বুধবার ● ১৫ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » চুয়েটে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত
চুয়েটে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “সভ্যতার শুরু থেকেই আমাদের নারীদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। দেশের বর্তমান উন্নয়নও অগ্রগতির পেছনেও রয়েছে নারীদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা। আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকই নারী। তাদের পিছিয়ে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই নারী শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও নারীদের এগিয়ে যেতে হবে। চুয়েটে বর্তমানে ১২ শতাধিক নারী শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। এছাড়াও বিগত এক দশকে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাও আশাব্যাঞ্জক হারে বেড়েছে। যেটা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহণের দিকটাতে আমাদের আরও আশাবাদী করে তোলে।”
তিনি ১৪ই মার্চ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নমূলক কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে গঠিত অভিযোগ কমিটির আয়োজনে “ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন” স্লোগানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েট অ্যালামনাই ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নীরা মজুমদার, চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়েটের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নমূলক কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে গঠিত অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসাঃ রোকসানা খাতুন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার, সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছাঃ ফারজানা রহমান জুথী, গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছাম্মৎ তাহমিনা আক্তার, ইইই বিভাগের সেকশন অফিসার জনাব আফরোজা সুলতানা রিমা, স্টাফ এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুলসুমা বেগম, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বুশরা। মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা সুলতানা ও উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরহাদ জামিলা।
প্রধান বক্তা বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, “সংবিধানের একাধিক অনুচ্ছেদে নারীর অধিকার স্বীকৃত, বঙ্গবন্ধুও স্বাধীন বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। একজন জেলা প্রশাসকের একইসাথে জেলা কালেক্টর, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক হিসেবে নির্বাহী দায়িত্ব পালন করতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক আমিই। নারী হয়েও সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেকে কখনো নারী ভাবিনি। একজন মানুষ হিসেবেই আমি দায়িত্ব পালন করে চলেছি। নারী বা পুরুষ আলাদা কোনো সত্ত্বা নয়। নারী-পুরুষ মিলেই আমাদের দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা মেয়েরাও পারি এবং পারবো এই বিশ্বাসটা সকল পুরুষের মাঝে জাগ্রত হতে হবে। অনেকেই মনে করেন নারীরা শিক্ষিত ও কর্মজীবী হলেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। আমরা যতবেশি শিক্ষিত হবো, ততবেশিই বিনয়ী হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে বিয়েটা নারী-পুুরুষ কেউ একা করে না, দুজনেই করে। তাই সংসারের দায়িত্বও দুজনের সমান। প্যারেন্টিং দুজনকে মিলেই করতে হয়। আমার কাজ/দায়িত্ব না বলে, আমাদের বলার চর্চা করতে হবে। বেগম রোকেয়ারাও তাঁদের স্বামী, ভাই ও বাবারা সহযোগিতা করেছেন বলেই আমাদের নারীদের আজকের এই অগ্রগতি। বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটা আমি মেয়েদের পড়তে বলবো। নয়াচীনের নারীরা কীভাবে পুরুষের সাথে একত্রে কাজ করেছে, নয়াচীনের বিশ্বজোড়া উন্নয়ন ঘটিয়েছে সেই ইতিহাস আমাদের নারীদের জানতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের নারীদের অগ্রগতির পেছনেও বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারিশম্যাটিক নেতৃত্বের ফসল।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নীরা মজুমদার বলেন, “চুয়েটের প্রথম নারী গ্র্যাজুয়েট হিসেবে পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করি। তখন চুয়েটে ৭৫০ জন শিক্ষার্থী ছিল। আর আমি একা একজন মেয়ে ছিলাম। সেই সময়ে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। শিক্ষক, সহপাঠী ও কর্মচারী সবার কাছ থেকেই অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। তবে কর্মজীবনের পথচলা এতোটা সহজ ছিল না। কিছুসংখ্যক নারী ক্ষমতায় আসা মানেই কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন না। এটাতে দেশের সামগ্রিক নারীর অগ্রগতির চিত্রও প্রতিফলন হয় না। তবে আমাদের সহকর্মী ও পার্টনার যদি সহযোগী মানসিকতার হয়, তাহলে কিন্তু নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা অনেকখানি সহজ হয়ে যায়।”
এর আগে নারী দিবস উপলক্ষ্যে সকাল ১১.৫০ মি. উপাচার্য ভবনের সামনে থেকে এক র্যালি বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রী, নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক একটি ভিডিওচিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে দেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি তুলে ধরেন। পরে উপস্থিত নারীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের কেক কাটা হয়।
চুয়েটে আন্তর্জাতিক গণিত দিবস উদযাপিত
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর গণিত বিভাগের আয়োজনে আন্তর্জাতিক গণিত (পাই) দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়েছে। ১৪ই মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. সুনীল ধর এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছাম্মৎ তাহমিনা আক্তার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক গণিত দিবস উপলক্ষ্যে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী। গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব নুরুন নাহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েট ম্যাথ ক্লাবের মডারেটর ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার দেব। আলোচনা সভার পরে আন্তর্জাতিক গণিত দিবস ও বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ আলবার্ট আইনস্টাইনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কাটা হয়। এর আগে আন্তর্জাতিক গণিত দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত পোস্টার প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।
এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েটের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) আমেরিকান কনক্রিট ইনস্টিটিউট (এসিআই) স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত১৩ই মার্চ সোমবার বিকাল ৪টায় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সেমিনার রুমে সাধারণ সভা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েটের অনুষদ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম ও পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েটের সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হামীম।
এছাড়া অনুষ্ঠানে চ্যাপ্টারের ২১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কার্যকরী কমিটি ২০২২-২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ সভায় নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন পুরকৌশল বিভাগের ‘১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু জাফর গিফারী সাগর এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন একই বিভাগের তাসমিয়া রওনক ফেরদৌসী। অনুষ্ঠানে কনক্রিট ফেস্ট-২০২২ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী মোট ১২টি দলের মধ্যে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে কনক্রিট প্রতিযোগিতার বিচারকম-লীকেও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।