মঙ্গলবার ● ২০ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » জাতীয় » সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ : ৪০ জনের বেশি আহত
সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ : ৪০ জনের বেশি আহত
গণতন্ত্র মঞ্চের ডাকে আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে সমাবেশ শেষে সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ভয়াবহ লোডশেডিং বন্ধ, বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান এবং খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কমিয়ে মানুষের জীবন রক্ষার দাবিতে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল জিরো পয়েন্ট দিয়ে সচিবালয়ের রাস্তায় গেলে পুলিশী ব্যারিকেড এর সম্মুখীন হয়।এখানে পুলিশী বাধায় ও তারকাটায় গণতন্ত্র মঞ্চের চল্লিশ জনের বেশি নেতা- কর্মী আহত হয়।
বিক্ষোভের আগে প্রেসক্লাবের সম্মুখে মঞ্চের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু। সমাবেশ পরিচালনা করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন।
সমাবেশ ও বিক্ষোভে আরও অংশ নেন নাগরিক ঐক্য এর সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামালউদ্দিন পাটোয়ারী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া সমন্বয়ক হাসিব উদ্দিন হাসিব,ভাসানী অনুসারী পরিষদের নেতা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশের সভাপতি এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন সরকারের ব্যর্থতা, সরকারের চুরি,দূর্নীতি আর মুনাফালোভী দের দৌরাত্মের কারণে আজ দেশের মানুষের চরম অসহায়। এই সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে দেশ আরও সর্বনাশের পথে এগিয়ে যাবে।
তিনি আন্দোলনের কর্মসূচী হিসাবে আগামী ১৯ থেকে ২১ জুলাই ২০২৩ গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা - চট্টগ্রাম রোডমার্চ ঘোষণা করেন। একইসাথে তিনি জেলা ও বিভাগীয় সদরে সমাবেশ,পদযাত্রা , অবস্থান ও বিক্ষোভ এর কর্মসূচীও ঘোষণা করেন।
সমাবেশে আ স ম আবদুর রব বলেন, এই সরকার ভোট ডাকাত, জনগণের অধিকার হরণকারী।এই ভোট ডাকাত সরকারকে আর দেশ চালাতে দেয়া যায় না।অনতিবিলম্বে এদেরকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে জনগণ তাদেরকে বিদায় দেবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই ভোটচোর সরকারকে কেউ আর বিশ্বাস করেনা।দেশের মানুষ এদেরকে আর দেখতে চায়না। এদেরকে কেউই আর নিতে পারছে না। এরা এখন পালিয়ে যাওয়ার পথ খুজছে।আগামী ঈদের পর এদের বিদায় না হওয়া ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনের কর্মসূচী দেয়া হবে।
সাইফুল হক বলেন, সরকার একদিকে বলছে বিদেশি চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না, অথচ অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা আর ভিসানীতি প্রত্যাহারের জন্য দেনদরবার করছে, নিজেদের রক্ষায় আই এমএফ এর কাছে আত্মসমর্পণ করছে, ভারতের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে, দেশের রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপ মেনে নিয়েছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকারের চুরি দূর্নীতি,লুটপাটের কারণে আজ ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট। সরকারের ঘনিষ্ঠ সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে নৈরাজ্য। এই লুটেরা সরকারকে কোনভাবেই আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। সে কারণে আজকের বিক্ষোভের পর আরও বড় কর্মসূচী দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা হবে। তিনি ঈদের পর বৃহত্বর আন্দোলনের প্রস্তুতি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
হাবিবুর রহমান রিজু বলেন, এই সরকারের কারণে আজ দেশের মানুষ কষ্টে আছে।মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে তারা লুটেরাদের হাতে দেশের মানুষকে সপে দিয়েছে। আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত করে এবার আমরা ভোটের অধিকারসহ সকল অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।
আহত নেতৃবৃন্দের তালিকা -
সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে আহত হয়েছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ ও সংগঠননের নেতা হাসান আল মেহেদী, সজল আহমেদ, রিপন আহমেদ রণি,প্রিন্স হোসাইন ইমন,সৌরভ সেন,সানি,আবদুল্লাহ, নাগরিক ঐক্য এর রাসেল আহমেদ,শামীম আহমেদ, আবু জাঈদ,মোশাররফ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, মোতাহার হোসেন, জামাল সিকদার, আইয়ুব আলী, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ শামীম, আবদুল জব্বার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুল আজিজ, সাকিল আহমেদ, জেএসডির তৌফিকুজ্জামান, মোহাম্মদ মাসুদ মোহাম্মদ রানা,মোহাম্মদ মোশতাক, পারভেজ, মোহাম্মদ সুমন, গণসংহতি আন্দোলনের তৈয়ব আলী, আক্তার হোসেন,শফিক, রাসেল, জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
আহতদের বেশ ক’জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।