শুক্রবার ● ৪ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা শাখার ১৭ সদস্যের নতুন কমিটি
পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা শাখার ১৭ সদস্যের নতুন কমিটি
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিতালি চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা উপজেলা শাখার ৩য় কাউন্সিল ও সম্মেলন আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর ২০২২) সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলে ১৭ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
‘পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন বন্ধ কর’ এই শ্লোগানে এবং ‘রাবার বাগান-পর্যটন-সীমান্ত সড়কের নামে ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে নারী সমাজ জেগে ওঠো’ এই আহ্বানে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশেনের ১ম পর্বে সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কনিকা চাকমা।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক আশা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা নেত্রী রূপসি চাকমা ও পানছড়ি উপজেলা কমিটির সদস্য মিনতি চাকমা। সভা সঞ্চালনা করেন মিতালি চাকমা।
সভা শুরুর আগে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিল সভায় ইউপিডিএফ নেতা মিলটন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য মা-বোনদের এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের অর্ধেক অংশ নারী। তাই নারীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজের নারীরা তাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হলে অধিকার আদায়ের আন্দোলন নিশ্চয় আরো অগ্রগতি পাবে। তিনি সাজেক, দীঘিনালা, ঘিলাছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ভূমি রক্ষা ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারীদের আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন এবং আগামীতে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সফল করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য তিনি নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মা-বোনেরা নানা নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠি নারী নির্যাতনকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও মদদ দিয়ে থাকে। ফলে এখানকার নারীদের সবসময় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই থাকতে হয়।
তিনি আরো বলেন, এদেশের শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত নিপীড়ন জারি রেখেছে। তারই অংশ হিসেবে এখানে প্রতিনিয়ত অন্যায় দমন-পীড়ন, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন চলছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে নারীদের সংগঠিত হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।
কণিকা দেওয়ান বলেন, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদেরকে সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে হবে। অধিকার আদায়ের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়া বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে। নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। জাতির অস্তিত্ব, নিজেদের সম্ভ্রম ও ভূমি রক্ষায় মা-বোনদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে নারীরা সমাজের নানা ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছে। পাহাড়ি নারীদেরও নেতৃত্বদানে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে নারীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং লড়াই সংগ্রামে ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি নারী সংঘের সাথে সামিল হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের আন্দোলন জোরদার করার জন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় পর্বে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে কণিকা চাকমাকে সভাপতি, মিতালি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও জয়শ্রী চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।