মঙ্গলবার ● ৩১ অক্টোবর ২০২৩
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » সিলেটে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক কারিগররা
সিলেটে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক কারিগররা
হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট প্রতিনিধি :: শীতের আগমনী বার্তায় বেড়েছে প্রতিটি পরিবারে লেপ তোশকের চাহিদা। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লেপ-তোশক বানানোর কারিগরদের ব্যাস্ততা। দিনে গরমের কিছুটা আবহ থাকলেও রাতে ঠান্ডা ভাব পড়ছে। শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এতে সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার লেপ-তোশক বানানোর কারিগররা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন লেপ-তোশক তৈরিতে। চাপ পড়েছে লেপ-তোশকের কারিগর ও এই ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরও।
এদিকে শীতকে সামনে রেখে অনেকেই যারা পুরনো শীত বস্ত্র তুলে রেখেছেন সেগুলো বের করছেন। অনেকে পুরনো শীতবস্ত্র ওয়াশ করে নিচ্ছেন লর্ন্ডী দোকান থেকে। কেউ কেউ আবার নতুন করে শীতের পোষাক কিনেছেন।
উপজেলাদ্বয়ে শীতের অনুভূতি হলেও পুরোপুরি আমেজ শুরু হয়নি এখনো। সকালের শিশির আর সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামও। ফলে শহর ও গ্রামবাসী নিচ্ছেন শীত থেকে আত্মরক্ষার প্রস্তুতি। গ্রামের নারীরা সংসারের কাজের ফাঁকে পুরনো শাড়ী কাপড় দিয়ে কাঁথাগুলো নতুন করে তৈরি করতে কর্মময় ব্যস্ততা দেখা গেছে।
শীতের আগমনী বার্তায় লেপ-তোশক তৈরীর কারিগরদের বিভিন্ন গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করতেও দেখা গেছে। তারা পিঠে তুলোর গাট্টি আর কাঁধে যন্ত্র নিয়ে ফেরী করছেন। মহিলারা ডাক দিয়ে নিয়ে উঠোনে বা বারান্দায় বসিয়ে লেপ-তোশক তৈরি করানোর দৃশ্য চোখে পড়েছে।
বর্তমানে একটি লেপ বানাতে খরচ নেয়া হচ্ছে ১৩শ’ টাকা থেকে ১৮’শ টাকা পর্যন্ত। তবে তুলা আর কাপড়ের গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে লেপ তোষকের দাম কমবেশি করেন তারা।
লেপ-তোশক তৈরির ভ্রাম্যমান এক কারিগর বলেন, তারা ছয়জনের একটি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় যান। লেপ কার্পাস তুলা ৬-৭ ফিট মাপের ১০-১৫ কেজি তুলা ১৩০টাকা, ১৫-২০ কেজি তুলা ১৫০ টাকা এবং কালার তুলা ৬-৭ ফিট মাপের ৪০-৫০ কেজি তুলা ৩০০ টাকা মজুরি নেয়া হয়। আবার রঙিন তুলা হলে মজুরি একটু বেশি। এছাড়া পুরাতন কাপড় ও তুলা দিয়ে লেপ, তোশক গদি তৈরিতে মজুরি বেশি নেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, একটি লেপ সেলাই করলে মজুরি পান ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আর তোশক সেলাই করলে পান ৫০০টাকা। তিনি গড়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা উপার্জন করেন। শীত যত ঘনিয়ে আসে কাজের ব্যস্তা আরও বাড়ে। এ সময় গড়ে প্রতিদিন একজন কারিগর ৩-৪টি লেপ-তোশক তৈরি করতে পারেন।
তিনি জানান, পিতার সাথে শুরু করেছিলেন। আজ প্রায় ২৬ বছর থেকে এ কাজ করছেন। এখন প্রায় সারা বছর এ তোশক, বালিশ, যাজিম গদির কাজ করা হয়। লেপের মজুরি ১৫০ থেকে ৩শত টাকা। তোষক তৈরি করতে সময় কম লাগে এবং ১২০টাকা মজুরি। লেপ তৈরি দুজনের মিলে কাজ করলে ঘণ্টা খানেক সময় লাগে। আর একা করলে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো লাগে। শীতের মৌসুমে দিনে ৮/১০টা পর্যন্ত লেপ তৈরি করেন।
লেপ তৈরি করতে আসা মজিদ মিয়া বলেন, শীত পুরোপুরি আসার আগেই পরিবারের শীত নিবারণের জন্য লেপ তৈরি করেতে এসেছি। গত বছরের চেয়ে এবছর সবকিছুর দাম বেশি। যে কারণে আগের চেয়ে দাম একটু বেশি।
সিলেটে অপ্রীতিকর আড্ডারত ৭ জোড়া শিক্ষার্থীসহ রেস্টুরেন্ট মালিককে জরিমানা
সিলেট :: সিলেটের গোলাপগঞ্জ বাজারের চৌমুহনীতে অবস্থিত কাজি ফার্মস রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত অপ্রীতিকর আড্ডারত অবস্থায় ৭ জোড়া শিক্ষার্থীকে আটক করে এবং রেস্টুরেন্ট মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে গোলাপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ চৌধুরী’র নেতৃত্বে কাজি ফার্মস রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে অপ্রীতিকর অবস্থায় আড্ডারত শিক্ষার্থীদের ৭ জোড়া ছাত্র-ছাত্রীকে ৫ হাজার টাকা করে ৩৫ হাজার টাকা ও রেস্টুরেন্ট মালিক মামুন আহমদকে ১০ হাজার টাকাসহ ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন- গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, গোলাপগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র সরকার, উপপরিদর্শক নুর মিয়া, পার্থ সারথী দাশ।
জানা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজি ফার্মস নামে রেস্টুরেন্টে বসে অপ্রীতিকর কর্মকান্ডে লিপ্ত হন। এমনই অভিযোগ ছিলো প্রশাসনের কাছে। ৩০ অক্টোবর সকালে অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রেস্টুরেন্টে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়।