বুধবার ● ১ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে এক পরিবারের সকলেই প্রতিবন্ধী
বিশ্বনাথে এক পরিবারের সকলেই প্রতিবন্ধী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: আলোচিত এই প্রতিবন্ধী পরিবারের বাস সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের পাঠানেরগাঁও (তালুজগত) গ্রামে। ওই গ্রামেরই মৃত মন্টাই মিয়ার সন্তান প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোন। তাদের মধ্যে রুবিনা বেগম (৩০) শ্রবণ প্রতিবন্ধী, মিনারা বেগম (২৬) ও রুকশানা বেগম (২০) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং তাদের একমাত্র ভাই লিলু মিয়া (২৪) বহুবিধ প্রতিবন্ধী।
জানা গেছে, রুকশানা বেগমের জন্মের দুই বছর পর মারা যান হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র অভিভাবক মন্টাই মিয়া। এরপর তার স্ত্রী ফুলতেরা বেগম অভাব-অনটনের সংসারে হাল ধরতে অন্যের বাড়িতে শুরু করেন দিনমজুরের কাজ। একটা সময়ে বড় মেয়েকে বিয়েও দিয়ে দেন। বড় মেয়ের বিয়ের কয়েকমাস পরেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফুলতেরা বেগমও।
মন্টাই-ফুলতেরা দম্পতির মৃত্যুর পর প্রতিবেশীরা মিলে তাদের ২য় মেয়ে রুবিনা বেগমকে বিয়ে দেন। কিন্তু শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ায় এবং কথার মধ্যে জড়তা থাকায় তার সংসার বেশিদিন টেকেনি। ফিরে আসতে হয় পিত্রালয়ে। সংসার দেখাশোনার ভার পড়ে তার কাধে।
সরেজমিন প্রতিবন্ধী রুবিনা-লিলু মিয়াদের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পুরনো মরিচাপড়া টিনের বেষ্টনির জীর্ণ ঘরের বারান্দায় বসে চা-বিস্কিট খাচ্ছেন চার প্রতিবন্ধী ভাই-বোন। দুপুরের খাবার না খেয়ে চা-বিস্কিট খাওয়ার কারণ জানতে চাইলে অশ্রুসজল হয়ে পড়েন তারা। জানান, ‘ঘরে চাল-ডাল কিছুই না থাকায় দুপুরে ভাতের বদলে আমরা চা-বিস্কিট খাচ্ছি।’
কথায় হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মিনারা বেগমের সাথে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা নেই। বিয়ের পর থেকে বড় বোনও আর এখানে আসেন না। মূল ভিটায় থাকা মাটির ঘরটি অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। এখন আমরা তিনবোন আমাদের একমাত্র ভাইকে নিয়ে একটা ভাঙ্গাচোরা ঘরে দিনরাত কাটাচ্ছি।
রাত হলেই ভয় হয়। বৃষ্টির দিনে তো অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। আমরা তিন ভাই-বোন সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। কিন্তু ভাতার টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়।’
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুকশানা বেগম বলেন, ‘আপাততঃ আমাদের একটি পাকাঘর ও একটি টিউবওয়েল জরুরী। আমার বোন মিনারা বেগমকে অনেক কষ্টে পাশের বাড়ির টিউবওয়েল থেকে প্রতিদিন পানি নিয়ে আসতে হয়।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই পরিবারের যেই সদস্য এখনো ভাতা পান নাই, তাকেও ভাতার আওতায় নিয়ে আসা যায় কি না-আমি দেখছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, ‘আমি সমাজসেবা অফিসে কথা বলে ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করে দেব’।
ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন বিশ্বনাথের প্রথম পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান
বিশ্বনাথ :: ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌরসভার প্রথম মেয়র মুহিবুর রহমান। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে যুক্তরাজ্য থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বিশ্বনাথ পৌর ও উপজেলাবাসীর উদ্যোগে প্রদান করা সংবর্ধনায় সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হন মেয়র মুহিব।
সংবর্ধনা শেষে বিশাল মোটর শোভাযাত্রায় বিশ্বনাথ পৌর শহরে আসেন জননেতা মুহিবুর রহমান। এসময় তিনি পৌর শহরের নতুন বাজারস্থ নিজ বাসভবনের সামনে পৌরবাসীর ব্যানারে আয়োজিত পথসভায় সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন।
জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে পথসভায় সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, আপনারা (জনগণ) পাশে থাকলে বিশ্বনাথকে দূর্নীতি-দালাল মুক্ত করতে আমার চেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে। আর সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় বিশ্বনাথ পৌরসভা থা উপজেলা হবে একটি শান্তিপূর্ন ও সুন্দর আবাসস্থল।
যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রবাসীরাও চান বিশ্বনাথের মানুষ সুখে থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন। আর তারাও দেশে আসলে যে ক’দিন থাকেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করে যেতে পারেন, তাদেরকে যেনো কোন প্রকারের হয়রাণী বা প্রতারণার শিকার হতে না হয়।
মেয়র মুহিবুর রহমান আরোও বলেন, সংক্ষিপ্ত সফরকালে আমি যুক্তরাজ্যের প্রায় প্রতিটি শহরে গিয়ে প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। বিশ্বনাথের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য প্রবাসীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়াও পেয়েছি। যেমন বিশ্বনাথে একটি মহিলা ডিগ্রি কলেজ স্থাপনের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রতিশ্রæতি প্রদানসহ একটি স্টেডিয়াম নির্মাণে অনুদান প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন প্রবাসীরা।
এছাড়া পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন, পৌর পাঠাগার, প্রেস ক্লাব ভবন নির্মাণসহ নানান উন্নয়নে প্রবাসীরা বিশ্বনাথবাসীর পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধতা। আপনাদের (জনগণ) সার্বিক সহযোগীতা ছাড়া বিশ্বনাথের কাঙ্খিত উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা কোন ভাবেই সম্ভব হবে না।
পৌর শহরের নতুন বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রফিক হাসানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেএমজি এয়ার কার্গোর চেয়ারম্যান মনির আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফারুক মিয়া, চিকিৎসক ডাক্তার মাহমুদুল মজিদ শাহিন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম।
সংবর্ধনা ও পথসভায় উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১’র পরিচালক (বিশ্বনাথ উপজেলা) রমা কান্ত দে, বিশ্বনাথ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ সাবিনা ইয়াসমিন, প্যানেল মেয়র-৩ মোহাম্মদ সুমন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগম, লাকী বেগম, কাউন্সিলর জহুর আলী, রাজুক মিয়া রাজ্জাক, বারাম উদ্দিন, শামীম আহমদ, রোটারিয়ান সৈয়দ ইসলাম সেলিম, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ মেঘল, উপজেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি মারফত আলীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বনাথে চুরি করে পালানোর সময় গরুসহ চোর আটক
বিশ্বনাথ :: দিনদুপুরে গৃরস্থের গরু নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল চোর। পায়ে হেঁটে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে থানার সম্মুখে এসেই ঘটলো বিপত্তি। হাটে খোঁজতে আসা লোকজন গরু চিনতে পেরে চোরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পাকড়াও করেন। এ সময় থানার সম্মুখে দায়িত্বর পুলিশ গরুসহ গ্রেফতার করে চোরকে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় সিলেটের বিশ্বনাথ থানার সম্মুখে এ ঘটনাটি ঘটেছে। গ্রেফতার মো. নূর আলম ওরফে নূর হোসেন (২০) সুনামগঞ্জের দিরাই থানার মুকসেদপুর গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক এমরুল হোসেন হামীম নিজের সত্তর হাজার টাকা মূল্যের লাল রঙয়ের একটি গাভী আজ সকালে বাড়ির পার্শ¦বর্তী ধানি জমিতে ঘাস খাওয়ার জন্য বেঁধে রাখেন। এর কিছু সময় পরে ওইখানে আর গাভীটি পাওয়া যায়নি। সুযোগ বুঝে গাভীটি নিয়ে চম্পট দেয় নূর আলম।
সে এটিকে বিক্রির উদ্দেশ্যে অনত্র নেয়ার সময় পৌর সদরের থানার সম্মুখে আসামাত্র হামীমের পরিচিতজনরা বাসিয়া ব্রীজের উপর গাবীসহ তাকে পাকড়াও করেন। তখন অদূরে দায়িত্বর পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। তার কাছ থেকে জব্দ করা চোরাই গাভী।এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা (নাম্বার-১৩, তাং-২৮.০২.০২০৩) দেন হামীম।
বিশ্বনাথ থানার এসআই কবিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গরু চুরি করে থানার সমান দিয়ে যাবার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গরু উদ্ধারের পর তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে।