বুধবার ● ৫ এপ্রিল ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ৩ বছরেও হয়নি গৃহবধূ মুন্নী হত্যার রহস্য উদঘাটন : বাদী পক্ষ হতাশ
৩ বছরেও হয়নি গৃহবধূ মুন্নী হত্যার রহস্য উদঘাটন : বাদী পক্ষ হতাশ
আকতার হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ে দীর্ঘ তিন বছরেও হয়নি গৃহবধূ মুন্নী হত্যার রহস্য উদঘাটন। এই নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার হতাশ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল (রবিবার) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর গ্রামের সওদাগর বাড়িতে গৃহবধূ কুলছুমা আক্তার মুন্নী’র নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ মুন্নী ঐ বাড়ির কাতার প্রবাসী আক্তার হোসেন প্রকাশ মুক্তার এর স্ত্রী।
একই বছরের ৬ এপ্রিল উক্ত ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় নিহতের স্বামী আক্তার, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ২ ঝা ও ভাসুর সহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৩০৬ ধারায় মামলা নং-৭/(৪)২০২০ দায়ের করেন, যাহার জি.আর মামলা নং-৭/৬৮।
মামলা দায়েরের ৬ মাস পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করা হলে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের উপর নারাজি দিয়ে একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে উক্ত মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’তে স্থানান্তর করা হলে ঘটনার ১০ মাস পরে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী উক্ত ঘটনা তদন্তের নিমিত্তে পিবিআই এর টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রায় ১০ মাস তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর পিবিআই চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
পিবিআই তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে নারাজি দিলে ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী নিহতের শিশু সন্তান আরাফাত হোসেন মাহিনের জবানবন্দি’র উপর ভিত্তি করে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে উক্ত মামলা পুনরায় ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি’)তে স্থানান্তর করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে ঘটনার ২ বছর ২ মাস ১৩ দিন পরে ২০২২ সালের ১৭ জুন (শুক্রবার) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) সিআইডি)’র পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভিকটিমের পরিবারের দাখিল করা কোর্ট পিটিশন পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন, উক্ত ঘটনার নিখুঁত ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানান।
নিহত গৃহবধূ মুন্নী’র বড় ভাই ও মামলার বাদী
মাস্টার ফিরোজ আহমেদ জানান, ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল একমাত্র বোন কুলছুমা আক্তার মুন্নীকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্মমভাবে খুন করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে রাখে। এভাবেই তিনটি বছর পার হয়ে গেলো। আমি চাই আমার বোনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক। ইন্ধনদাতা, প্রকৃত দোষী ও অপরাধীরা কেউ যেন কোনভাবেই পার ও ছাড় না পায় এবং আমার বোনের মতো কারো পরিবারে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।