শুক্রবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » “বরকলে ফের কাঠ ব্যবসা বন্ধ , অর্থনৈতিক সংকট চরমে” “সিন্ডিকেটের আধিপত্য, কারণ জানেন না কেউ” শিরোনামের সংবাদের প্রতিবাদ
“বরকলে ফের কাঠ ব্যবসা বন্ধ , অর্থনৈতিক সংকট চরমে” “সিন্ডিকেটের আধিপত্য, কারণ জানেন না কেউ” শিরোনামের সংবাদের প্রতিবাদ
গত ২০-২৩ আগষ্ট-২০২৩ তারিখের মধ্যে দৈনিক গিরিদর্পণ, দৈনিক মুক্ত খবর, দৈনিক বাংলাদেশের আলো, ঢাকা টাইমস, দৈনিক অধিকার সহ কয়েকটি পত্রিকায় “বরকলে ফের কাঠ ব্যবসা বন্ধ ,অর্থনৈতিক সংকট চরমে” “সিন্ডিকেটের আধিপত্য, কারণ জানেন না কেউ” শিরোনামের সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বরকল কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম, কাঠ ব্যবসায়ী নূর মোহামম্মদ, মো. নূরুল আলম, মাহবুব আলম ও কামিনী চাকমা।
উল্লেখিত কাঠ ব্যবসায়ীরা জানান, রাঙামাটির অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি কাঠ ও মাছ ব্যবসা। একটি চক্র রাঙামাটির বরকল উপজেলার কাঠ ব্যবসায়ী, জোত বাগান মালিক, কাঠুরিয়া, দিনমজুর, ছোটহরিণা বাজারের ব্যবসায়ী, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে গভির ষড়যন্ত্র করে ২০১৭ সাল থেকে বরকল উপজেলার হরিণা চ্যানেলে সব ধরনের কাঠ ও কাঠজাত দ্রব্য পরিবহণ ও বাজারজাত বন্ধ করে দেয়। পরে প্রশাসন যাচাই-বাছাই করে পূনরায় হরিণা চ্যানেলে সব ধরনের কাঠ ও কাঠজাত দ্রব্য পরিবহণ ও বাজারজাত শুরু হয়। এই চক্রটি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ২০১৯ সালে ভারতীয় চোরাই কাঠ আনার মিথ্যা অভিযোগ করায় স্থানীয় প্রশাসন হরিণা চ্যানেলে মৌখিকভাবে কাঠের ব্যবসা আবার বন্ধ করে দেন।
তখন রাঙামাটির বরকলে বিভিন্ন স্থানে ডিপোতে মজুত অবস্থায় মূল্যবান সেগুনসহ শতকোটি টাকার কাঠ নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে কাঠ ব্যবসা বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। মূল্যবান সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ বছরের পর বছর রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে পচে নষ্ট হয়ে যায়।
এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডিপোতে মজুত করা কয়েক লাখ ঘনফুট কাঠ আটকে পড়ে। ফলে ওই সময় চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন পাহাড়ি-বাঙ্গালী স্থানীয়রা।
পরে কাঠ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহ আলম তাঁর নিজের টাকা খরচ করে স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ের কাঠ ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ করে গঠন করেন “বরকল কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ” । তার পর এ সংগঠনের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-২৯৯ আসনের সম্মানীত সংসদ সদস্য এবং রাঙামাটি জেলার আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ, বরকলে কাঠ ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত ব্যবসায়ীদের পরামর্শে নানা তদবির ও চেষ্টায় স্থানীয় প্রশাসন ও বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় ২০২২ সালের মার্চের দিকে হরিণা চ্যানেলে সব ধরনের কাঠ ও কাঠজাত দ্রব্য পরিবহণ ও বাজারজাত চালু হয়। নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে চলতি সালের এপ্রিলের শেষের দিকে হরিণা চ্যানেলে কাঠ ব্যবসায় সাময়ীক ভাটা পড়ে। প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে নদী ভরাট হলেও আগষ্ট মাসে ফের অঘোষিতভাবে বরকলে কাঠের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়।
অপশক্তির চক্রটি বরকল কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি সফল কাঠ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহ আলমের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ভাড়াটিয়া সাংবাদিকদের দিয়ে মানহানিকর, মিথ্যা,অসত্য, বানোয়াট ও মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন।
হরিণা চ্যানেলে সিন্ডিকেট বলে কিছুই নেই । বরকল কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ গঠনের পর রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ সহ সকল কাঠ ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিচ্ছে ।
