী ক্রেতা, চিকিত্সক, বিজ্ঞানী ও রুচিশীল ব্যবসায়ীদের মতে, চাউল ভেজালকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহিৃত করে মানবতা বিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ঐসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি জরুরিভাবে সুচিকিত্সা করা প্রয়োজন ৷