বুধবার ● ৮ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়ায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা
কুষ্টিয়ায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা
এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া, জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়ায় আরিফুল ইসলাম নামের স্বেচ্চাসেবকলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে নাশতার মামলা হয়েছে । গত ০৬ নভেম্বর রাতে সাড়ে আটটার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এবং সদর উপজেলার আলামপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মঞ্জুরুল ইসলাম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন । এই মামলায় ১৪ নং আসামী করা হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের কোষাধ্যক্ষ আরিফুল ইসলামকে । আরিফুল আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। আরিফুল ছাড়াও এই মামলায় ২১ জানের নাম উল্লেখ্সহ অজ্ঞাত আরো ২০/৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এবং ইমরান হোসেন বাপ্পী নামের একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জেলা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেয়া দিয়েছে । আরিফুলের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে জেলা কুষ্টিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মানব চাকি বলেন, আরিফুল ইসলাম আমাদের একনিষ্ট কর্মী, তার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেছে, বিষয়টি আমরা শুনেছি, এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, এবিষয়ে আমরা আমাদের নেতাদের সাথেও কথা বলেছি। আর সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ইলিয়াস খান বলেন, আরিফুল সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোষাধ্যক্ষ। সে অনেক পুরোনো এবং একনিষ্ঠ কর্মী। আরিফ গত দুই সংসদ নির্বাচনে সে নৌকার পক্ষের পোলিং এজেন্ট ছিলেন। তিনি কোন ভাবেই নাশকতার সাথে জড়িত নয়। সেখানকার স্থানীয় ভাবে গ্রুপিং এর কারনে তাকে ফাসানো হয়েছে । আর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আরিফুলের দাবী এলাকার নব্য আওয়ামীলীগার, মামুন ওরফে টাইগার মামুন উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তার আধিপত্য বিস্তারসহ তার চাচা এবং চাচাতো ভাই যারা সরকার বিরোধী আন্দোলন করছে, তাদেরকে বাচানোর জন্য স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের আইসিকে ম্যানেজ করে নাশকতার মামলায় তার নাম জড়িয়ে দিয়েছে । মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী আলামপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি মঞ্জুরুল ইসলাম বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসুচি চলাকালিন গত (০৫ নভেম্বর) রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সদর উপজেলার ভাদালিয়া বাজারে অবস্থান করছিলেন। এসময় তিনি খবর পান একদল মানুষ কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বালিয়াপাড়া বাসষ্টান্ড মোড়ে মশাল এবং টায়ারে আগুন জালিয়ে সড়ক অবরোধ করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিত্বে সেখানে গিয়ে, বাদী দেখতে পায় কয়েকজন পিকেটার সড়ক অবোধ করে গাড়ি ভাংচুর করছে। এসময় পুলিশ তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করলে পিকেটাররা পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাক্টেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইমরান হোসেন বাপ্পী নামের একজনকে আটক করে। মামলার বিষয়ে এবং এই মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কিভাবে আসামী হলো এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী এবং আলামপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি, উপ-পরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এই মামলা বা এর আসামী কারা তা আমি জানি না । আমি ভাদালিয়া বাজারে অবরোধের ডিউটিতে ছিলাম, আমাকে ওসি স্যার ডেকে মামলার এজাহারে সই সই করতে বলেন । যেহেতু আমি এই এলাকার আইসি তাই আমাকে মামলার বাদী করা হয়েছে । আপনি সাংবাদিক সবই বোঝেন। আপনি ওসি স্যারের সাথে কথা বলেন। মামলার বাদী মঞ্জুরুল ইসলাম এর কথার বিষয়ে জানতে চাইলে, কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, মিডিয়াকর্মীদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা মনে হয় সে জানে না। একটি মামলার বিষয় এবং কারা আসামী হবে তা মামলার বাদীই জানবে। আইসি কেন এই ধরনের কথা বলেছে তা তিনি জানেন না। আর আরিফুল নামের আরো কেউ সেখানে থাকতে পারে। তাই এটা নামের ভুল হতে পারে । এটি তদন্ত করে দেখা হবে। অবরাধের সাথে যুক্ত না থাকলে তার কোন সমস্যা হবে না। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অপস) পলাশ কান্তি কান্তি নাথ বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। বিনা অপরাধে কেউ ভোগান্তির স্বীকার হবে এটা কারো কাম্য নয়। আমরা দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।