(১২-১৪ লাখ ঘনফুট কাঠ আহরণ করে বাজারজাত করা হয়। এসব কাঠ থেকে হাতিয়ে ১০-১২ কোটি টাকার বাণিজ্য করে ১৪/১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট)।
এছাড়া প্রতি পারমিট থেকে চেক আপের নামে ৫০ হাজার টাকা এবং জেএসএসের নামে প্রতি ঘনফুটে ১০০ টাকা করে আদায় করেন।
বরকল কাঠ ব্যবসায়ীর সভাপতি শাহ আলম ও তার সিন্ডিকেট এবং বরকলের বড়হরিণা ইউনিয়নের বাসিন্দা কামিনী চাকমার যোগসাজশে ছোটহরিণার উজান থেকে জোত পারমিটের আড়ালে প্রচুর ভারতীয় কাঠ পাচার করা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে।)
এসব তথ্য ভূয়া, বানোয়াট ও মনগড়া আমরা “বরকলে ফের কাঠ ব্যবসা বন্ধ , অর্থনৈতিক সংকট চরমে” “সিন্ডিকেটের আধিপত্য, কারণ জানেন না কেউ” শিরোনামের সংবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়া সংবাদে “বরকল কাঠ ব্যবসায়ীর সভাপতি শাহ আলম ও তার সিন্ডিকেট এবং বরকলের বড়হরিণা ইউনিয়নের বাসিন্দা কামিনী চাকমা (কপোতেশ্বর চাকমা) যোগসাজশে ছোটহরিণার উজান থেকে জোত পারমিটের আড়ালে প্রচুর ভারতীয় কাঠ পাচার করা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে।” এটা প্রতিবেদকের মনগড়া তথ্য যাহা ডাহা মিথ্যা ও আপত্তিকর। ছোটহরিণার উজান থেকে জোত পারমিটের আড়ালে প্রচুর ভারতীয় কাঠ পাচার করা কথা বলা হয়েছে যাহা দেশপ্রেমিক সীমান্তের অতন্ত্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ছোটহরিণা ও বরকল জোন এর তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় চোরাচালান ও কাঠ পাচার রোধকল্পে কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে । জোত পারমিটের আড়ালে প্রচুর ভারতীয় কাঠ পাচার করা কথাটি বিজিবি সদস্যরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে সজাগ বা সতর্ক নয় বল ইঙ্গিত বহন করে । প্রতিবেদক তার সংবাদে একটি স্বাধীন দেশের নিয়মিত বাহিনীর প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রচারনা যাহা রাষ্ট্রদ্রোহী আপরাধের সামিল। প্রতিবেদকদের এধরনের উদ্ভট তথ্য দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসংবেদনশীল। এসকল সাংবাদিকরা কাউকে পরোয়া করেনা। তাদের এধরনের নৃসংশ ও নিষ্ঠুর আচরনে আমরা সাধারন জনগণ লজ্জিত হয়, দুঃখিত হই,আমরা ক্ষুব্দ হই তাতে এসব সাংবাদিকদের কিছু যায়-আসেনা। জবাবদিহিতার জায়গা যে আছে তারা ভাবেনও না মনেও করেন না। সফল ও সৎ কাঠ ব্যবসায়ীদের জড়িয়ে যে সংবাদ তারা প্রচার করেছে তার কোন গ্রহনযোগ্যতা স্থানীয় সরকারি প্রশাসন ও বরকলবাসির কাছে স্থান পায়নি। অর্থনৈতিক সংকট চরমে বলে তারা সংবাদ প্রচার করেছে কিন্তু তাদের করা সংবাদের কারণে বরকলের জনসাধারনের অর্থনৈতিক সংকটের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
ইত্যাদি কারণে “বরকলে ফের কাঠ ব্যবসা বন্ধ , অর্থনৈতিক সংকট চরমে” “সিন্ডিকেটের আধিপত্য, কারণ জানেন না কেউ” শিরোনামের প্রকাশিত সংবাদে বরকল উপজেলায় জোত মালিক ও বাগান মালিকসহ সংশ্লিষ্ট কাঠ ব্যবসায়ী, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত কাউকে বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিবাদকারী কাঠ ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন সময় সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ায় ৭১টি ফ্রি জোত পারমিট ইস্যু করেছিল। সেসব পারমিটের অনুকূলে ১,৩০,৫৮০ টুকরা= ৩,০১,৯৮৩ ঘনফুট কাঠ তারমধ্যে এখনো ২০টি জোত পারমিট মালিকরা বিভিন্ন সমস্যার কারণে হরিণা চ্যানেল দিয়ে কাঠ রাঙামাটিতে বাজারজাত করতে পারেনি।
বিধায় বরকল উপজেলার সংশ্লিষ্ট জোতবাগান মালিক, কাঠ ব্যবসায়ী এবং খেটে খাওয়া দিনমজুর ও পরিবহণ শ্রমিকদের আর্থিক সংকটের কথা বিবেচনা করে অনতিবিলম্বে হরিণা চ্যানেলে সব ধরনের কাঠ ও কাঠজাত দ্রব্য পরিবহণ ও বাজারজাত বন্ধকরণের মৌখিত আদেশ প্রত্যাহার করা জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বরকল কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সদস্যরা।
এছাড়া রাঙামাটির বরকল উপজেলার কাঠ ব্যবসায়ী, জোত বাগান মালিক, কাঠুরিয়া, দিনমজুর, ছোটহরিণা বাজারের ব্যবসায়ী, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে গভির ষড়যন্ত্রকারী চক্রটির সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কাঠ ব্যবসায়ীরা।