শিরোনাম:
●   প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব ●   শাহরাস্তিতে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ●   পানছড়ি ৩ বিজিবি’র পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় ●   ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তরুণের আত্মহত্যা ●   দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ●   ভোটকেন্দ্রে শূন্যভোটের মাধ্যমে পার্বত্যবাসী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ●   ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা নানা সুরতে আবির্ভুত হওয়ার পাঁয়তারা করছে ●   কাউখালীতে উইভ এনজিওর অবহিতকরণ সভা ●   খাগড়াছড়িতে ইত্তেফাকের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   বেগম রোকেয়া এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক সাব্বির ●   বারইয়ারহাট ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফারুক,সম্পাদক ইউসুফ ●   দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা নিহত, ছেলে আহত ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড ২য় সভা অনুষ্ঠিত ●   রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন ●   মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ●   আল ফালাহ ইসলামি একাডেমীর সবক প্রদান অনুষ্ঠান ●   ১১ দফা অবহিতকরণে আত্রাইয়ে আলোচনা সভা ●   পার্বতীপুর রেলওয়ে ইর্য়াডের আম গাছে যুবকের আত্মহত্যা ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   কাউখালী তাহেরিয়া রশিদা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সভা ●   পাকুন্দিয়ায় ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ গঠিত ●   বৈরী আবহাওয়ায় ও শীতের তীব্রতায় বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা ●   কোন হটকারিতায় গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা ●   তরফভাইখাঁ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ●   লংগদু এস এস সি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন ●   ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব
রাঙামাটি, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ১৯ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের আহ্বান
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের আহ্বান
রবিবার ● ১৯ মার্চ ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের আহ্বান

ছবি : সংবাদ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।
শনিবার (১৮ মার্চ ২০২৩) সকাল ১১টার সময় “পানছড়িতে জেএসএসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে” এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশের আগে বাবুড়ো পাড়া বাজার হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি করল্যাছড়ি স্কুলের সামনে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও পানছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমার সভাপতিত্বে ও চেঙ্গী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চেঙ্গী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কালাচাঁদ চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা, লতিবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভূমিধর রোয়াজা, পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উচিত মনি চাকমা, চেঙ্গী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আনন্দ জয় চাকমা ও লোগাং ইউনিয়নের ১, ২ ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য মিতি চাকমা ও পানছড়ি উপজেলা কার্বারী এসোসিয়েশনের সদস্য ভারতবর্ষ পাড়ার কার্বারী তরুণ জ্যোতি চাকমা।
স্বাগত বক্তব্যে কালাচাঁদ চাকমা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণও অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমাদের আশা ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথে জুম্ম জনগণ সুখে থাকবে। কিন্তু না, আমরা যুগ যুগ ধরে অত্যাচারিত, নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং স্বাধীকার, অধিকার হারা। এখনো আমরা অধিকার পাইনি।
তিনি বলেন, আমাদের বৈ-সা-বি উৎসব সমাগত। কিন্তু দুঃখের বিষয় গতকাল ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের খবর পেয়ে কখন কি হয় তা নিয়ে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। এই সময়ে যদি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত আরো লেগে যায় তাহলে আমাদের জনগণের অবস্থা কি হবে?
ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে আমরা অনেক ভাই হারিয়েছি, আমাদের অনেক মা-বোনের বুক খালি হয়েছে, আমরা সেই ’৮৬ সালে পানছড়ি গণহত্যা ও ’৯২ সালে লোগাং গণহত্যা দেখেছি। আমরা আর কত ঘটনা দেখবো? আমাদের হুঁশ এখনো হয়নি, এখনো ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি-হানাহানি করছি।
তিনি জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অচিরেই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করুন, জুম্ম জনগণকে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত থেকে মুক্ত করুন’। তিনি ইউপিডিএফ সভাপতির প্রতিও একই আহ্বান জানান।
লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বলেন, গতকাল মাচ্ছ্যছড়ায় ২ দলের সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে আমরা নিশ্চয় সবাই জানি। এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের কারণে আমরা অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হচ্ছি। সেই ’৮৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের ইতিহাস অনেক লম্বা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সামনে আমাদের বৈ-সা-বি উৎসব আসছে। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের মাধ্যমে যদি পরিবেশ-পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলি তাহলে আমরা কিভাবে এই উৎসব পালন করবো? কাজেই আমরা চাই না এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক।
তিনি আরো বলেন, আমরা এলাকাবাসী সকলে শান্তিতে থাকতে চাই। ’৮৩ সাল থেকে আমরা দেখেছি অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে, অনেকে সন্তানহারা হয়েছে, অনেকে পিতা হারা, অনেকে স্বামী, আত্মীয়-স্বজন হারা হয়েছে। কাজেই এ ধরনের ঘটনা আর আমরা দেখতে চাই না। গতকাল মাছ্যছড়ার ২ দলের সংঘর্ষের পর আরো বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমরা এলাকাবাসী আর সেটা হতে দেবো না। আমরা যদি সবাই সজাগ থাকি তাহলে কেউই আর এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ইউপিডিএফ’র কর্মী মরলেও জুম্ম জাতি, জেএসএস’র কর্মী মরলেও জুম্ম জাতি। যদি সংঘাত অব্যাহত থাকে তাহলে আমাদের জাতি রক্ষায় কূল কিনারা পাবো না। কাজেই, সংঘাত বন্ধ করতে জনগণকে সোচ্চার ও সচেতন হতে হবে। আমরা জনগণ আর সংঘাত চাই না তা দলগুলোকে জানিয়ে দিতে হবে। যারা সংঘাত বন্ধ করতে চায় না তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি জেএসএস ও ইউপিডিএফকে অচিরেই সংঘাত বন্ধ করে জুম্ম জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।
লতিবান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভূমিধর রোয়াজা বলেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত, মারামারি জাতির জন্য ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয় না। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত আমাদের চলার পথে বিভিন্ন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এই সংঘাত বন্ধের জন্য আজকে এই সমাবেশে মিলিত হয়েছি। এই সমাবেশ থেকে আমরা জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমা ও ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত খীসাকে অচিরেই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি উভয় দলের উদ্দেশ্যে বলেন, জেএসএস ও ইউপিডিএফ-কে অবশ্যই সমাঝোতার ভিত্তিতে চলতে হবে। না হলে আমরা জাতির জন্য কিভাবে আন্দোলন করবো, আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য কিভাবে অর্জিত হবে?
তিনি বলেন, গতকালকের সংঘাতের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত চিন্তিত। সামনে আমাদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ঘনিয়ে আসছে। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালন করতে চাই। আমরা সবাই শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
পানছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান উচিত মনি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা নিপীড়িত-নির্যাতিত। কিন্তু এই নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু দিনের পর দিন, যুগের পর যুগ যদি আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত লেগে থাকে তাহলে আমরা কখনোই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবো না।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক মেধাবি ছাত্র রয়েছে, যারা সমাজকে এগিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তারা সামনে আসতে পারছে না ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের কারণে। বন্দুকের নলকে সবাই ভয় পায়। এমনকি মিছিল-মিটিং আসতে পর্যন্ত ভয় পায়। কিন্তু আমরা আর কতদিন এভাবে ভয়ে পালিয়ে থাকতে পারবো? কাজেই, আমাদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের লোকজনকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষত যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষিত সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে আমরা কখনো ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতকে বন্ধ করতে পারবো না।
তিনি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে জেএসএস ও ইউপিডিএফের প্রতি আহ্বান জানান।
চেঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনন্দ জয় চাকমা বলেন, আমরা এযাবত বহুবার ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ করেছি। সংঘাত বন্ধের জন্য বার বার আহ্বান জানাচ্ছি। কিন্তু এখনো সেই সংঘাত বন্ধ হয়নি। এটা সত্যিই দুঃখজনক।
তিনি নতুন প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা আর কোন ভাই হারাতে চাই না, কোন মায়ের বুক খালি হোক তা চাই না।
তিনি বলেন, আজকে এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা সকলে একমত যে, আমরা কেউই সংঘাত চাই না। আমরা সবাই সংঘাতের বিরুদ্ধে। তাই আজকে এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন, আর যারা উপস্থিত হতে পারেন নাই সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে সংঘাত বন্ধ করার জন্য কাজ করতে হবে। কারণ আমরা আর আমাদের জুম্ম জাতির ভবিষ্যত নষ্ট হতে দিতে পারি না।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে বিশ্ব ও দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা এখনো সেই ’৮৩ সালের ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে পড়ে রয়েছি। আমাদের মধ্যে এখনো সেই হিংসা-বিদ্বেষ ধারণ করে রেখেছি। এই হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের ভুলে যেতে হবে। না হলে এখনো যে জুম্ম জাতি টিকে রয়েছে ভবিষ্যতে তাও থাকবে না। সুতরাং আমাদের জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অচিরেই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, সংঘাতের কারণে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে। কেউ কোন অপরাধ করলেও তাকে কিছুই করা বা বলা যাচ্ছে না। কারণ সে যদি কোন দলে যোগ দিয়ে প্রতিশোধ নেয় সমাজের মুরুব্বীরা সেই ভয়ে থাকে।
ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জুম্ম জাতির অন্তরায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতদিন সংঘাত জিইয়ে না থাকলে আমরা জাতিগতভাবে অনেক কিছু অর্জন করতে পারতাম। তিনি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে জুম্ম জাতির জন্য শান্তি ফিরিয়ে আনতে জেএসএস, ইউপিডিএফসহ সকল দলের প্রতি আহ্বান জানান।
কার্বারী তরুণ জ্যোতি চাকমা বলেন, ১৯৮৩ সাল থেকে আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত চলছে। এটা জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়। ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি থাকলে জুম্ম জাতির যে স্বপ্ন, যে অধিকারের জন্য আমরা সংগ্রাম করছি তা আমাদের বিফলে যাবে।
তিনি বলেন, এই সমাবেশে যারা উপস্থিত আছেন তাদের কেউ না কেউ পিতা হারিয়েছেন, কেউ ছেলে হারিয়েছেন, কেউ আত্মীয়-স্বজন হারিয়েছেন। কাজেই আমরা এখানে যারা একত্রিত হয়েছি কেউই আর ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত চাই না। আমরা এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত চিরতরে বন্ধের দাবি জানাই।
তিনি জেএসএস, ইউপিডিএফসহ সকল দলের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যদি মারামারি, সংঘাতের মধ্যে জর্জরিত থাকেন তাহলে আমরা কিভাবে অধিকার পাবো? প্রকৃত অর্থে যদি জাতির অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে হয় তাহলে এই সংঘাত অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
নারী মেম্বার মিতি চাকমা বলেন, বছরের শেষে আমরা বৈ-সা-বি উদযাপন করি। এই উৎসব যাতে আনন্দ উল্লাসের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করতে পারি সেজন্য ইউপিডিএফ ও জেএসএসের প্রতি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
সমাবেশের সভাপতি ও পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমা গত পরশু থেকে এলাকায় ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এলাকার জন্য এটা শুভ লক্ষণ নয়। তাই আমাদের সবাইকে সোচ্চার হয়ে এই সংঘাত বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, সামনে জুম্মদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব বৈ-সা-বি রয়েছে। এ উৎসব পালনের জন্য ইতোমধ্যে আমরা কমিটিও গঠন করেছি। কিন্তিু গত পরশু থেকে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের পরিস্থিতিতে এলাকার জনগণ খুব মন খারাপ করে রয়েছেন। ভাইয়ে ভাইয়ে যদি এ সংঘাত চলমান থাকে তাহলে আসন্ন বৈ-সা-বিতেও হয়তো কান্নান রোল পড়বে। অনেক মায়ের বুক খালি হতে পারে। এ অবস্থা সৃষ্টি হলে কি আমরা উৎসব করতে পারবো? তাই তিনি সুষ্ঠূভাবে বৈ-সা-বি উৎসব পালনের জন্য সংঘাত বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জেএসএস ও ইউপিডিএফের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি ভ্রাতৃঘাতি বন্ধের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ইউপিডিএফ ও জেএসএস’র মধ্যে হওয়া সমঝোতা চুক্তি মেনে চলে যার যার এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য সন্তু লারমার প্রতি অনুরোধ জানান।
শান্তি জীবন চাকমা বলেন, যে দল নিজের ভাইয়ের বুকে গুলি চালিয়ে মনে তৃপ্তি পায়, যে দলটি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখতে চায়, যে দলটি জনগণের মঙ্গল চায় না, যে দলটি মারামারি করতে প্রস্তুত হয়, মানুষ মারতে পারে সে দলটিকে জাতীয় ও জনগণের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণ যদি একতাবদ্ধ হয় তাহলে যে কোন দল মাথানত করতে বাধ্য হবে। আমরা পানছড়ি এলাকার জনগণ সংঘাত বন্ধের জন্য যা যা করা দরকার তা করতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।
বক্তব্য শেষে তিনি ‘আমরা আর ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি চাই না’ এমন কথার সমর্থন চাইলে উপস্থিত সকলে হাত উঁচিয়ে ‘মারামারি চাই না’ বলে তার কথার প্রতি সমর্থন জানান।





খাগড়াছড়ি এর আরও খবর

পানছড়ি ৩ বিজিবি’র পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় পানছড়ি ৩ বিজিবি’র পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়
ভোটকেন্দ্রে শূন্যভোটের মাধ্যমে পার্বত্যবাসী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ভোটকেন্দ্রে শূন্যভোটের মাধ্যমে পার্বত্যবাসী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে
খাগড়াছড়িতে ইত্তেফাকের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত খাগড়াছড়িতে ইত্তেফাকের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটকবাহী বাস উল্টে আহত-২০ খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটকবাহী বাস উল্টে আহত-২০
পানছড়িতে লোগাং জোন এর অনুদান সামগ্রী প্রদান পানছড়িতে লোগাং জোন এর অনুদান সামগ্রী প্রদান
বিজিবির অভিযানে খাগড়াছড়িতে ১২ অনুপ্রবেশকারী আটক বিজিবির অভিযানে খাগড়াছড়িতে ১২ অনুপ্রবেশকারী আটক
শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মরণে ঢাকায় স্মরণসসভা শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মরণে ঢাকায় স্মরণসসভা
সংবিধান সংস্কার কমিশনে ইউপিডিএফের ১৭টি প্রস্তাবনা সংবিধান সংস্কার কমিশনে ইউপিডিএফের ১৭টি প্রস্তাবনা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)