বুধবার ● ৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ওমানে গাড়ির চাপায় রাউজানের প্রবাসী যুবকের মৃত্যু
ওমানে গাড়ির চাপায় রাউজানের প্রবাসী যুবকের মৃত্যু
রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানের ওমান প্রবাসী মো: কাউসার (২৬) দরিদ্র পরিবারের হাল ধরতে পাড়ি জমান প্রবাসে। কিন্তু কে জানতো সেখানে গিয়ে তার এমন নির্মম মৃত্যু হবে। গত শনিবার ওমানের স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে কর্মরত গ্যারেজে কাজ করতে গিয়ে সেখানে গাড়ির চাপা পড়ে রাউজানের প্রবাসী যুককের মৃত্যু হয়। তার এই মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছালে কাউসারে বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। এলাকায় জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। আজ মঙ্গলবার বিকালে নিহত প্রবাসী যুবকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যাই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। মা হোসনে আরা অসুস্থা হয়ে বিছানায় পড়ে আছে অনেক দিন ধরে। তার দুই চোখে শুধু একমাত্র সন্তান কাউসারের জন্য চোখের পানি ঝড়ছে। মা বিছানায় পড়ে আহাজারি করছেন। অন্যদিকে বাবা নরুল আলম তিনিও কোন এক রোগে আক্রান্ত হয়ে পেটে অপরাশন করেছেন কিছু দিন আগে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর কাউসারে বাবা যেন বেঁচে থেকেও তিনি মরে গেছেন। উপযুক্ত হয়ে ওঠেছে আদরের ৩ বোন দরিদ্র পরিবারের কাউসার প্রবাসে পাড়ি জমান পরিবারের জন্য। বাড়ি গিয়ে দেখা যাই আদরের একমাত্র ভাইকে হারিয়ে তার বোনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তার ছোট বোন সবার কাছে আবদার করছেন তার ভাইকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে। তাদের আহাজারিতে সবাই চোখের পানি ফেলছেন আর সবার বোবা কান্নায় যেন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠেছে। এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে প্রবাসী কাউসারের আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে তার বাড়ি ঘরে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যাই। অসুস্থ মা ও বাবাকে বড় ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসার করার স্বপ্ন ছিলো তার। কিন্তু তার আগে চলে গেছেন তিনি। পরিবারে একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এখন চরম অসহায় হয়ে পড়েছে তার পরিবারটি। নিহত প্রবাসী কাউসারের দাদি প্রায় ১০০ বছরের বেশি হয়েছে দুই চোখের পানি ছেড়ে শুধু আদরের নাতির জন্য গিলাফ করছেন। আর বলছেন আমার নাতি তো ছলে গেল আমার সন্তানের কি হবে কে দেখবে তাদের। জানা যায়, নিহত প্রবাসী কাউসারের সাথে গত দুই বছর আগে কদলপুর গ্রামের আখি আকতারের সাথে বিবাহ হয়। নিহত প্রবাসীর বাবা নরুল আলম বলেন, শনিবার কাজ করতে গিয়ে আমার ছেলে গাড়ি চাপায় মারা যান বলে আমাদের এলাকার প্রবাসীদের মাধ্যেমে আমরা জানতে পারি। গত শুক্রবার আমাদের সাথে তার শেষ কথা হয়েছিল। আমার ছেলে প্রবাস জীবন ৪ বছর। দেশে থাকা অবস্থায় অবস্থায় সিএনজি চালিয়ে আমাদের পরিবার চলাতেন। অভাবের সংসারে একমাত্র আমার সন্তান ছিলো আমাদের স্বপ্নের বাতিঘর। পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই করার স্বপ্ন নিয়ে ওমানে যান তিনি। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ আমাদের হলো না। আমি আর আমার স্বাত্রী অসুস্থা রয়ে পড়েছি। আমার ৩ কন্যা সন্তানদের কি হবে। শুধু কান্নাকাটি করে প্রবাসী কাউসারের বাবা এসব কথা বলে যাচ্ছেন। নিহত প্রবাসী মো: কাউসার রাউজান উপজেলার ৭নম্বর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের জরিফ আলী চৌধুরী বাড়ির নরুল আলমের ছেলে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুুরু নবী।