বৃহস্পতিবার ● ৭ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » ঝিনাইদহের শিশু হাসপাতাল ১১ বছরেও চালু হয়নি
ঝিনাইদহের শিশু হাসপাতাল ১১ বছরেও চালু হয়নি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (৭ এপ্রিল ২০১৬: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪০ মিঃ) ঝিনাইদহে পঁচিশ শয্যার বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালটি এগারো বছরেও চালু করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ৷ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে চিঠি চালাচালির মধ্যে হাসপাতালের কার্যক্রম ও ডাক্তার কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টি আটকে আছে৷
২০১২ সালে ২১ নভেম্বর শিশু হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের সহকারী সচিব নুরুন নবী চৌধুরী ১৬০নং স্মারকে চিকিত্সকসহ ১৮টি পদ সৃষ্টি প্রজ্ঞাপন জারী করলেও এই চার বছরে স্বাস্থ্য বিভাগ বিশেষজ্ঞ কোন শিশু চিকিত্সক ও নার্স নিয়োগ দিতে পারেনি৷
আবার আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয়, আয়া, কুক, মালি, নিরাপত্তাকর্মী ও সুইপারের ১২টি পদে লোকবল নিয়োগ দিলেও গত ৩ মাস তাদের বেতন হয় না৷ ঢাকার দারুস সালাম রোডের উষা সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ আউটসোর্সিংয়ের নিয়োগের ঠিকাদার ছিল৷ এদিকে শিশু হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে দিনকে দিন শিশু রোগীর চাপ বড়ছে৷ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে শিশুদের জন্য মাত্র ৮টি শয্যা আছে৷ কিন্তু প্রতিদিন ৬০ জন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে৷ আউটডোরে ২০০ শিশু রোগীর ধকল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের একমাত্র বিশেষজ্ঞ শিশু চিকিত্সক ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম৷ সরেজমিন দেখা গেছে, নির্মানাধীন শিশু হাসপাতালের চারটি ভবন ধীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় বিল্ডিংয়ে ফাটল ধরেছে৷ কন্সট্রাকশন মেইনটেনেন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের (সিএমএমইউ) নির্মান কাজে চরম ত্রুটির কারণে ভবনের বারান্দা ধ্বসে পড়েছে মাত্র ১১ বছরে৷ ময়লা আবর্জনায় ভরা জরাজীর্ন শিশু হাসপাতালের লোহার গ্রিল, জানালা দরজা ও কাচের গ্লাস ভেঙ্গে গেছে৷ চুরি হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক মুল্যবান সরঞ্জাম৷ পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন সময় হাসপাতালে আসা মুল্যবান মেশিন ও আসবাবপত্র৷
গত দুই বছর জোড়াতালি দিয়ে শিশু হাসপাতালটি চালু করা হলেও সেখানে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক নেই৷ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফাল্গনি রানী সাহাকে ডেপুটেশনে শিশু হাসপাতালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি সময় দিতে পারেন না৷ তার সঙ্গে দুইজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শহিদুর রহমান ও রোখসানা ওয়াসিম দায়িত্ব পালন করছেন৷ শিশু চিকিত্সায় অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রতিদিন ১০/১৫ জন শিশু রোগীকে প্রাথমিক কিছু চিকিত্সা ও উপদেশ দিচ্ছেন তারা৷
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় শিশু হাসপাতালটিতে শিশুদের মারাত্মক রোগের নিদ্দিষ্ট কোন চিকিত্সা নেই, বরাদ্দ নেই সরকারী ওষুধ৷ তাই চিকিত্সার জন্য ভরসা একমাত্র খাবার স্যালাইন৷ ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম, জানান, ২৫ শয্যার শিশু হাসপাতালটি ২০০৫ সালে ৩ একর জমির উপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৷ জমি অধিগ্রহন বাবদ ৮৮ লাখ টাকা ও ভবন নির্মানে ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়৷ ২০০৬ সালের ৩০ এপ্রিল শিশু হাসপাতালের নির্মান কাজ শেষ হয় এবং একই বছরের ৩০ আগষ্ট ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়৷