রবিবার ● ২৫ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে উদ্বেগজনক হারে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর
রাউজানে উদ্বেগজনক হারে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানে উদ্বেগজনক হারে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগের মত বৃষ্টি হচ্ছে না, দিন দিন সাগর নদীর নব্যতা হ্রাস পাচ্ছে, সর্বত্র পুকুর জলাশয় ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। এর প্রভাবে দিন দিন ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।রাউজান উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় কিছু কিছু গভীর নলকুপে ঝর্ণাধারায় বিরতিহীণ পানি পড়ছে। স্থানীয়রা বলেছেন ব্যবহারকারীরা পানির অপচয় রোধে নলের মুখে চিপি না দেয়ায় অনবরত পানি পড়তে পড়তে এখন অনেক নলকুপে আগের মত পানি পড়ছে না। সরেজমিনে পরিদর্শন কালে বিশুদ্ধ পানির উৎস নিয়ে কথা হয় এলাকার মানুষের সাথে। অনেকেই আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন যেভাবে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, সেই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকে বিশুদ্ধ পানির জন্য মানুষের মধ্যে হা-হা-কার পড়বে। তারা বলেন আগে পঁচানব্বই শতাংশ গ্রামীণ মানুষ নির্ভরশীল ছিল হাতচাপা নলকুপের উপর। এখন সবখানে হাতচাপা নলকুপ নষ্ট। পাড়ায় পাড়ায় নষ্ট হয়ে থাকা নলকুপের মাটির উপড়ের অংশের লোহার বড়ি ও হাতল চোরের হাত হয়ে ভাঙ্গারীর দোকানে চলে যাচ্ছে। খবর নিয়ে জানা যায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় আগে বসানো গভীর নলকুপে না পেয়ে এখন বেশির ভাগ স্বচ্ছল পরিবার বাড়ির ভিতর তিন, চার ইঞ্চি ব্যসের পাইপে সাবমার্সিবল পাম্প সংযুক্ত করে নলকুপে পানি উঠাচ্ছে। সর্বসাধারণের ব্যবহার্য্য চাপা নলকুপের পানির উপর নির্ভরশীল মানুষ এখন আগের মত পুকুরের পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। গত কয়েক বছর থেকে চলমান বিশুদ্ধ পানির এই সংকট মোকাবেলায় সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গ্রামে গ্রামে গভীর নলকুপ বসানো শুরু করেছে। খবর নিয়ে জানা যায় সরকারের ওই প্রকল্পের আওতায় বসানো অনেক গভীর নলকুপেও আগের মত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনোটি একেবারেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কথা বললে রাউজান উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারি রহমত উল্লাহ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদ নদী নব্যতা হারাচ্ছে। বর্ষার মৌসুমে আগে মত বৃষ্টি হচ্ছে না। পুকুর জলাশয় উদ্বেগজনক হারে ভরাট করে ফেলার প্ররণতায় ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে চলে যাচ্ছে। উপজেলার গহিরা ও নোয়াজিশপুরে পানি পেতে হলে আট’শ ফুট পর্যন্ত গভীরে যেতে হচ্ছে। এই কর্মকর্তা বলেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নিদেশে এই পর্যন্ত প্রায় ১৬’শ গভীর নলকুপ উপজেলার বিভিন্নস্থানে সর্বসাধারণের জন্য আগে বসানো হয়েছে। চলতি বছর আরো ৩৬৪টি গভীর নলকুপ বসানোর কাজ চলছে। এর আগেও বিভিন্ন এলাকায় নলকুপ বসিয়ে মানুষের বিশুদ্ধ পানির সংকট দুর করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন ২০০৫ সালের পর বসানো উপজেলার সব হাতচাপা নলকুপ এখন অকেজো। এই পর্যন্ত তার বিভাগ কর্তৃক বসানো অনন্ত ২৮টি গভীর নলকুপ অকেজো হয়ে আছে বলে তিনি জানান।