বুধবার ● ১৬ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » বিআরবি হসপিটালের প্রতারণার ফাঁদে রোগীরা হচ্ছে সর্বশান্ত
বিআরবি হসপিটালের প্রতারণার ফাঁদে রোগীরা হচ্ছে সর্বশান্ত
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: ঢাকায় অবস্থিত বিআরবি গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিআরবি হসপিটাল প্রতারণার ফাঁদ খুলে বসেছে। ভূয়া বিল ভাউচার করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। রোগীরা হচ্ছে সর্বশান্ত। সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফেরা রোগীর সংখ্যাও খুব কম। রোগীর স্বজনরা বলছে, টেষ্ট বানিজ্য করে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া নির্দিষ্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীর দামী ঔষধের বাইরে ডাক্তাররা ঔষধ প্রেসক্রিপশন করেননা বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক রোগীর স্বজন। এদিকে এক নবজাতককে নিয়ে ব্যবসা করেছেন বিআরবি হসপিটাল। ৭ দিন বয়সী ওই নবজাতকের এখনও নাম পর্যন্ত রাখা হয়নি। গত ৭ আগষ্ট বিআরবি হসপিটালে পেডিয়াটিক ও নিওরোলজী কনসালটেন্ট ডাঃ নাজমুন নাহারের তত্ববধানে ফার্মগেট এলাকার ফারহানার ছেলেকে ভর্তি করা হয়। ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত ওই নবজাতককে সুস্থ্য করতে পারেনি ডাক্তার। শেষ পর্যন্ত তাকে ১৪ আগষ্ট হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার একটি বিল। বিলে উল্লেখিত সেবার মধ্যে ১৪ আগষ্ট রাত ১০ টা ৫০ মিনিটে একবার ৫১ মিনিটে ১ বার ও ৫৩ মিনিটে দুই বার রোগীকে দেখেছেন ডাক্তার নাজমুন নাহার। একই সময়ে তিন মিনিটের ব্যবধানে ৪ বার একই রোগীকে দেখে প্রতিবার ১২শ টাকা করে ৪ হাজার ৮ শ টাকা বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধরণের প্রতারণা প্রায় সকল রোগীর ক্ষেত্রে করে চলেছে বিআরবি হসপিটাল। এই বিষয় নিয়ে বিআরবি গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান মজিবর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি ওই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বিল দেয়ার সময় পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছে এটিই তাদের নিয়ম। ভুক্তভোগী রোগীর অভিভাবক মনসুর আহমেদ প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
কুষ্টিয়ায় এক দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক সভাপতির আত্মীয়কে সভাপতি করার পাঁয়তারা চলছে
কুষ্টিয়া :: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ৩৫ নং স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাবেক সভাপতি দুর্নীতিগ্রস্তের দায় স্কুল থেকে বিতাড়িত করার পর ছলে বলে কৌশলে নতুন করে ঐ স্কুলটি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এই স্কুলে দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান রতন এর আত্মীয় কে সভাপতির প্রস্তাব করায় এলাকায় চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নিয়ে চলছে নানা চক্রান্ত। ইতিপূর্বে সাবেক সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের সমন্বয়ে স্কুলের সম্পত্তির আয়কৃত অর্থ দিয়ে স্কুলের মান উন্নয়ন না করে ব্যক্তিগত কাজে অর্থের ব্যবহার করে স্কুলটা ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল তারা। তারই প্রেক্ষিতে স্কুল কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী তৎপরতায় অনলাইন পত্রিকায় ও ইলেকট্রনিক্স প্রিন্ট মিডিয়া এবং পত্র পত্রিকায় প্রচারের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দিয়ে সেই কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সে যে দুর্নীতি করেছে তা জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে তাদের দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ বিষয়টি জানাজানির পর তাকে কমিটি থেকে বাতিল করা হয় । সেই সাথে প্রধান শিক্ষককেও স্কুল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বর্তমানে দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান রতনের আত্মীয় কে সভাপতির প্রস্তাব করায় এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ওলিল ও ফরিদ এর অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। ফরিদের সকল অপকর্মের সহযোগী ওলিল বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী । এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন এই স্কুলটি ইতিপূর্বে তাদের গুষ্টির দখলে থাকায় স্কুলে তো কোন উন্নতি হয় নাই বরং স্কুলের অর্থ দিয়ে তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছে। সাবেক সভাপতির ভাই ফরিদ ও সহযোগী ওলিল এরা বংশ-পরম্পরমা আত্মীয়-স্বজন মিলে স্কুলটাকে জরাজীর্ণ এবং সর্বস্বান্ত করছে এবং স্কুলের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। খোঁজ নিলে দেখবেন স্কুলটাকে ২০ থেকে ৩০ বছর এরাই পরিচালিত করছে নিজস্ব আত্মীয় স্বজন দ্বারা। কিন্তু স্কুলের কোন উন্নয়ন হয়নি । আবারও যদি তারা সভাপতি হয় তাহলে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে সেই সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।সভাপতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই স্কুলে একটি নির্বাচন দিয়ে সভাপতি নির্ধারণ করলে সব থেকে ভালো হয় । কোন পকেট কমিটি না দিয়ে নির্বাচন দেয়া উচিত। পকেট কমিটি দিলেই এলাকায় সংঘর্ষ হতে পারে।
