বৃহস্পতিবার ● ৭ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » ঢাকা বিভাগ » নির্বাচনের দিকে তাকালে লজ্জা করে
নির্বাচনের দিকে তাকালে লজ্জা করে
ঢাকা প্রতিনিধি :: (৬ এপ্রিল ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৪০মিঃ) দেশে এখন নির্বাচনের দিকে তাকালে লজ্জা করে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভোটাররা এখন তার ভোট যাকে খুশি তাকে দিতে পারে না। প্রার্থীও প্রত্যেক ভোটারের কাছে যেতে পারে না। অথচ উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু অথর্ব কমিশন সে ব্যবস্থা করতে পারে নাই।’
৬ এপ্রিল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইঞ্জিনিয়ার একেএম রেজাউল করিম রচিত ‘নির্বাচিত কলাম’ (প্রথম খণ্ড) গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ‘বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে দশম ক্ষমতাবান ব্যক্তি হলেও জনকল্যাণমূলক কাজ ও মানবাধিকার বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে দেশবাসীর কাছে এখনো উজ্জ্বল হয়ে উঠেনি।’
এমাজউদ্দীন বলেন, ‘মার্কিন সাময়িকী ফরচুনের জরিপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে দশম ক্ষমতাবান ব্যক্তি হয়েছেন। ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে যদি এই হিসেব হয়, তাহলে দশম অথবা আরো ওপরে তার স্থান হতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, জনকল্যাণমূলক কাজ, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ও মানবাধিকার বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে তার অবদান দেশবাসীর কাছে এখনো পর্যন্ত উজ্জ্বল হয়ে ওঠেনি।’
মার্কিন সাময়িকী ফরচুনের করা বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী ৫০ নেতার তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশম স্থানে আছেন। আর শুধু নারীদের মধ্যে তিনি আছেন পঞ্চম স্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সাং সু চির পরেই আছেন শেখ হাসিনা। এ তালিকার এক নম্বরে আছেন অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজোস। গত ২৪ মার্চ এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘গণতন্ত্রের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই একাত্তর সালে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, মাত্র আড়াই বছরের মাথায় বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্র নির্বাসিত হলো। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হলো। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে পুনরায় বিকশিত করেন। সেই গণতন্ত্র আজ আবারো নির্বাসনে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে।’
গণতন্ত্র মৃত উল্লেখ করে ড. ওসমান ফারুক বলেন, ‘দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লংঘিত হচ্ছে। সংবাদপত্র ও বাক স্বাধীনতা নেই। সুতরাং এই সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে দেশ মহাশ্মশানে পরিণত হবে। তাই বিএনপিসহ আপামর জনগণের আবেদন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। যেখানে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ইচ্ছামতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।’
আগামীতে ‘বজ্রকঠিন’ আন্দোলন আসছে এবং শান্তিপূর্ণ সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের ‘স্বৈরাচারীধারা’ সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক।
তিনি বলেন, ‘সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। অথচ এসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। তাই অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা দাবি করে বলেন, ‘জনগণ সুদৃঢ় ঐক্যের সাথে আগামী দিনের আন্দোলন করবে, যে আন্দোলনের ফলে এ সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।’
আগামিতে বজ্রকঠিন আন্দোলন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আগামীতে এমন উত্তাল আন্দোলন আসছে, যে আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ কিন্তু অত্যন্ত বজ্রকঠিন। সে আন্দোলনে এই সরকারের স্বৈরাচারী ধারা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হবে।’
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বাধীনতা ফোরাম সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী ও জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।