সোমবার ● ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » কৃষি » ধানের রাজ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টার আবাদ
ধানের রাজ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টার আবাদ
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: ধানের রাজ্য হিসাবে খ্যাত দেশের উত্তর জনপদের জেলা নওগাঁর আত্রাইয়ে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টার বাম্পার ফলনে আশাবাদী কৃষকরা। অনুকুল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন পাবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে চার হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তার চেয়ে অধিক জমিতে এবার ভ’ট্টার চাষ করা হয়েছে। এবার ভুট্টা চাষে উপজেলার কৃষকরা বেশি ঝুঁকে পড়ছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম অথচ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
উপজেলার জাতোপাড়া গ্রামের কৃষক মুনির হোসেন বলেন, এলাকার যেসব জমিতে আগে বোরোচাষ করা হতো সেই জমি গুলোতেই আমরা এবার ভুট্টা চাষ করছি। বোরোচাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম দামও অনেক বেশি থাকে। এ জন্য আমরা ভুট্টা চাষে এবার ঝুঁকে পড়েছি।
উপজেলার হাতিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকা আলু চাষের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিখ্যাত। উপজেলার সিংহভাগ আলু আমাদের এলাকায় উৎপন্ন হয়ে থাকে। মৌসুমের শেষ দিকে আলুর দাম বাড়লেও এর মুনাফা কৃষকরা পায়নি। মুনাফা পেয়েছে মজুতদাররা। তাই এবার ভুট্টা চাষ করছি। আশা করি ফলনও বাম্পার হবে। তবে ন্যায্য দাম পেলে কষ্ট সার্থক হবে।
উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের শলিয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কেএম মাহাবুব বলেন, এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় ভুট্টার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আশা করছি ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে এবং নিয়মিত কৃষকদের পর্যবেক্ষণ পরামর্শ দিয়ে আসছি। এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারেন এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের কাছে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ভুট্টাকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমান ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাউছার হোসেন জানান, সব ধরনের ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পায়। বিশেষ করে বীজ, সার ও তেল এর জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। এবার ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে এবং বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।