তবে আমরা আশা করব কমিটি দেওয়ার বিষয়ে যারা সিদ্ধান্ত নিবেন তারা বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে কমিটি অনুমোদন দিলে ভালো হবে। তবে বর্তমানে যাকে প্রস্তাব করা হয়েছে মনিরুল ইসলাম, তিনি পার্শ্ববর্তী একটা স্কুলের শিক্ষকতা করেন। তার বাবা কোরবান মুন্সি বিএনপি’র সাবেক ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি। তার রাজনীতি জামাত-বিএনপি কেন্দ্রিক এমনটি আমরা জানি। স্কুলটি বর্তমান এ্যাডহক কমিটির মধ্য দিয়ে চলছে । এ্যাডহক কমিটি হওয়ার পরে স্কুলে যাতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ক্ষেত্রে ও স্কুলের সম্পত্তি দ্বারা দুর্নীতি না করা হয় এ মর্মে এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধু ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান কে আইনি নোটিশ পাঠান রহমান সোহানুর নামে ওই স্কুলের এক জমি দাতা। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সময় যাতে তাদেরকে অবগত করা হয় অথচ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধু তিনি গোপনে তাদেরকে কিছুই না জানিয়ে সাবেক সভাপতির আপন ভাই ফরিদ ও ওলিল এর ইশারায় ও তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এবং মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পকেট কমিটি করার এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোহানুর রহমান সোহান ও তার ভাই বুলু বিশ্বাস তিনি বলেন তারা অর্থের বিনিময়ে আমাদের কাছে কমিটি বিক্রয় করতে চায়। অনৈতিক প্রস্তাবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তারা তাদের সিদ্ধান্ত কায়েম করছে। হেডমাস্টার কে সঙ্গে করে এবং বিগত হেডমাস্টারদের সঙ্গে দেনদরবার এর মাধ্যমে এবং তাদের সমন্বয়ে কাজগুলো করে আসছে ২৫-৩০ বছর যাবত। তারা আরো জানান স্বর্গপুর গ্রামে শিক্ষিত এবং শিল্পপতি থাকা সত্ত্বেও চক্রান্ত করে পার্শ্ববর্তী স্কুলের শিক্ষককে টাকার বিনিময়ে সভাপতি নির্ধারণ করছে এ বিষয়ে তারা উদ্ধোতন কর্মকর্তা দের এবং শিক্ষিত মহলের সহযোগিতা কামনা করছে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা সকল জমিদাতাদের তালিকা করেছি। সেই সাথে স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জমি দাতা সবাইকে নোটিশ দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি । আমরা ওই স্কুলের কমিটির বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবে কাজ করছি । যেহেতু স্কুলের শুরু থেকেই আমি সকল বিষয়গুলো জানি এবং দুর্নীতির বিষয়ে আমি তদন্ত করেছিলাম । অতএব আমি এই দুর্নীতির ভিতরে তো যাব না। আমাকে অনেকেই ভুল ভাবতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি সঠিকভাবেই কাজ করছি। এই কমিটির বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা সাহেব কেউ জানানো হয়েছে । তবে প্রস্তাব করা হয়েছে রেজুলেশনে এখনো তোলা হয়নি । ফাইনাল সিদ্ধান্তক্রমে রেজুলেশনে তোলা হবে। এ বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত দেওয়ার কেউ নয়। চেয়ারম্যান সাহেব যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই হবে। আমার এখানে কোন কিছু করার নাই।
এ বিষয়ে স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের এখানে ছয়টি সমাজ আছে। তাদের সিদ্ধান্তক্রমেই এমনটি প্রস্তাব এনেছে তারা, এখানে আমার কিছু করার নাই । আপনার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে? সেইনোটিশের জবাব দিয়েছেন কিনা? আইনগতভাবে কাজ করছেন কিনা? ওর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপনাকে সকল জমিদাতাদের কাছে চিঠি দেওয়ার কথা বলেছে আপনি সে কাজটি করেছেন কিনা ? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ সকল প্রশ্নের সৎ উত্তর দিতে পারেন নাই।
কুষ্টিয়ায় জাতীয় শোক দিবস পালিত
কুষ্টিয়া :: ১৫ আগস্ট ২০২৩ তারিখ মঙ্গলবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ পালন উপলক্ষে সকালে কালেক্টরেট চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ভাস্কর্যে এবং মজমপুরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। অতঃপর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ এহেতেশাম রেজা, জেলা প্রশাসক, কুষ্টিয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বিজ্ঞ সরকারি কৌঁসুলি, বিজ্ঞ পিপি, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা ইউনিট কমান্ড, কুষ্টিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কুষ্টিয়া সদর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কুষ্টিয়া সদর, জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ।
এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ¦ সদর উদ্দিন খাঁন সহ সকল নেতাকর্মী, উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলামসহ জেলা শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভা শেষে জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ পালন উপলক্ষ্যে “আমার চোখে বঙ্গবন্ধু” বিষয়ে ০১ (এক) মিনিট ব্যাপী ভিডিও চিত্র তৈরির প্রতিযোগিতা এবং জেলা শিশু একাডেমি ও জেলা প্রশাসন, কুষ্টিয়ার যৌথ আয়োজনে শোক দিবস উপলক্ষে শিশুদের আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে অতিথিবৃন্দ পুরস্কার বিতরণ করেন।