রবিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » একজন হত্যাকারী জন্য পুরো উপজাতিকে দোষারোপ করা উচিত নয়
একজন হত্যাকারী জন্য পুরো উপজাতিকে দোষারোপ করা উচিত নয়
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: কেউ জানতোনা উপজাতি বন্ধুর হাতে খুন হবে রাউজানের কদলপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক হৃদয়। হৃদয় পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁর বাড়ির পাশে একটি মুরগী খামারে ম্যানেজারের চাকরি করতেন। ওই মুরগী খামারে উপজাতি মারমা শ্রমিকের কাজ করতেন। হৃদয়ের দায়িত্ব ছিল তাদের দেখাশোনা করার। হঠাৎ একটি উপজাতির সঙ্গে হৃদয়ের কথা-কাটাকাটি হয়।পরে মুরগী খামারে মালিক তাদের মিলিয়ে দেন।এরপর থেকে তাদের সঙ্গে হৃদয়ের সুসম্পর্ক বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। বন্ধুত্বের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য হৃদয় তাঁর স্মার্ট ফোনে তাদের সঙ্গে তোলে সেলফি। ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে বন্ধুত্ব। বাড়ি নিয়ে দাওয়াতও খাওয়ায় সেই উপজাতি বন্ধুদের। সহজ সরল নিষ্পাপ হৃদয়ও কোনো দিন ভাবেনি সেই বন্ধুত্বের হাতে খুন হবে। গত ২৮ আগস্ট রাতে মুরগী খামার থেকে হৃদয়কে অপহরণ করে তাঁরা। এই ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় রাউজান,রাঙ্গুনিয়া ও কাউখালী-তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়ংকর এক পাহাড় থেকে হৃদয়ের রক্ত মাংসহীন কঙ্কাল পুলিশ উদ্ধার করে ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার। এই ভয়ংকর পাহাড়ের নাম রঙিনছড়া পাহাড়। এদিকে হৃদয় হারিয়ে শোকে স্তব্ধ হয়ে আছে তার গ্রামের বাড়ি। এখনো থামছে না তার মা-বাবার আহাজারি। ছেলে হৃদয়ের ঘরে থাকা জামাকাপড় নিয়ে কান্নাকাটি করছে মা- বাবা। জানাজা ছাড়ায় কবরস্থ করা হয়েছে হৃদয়কে। সেই কবরের পাশে বসে বসে কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে হৃদয়ের বাবা শফিকে। বাবা শফি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,এভাবে আমার বুকে মানিকে কেড়ে নিবে ভাবতেও পারিনি। দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়েও আমার ছেলেকে ছেড়ে দেননি। আমি তাদের ফাঁসি চাই। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে কয়েকজন উপজাতি জানান, যারা দোষ করেছে তাদের বিচার হওয়া দরকার। তবে পুরো জাতিকে দোষারোপ করা উচিত নয়। আমরা চাই রাউজানের হৃদয় হত্যার বিচার হোক। অনেক বাঙালি ভাই বলতেছেন উপজাতির মানুষের মাংস খায়। কিন্তু না উপজাতিরা মানুষের মাংস খায় না, এবং সবাই এক সমান না। যেমন বাঙ্গালীদের মধ্যেও সবাই এক সমান না। তেমনি উপজাতিদের মধ্যে কিছু উগ্রপন্থি রয়েছে। তাঁরাই এসব জঘন্য কাজ করে। মং মারমা নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে মাধ্যমে বলেন, হত্যাকারী কোনো ধর্মেরও নয় কোনো জাতিরও নয়। হত্যাকারী তো হত্যাকারীই। আসুন, আমরা হত্যাকারীকে একজন হত্যাকারী হিসেবেই চিহ্নিত করি। কোনো জাতি কিংবা ধর্ম দিয়ে নয়।কোনো জাতি, কোনো গোষ্ঠী কখনও খারাপ না,কয়েকজনের মাধ্যমে পুরা জাতি গোষ্ঠীকে দোষ দেওয়া ঠিক না,কিন্তু অপরাধীদের কঠোর ভাবে শাস্তি হওয়া দরকার। আপনার এভাবে কিছু মানুষ এর জন্য পুরো জাতিকে এভাবে দোষ দিতে পারেন না।হাতের পাঁচটা আঙ্গুল কিন্তু সমান না। হাড্ডি কখনো গোস্ত হয় না, পাহাড়ি আদিবাসী কখনো বন্ধু হয় না এই বিষয়টি নিয়ে আদিবাসী এক ছেলে কিছু কথা বলেন, পৃথিবীর কোনো জাতিই ছোট নয়। তবে সব জাতি সত্তার মধ্যে ভালো খারাপ রয়েছে। এটা আমাদের সবার মানতে হবে। যারা অপরাধী তাদের কঠিন শাস্তির দাবি করছি। কিন্তু একজনের দোষের দায়বার পুরো জাতিসত্তাকে কিংবা পুরো পাহাড়ি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে দিবেন না।দয়া করে কেউই উগ্রবাদী কমেন্ট করবেন না। আদিবাসীরাও মানুষ।