বুধবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » প্রবাসে থাকা অবস্থায় সরকারি চাকরি পেলেন হাসান
প্রবাসে থাকা অবস্থায় সরকারি চাকরি পেলেন হাসান
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: দীর্ঘ সাত বছর কুয়েতে থাকা অবস্থায় চিটিং ও জালিয়াতির মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার’ চাকরি পেলেন কুষ্টিয়া পশ্চিম আব্দুলপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের দায়খালি পাড়ার আতিয়ার রহমান ও আছিয়া খাতুন বড় ছেলে মেহেদী হাসান মেহেদী হাসান মিঠু। বিষয়টি নিয়ে উক্ত এলাকায় জল্পনা কল্পনায় মেতে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলেন, মিঠু টানা সাত বছর বিদেশে অবস্থান করছেন একটি দিনের জন্যও তিনি বাংলাদেশে আসেন নাই, অথচ তিনি সরকারি চাকরি কিভাবে পেলেন এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। এদিকে তার নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি রহিদুল মেম্বার প্রতিবেদক কে বলেন, মেহেদী হাসান মিঠু দীর্ঘ সাত বছর কুয়েতে চাকরি করছে। কুয়েতে থাকা অবস্থায় সরকারি চাকরি কিভাবে পেল আমি এটাও বুঝে পাচ্ছি না। নিশ্চয়ই কোন উপরমহলে যোগাযোগ করে তিনি এই কাজটি করেছেন। তবে তার ছোট ভাই বায়েজিদ ইসলাম লিঠুর সহযোগিতায় এই কাজটি করেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। তবে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে মেহেদী হাসান বিদেশ থেকে বাড়ি এসেছেন বলে জানতে পেরেছি। তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, উক্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (নন ক্যাডার, গ্ৰেড -১০) পদে সার্কুলার হয় ৪ জুন ২০২০ তারিখে। ১০/১২/২০২১ তারিখে এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, উক্ত পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হয় ০৭/০৩/২০২২ তারিখে। ২২/০৫/২০২২ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে ২০/১১/২২ তারিখে তারিখে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আগারগাঁও শেরেবাংলা নগর ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের ৮০.০০.০০০০.৩০১ (গোপনীয়).১৭.০০১.২০২২-৮৯ স্মারকে ২৯/১১/২০২২ তারিখে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। উক্ত ফলাফলে তিনি ৩৫ নম্বর সিরিয়ালে আছেন যার রোল নম্বর (বিপিএসি) ২০১৯৬৪। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের দুদিন পরেই তিনি দেশে ফিরেছেন। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই অবস্থান করছেন পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ডিএসবি শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, মেহেদী হাসান নামে একটি তদন্ত এসেছে আমাদের হাতে আমরা এখনো তদন্ত করতে যাই নাই। মেহেদী হাসান তিনি তার বিদেশ থাকার বিষয়টি সম্পন্ন গোপন করতে চাইছেন। কিন্তু তার পাসপোর্ট যাচাই-বাছাই করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। এ বিষয়ে মেহেদী হাসানের বাড়িতে গেলে তার মা বাইরে বেরিয়ে এসে বলেন, আমার ছেলে এতদিন ঢাকায় ছিলেন, এইতো কিছুক্ষণ আগে লক্ষ্মীপুর বাস স্ট্যান্ডে গেলেন। এলাকাবাসী বলেন, যদি তিনি ঢাকায় থাকতেন তাহলে প্রতি ঈদে অন্তত গ্রামের বাড়িতে আসতো। তাকেতো সাত বছর আমরা দেখি নাই, সে তো বিদেশে ছিল এইতো গত বিশ দিন হল তিনি গ্রামে এসেছেন। এ বিষয়ে মেহেদী হাসান এর পিতা আতিয়ার রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার ছেলে মেহেদী হাসান এর সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। তার চাকরি হয়েছে সেটাও আমি জানি না। মেহেদী হাসান এখন কোথায় আছে তিনি সেটাও জানেন না। তার পাসপোর্ট এর বিষয়ে জানতে চাইলে তার কোন কাগজ পত্রও নেই বলে দাবি করেন মেহেদীর পিতা। অন্যদিকে মেহেদী হাসান নিঠুর মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। বর্তমানে তিনি নিজ বাসা বাড়িতে লুকায়ে আছে বলে পাড়া-প্রতিবেশীদের দাবি। এলাকাবাসী এটাও বলেন, যোগদান করার জন্য বিদেশ থেকে দেশে চলে এসেছে, পরিস্থিতি ঘোলাটের দিকে চলে গেলে তিনি পুনরায় কুয়েতে চলে যাবেন।