বৃহস্পতিবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » শেষযাত্রায়ও সামশুল আলমের মৃতদেহ উঠানো হয়নি বাড়িতে
শেষযাত্রায়ও সামশুল আলমের মৃতদেহ উঠানো হয়নি বাড়িতে
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: আপন দুই ছেলে জোর করে সম্পত্তি লিখে নিয়ে রাউজানের কোতোয়ালী ঘোনা বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ক্যান্সার আক্রান্ত সেই বৃদ্ধ বাবা মোহাম্মদ সামশুল আলম (৮২) অবশেষে মারা গেলেন তাকে আশ্রয়দাতা কন্যা সন্তানের শাশুর বাড়িতে। গত ২৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন আশ্রয়দাতা মেয়ের শাশুর বাড়ি হাটহাজারীতে (ইন্না ইলাহি ওয়াইন্না ইলাহি রাজেউন)।
গতকাল ২৫ জানুয়ারী বুধবার সামশুল আলমের পক্ষ নিয়ে চিকিৎসা খরচ চালিয়ে আসা ছোট পুত্র ও তার স্বজনরা হাটহাজারী থেকে এ্যাম্বুলেন্সে লাশ এনে রাউজানের গহিরার কোতোয়ালী ঘোনায় নিজ বাড়ির ঈদগাহে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। শেষযাত্রায়ও তার মৃত দেহ উঠানো হয়নি বাড়িতে।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৪ এপ্রিল মৃত ব্যক্তির তিন সন্তানের মধ্যে এক পুত্র মোহাম্মদ সেলিম ও আরেক প্রবাসী পুত্র মোহাম্মদ বেদারের স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধ সামশুল আলমের কাছ থেকে জোর করে সম্পত্তি লিখে নিয়েছিলেন। এই নিয়ে তিনি এলাকারবাসীর কাছে নালিশ করে জোর করে নেয়া সম্পত্তি ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এই ঘটনায় বৃদ্ধের এক মেয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে হাটহাজারী এলাকায় শাশুর বাড়িতে নিয়ে এতদিন সেবা চিকিৎসা দিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ সেখানে তার মৃত্যু হয়। অসহায় অমানবিক সামশুল আলমকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রসাশন ও রাউজানের সাংসদের দৃষ্টিগোচর হয়। তখন মানবিক সাহার্য্য নিয়ে বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িছিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংসদপুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী। এছাড়া সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী স্থানীয় চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলের পিতার সাথে পুত্রদের সমঝোতা করে মানবিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে। কিন্তু সামাজিক বিচার না মেনে পুত্র ও পুত্রবধূরা পিতাকে ঘরে তোলে নাই। অপরদিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ক্যান্সার আক্রান্ত সেই বৃদ্ধ বাবা মোহাম্মদ সামশুল আলমের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন গহিরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। তিনি এক শোকবার্তায় বলেন, অর্থ সম্পাদ নিয়ে কোন বাবা যেন সন্তানের অযতœ অবহেলার শিকার না হয়, সেইদিকে বিশেষ নজর দেয়া দরকার। আমাদের উচিৎ প্রতিটি পরিবারে পিতা মাথার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য সর্ম্পকে শিশুকাল থেকে শিক্ষা দেওয়া। তিনি মরহুম সামশুল আলমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
রাউজানে গরম তেলে পড়ে শিশুর মৃত্যু
রাউজান :: চট্টগ্রামের রাউজানে নাস্তা তৈরির গরম তেলে পড়ে আবু সাঈদ আদিল নামে সাড়ে ৩ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ২৫ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শিশু আদিল উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা জহিরের বাড়ির ওমান প্রবাসী আবু তৈয়বের ছেলে। নিহতের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ( ২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় নিহত শিশুর মা আফসানা নুর নাস্তা তৈরির জন্য চুল্লিতে কড়াই দিয়ে তেল দেন। দৌঁড়ে তার মায়ের কোলে উঠতে গিয়ে গরম তেলের কড়াইতে পড়লে ঝলসে যায়। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করান। সেখানে তার মৃত্যু হয়। নিহত আদিলের দাদি আছিয়া বেগম ও জেঠা মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, গরম তেলে পড়ে আদিলের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। রাউজান থানার উপপরিদর্শক মো. জহির উদ্দিন বলেন, গরম তেলে দগ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। পরিবারের সদস্যদের কারো কোনো অভিযোগ নেই, ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়।