রবিবার ● ১২ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » বিআরপি এগ্রোর ভেজাল কীটনাশক ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা
বিআরপি এগ্রোর ভেজাল কীটনাশক ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়া মিরপুর বাজারে আসল কোম্পানির মনোগ্রামসহ নকল কীটনাশক বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ফসলে ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। ধান, কলা সহ বিভিন্ন ফসলে পোকা দমনে কৃষক না বুঝে দোকান থেকে নকল কীটনাশক কিনে ফসলে ব্যবহার করছেন। এতে উপকারের পরিবর্তে উল্টো ক্ষতি হচ্ছে। একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিআরপি এগ্রো কোম্পানি নামে কীটনাশক নির্ধারিত দোকানগুলোর মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করে। কোম্পানির নির্ধারিত দোকানে এ কীটনাশক পাওয়া যায় ও বাইরের কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা ধান, কলা কলা সহ বিভিন্ন ফসলের জন্য পোকা দমনে এ কীটনাশক স্প্রে করেন। কিন্তু কিছুতেই পোকা দমন সম্ভব হচ্ছে না। দেখা যায়, বাজারে বিক্রি হওয়া কীটনাশকটি ভেজাল। বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়ক হুবহু নকল করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। আর কৃষকরা না বুঝে ওই নকল কীটনাশক কিনে প্রতারিত হয়েছেন। কৃষক মোফাজ্জেল হোসেন গত ১৪ ই অক্টোবর বিক্রেতা বিআরপি এগ্রো কোম্পানির প্রোপাইটার পিয়ার আলীর কাছ থেকে বিষ ক্রয় করি । কৃষক অশিক্ষিত হওয়ার কলার যেন স্পট দাগ হবে না , কলা ফ্রেশ থাকবে এবং মোটা হবে । তিনি আমাকে বিষ দেয় । সেই বিষ প্রয়োগ করায় তাহার ২ বিঘা কলা বাগান ক্ষতি হয়। মিরপুর উপজেলার কীটনাশক ব্যবসায়ীরা বলেন, বিআরপি এগ্রো কোম্পানির কীটনাশক বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়ক লাগিয়ে ভেজাল কীটনাশক তৈরি করেন। বিআরপি এগ্রো যে দেখা যায় বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে কীটনাশক তৈরি করছে বিআরপি এগ্রো কোম্পানির কীটনাশকগুলো বি আর পি জিংক ৩৬%, বি আর পি বোরন ১৭%৩, এগ্রোজিংক ২১%৪, চিলোমিন (চিলেটেডজিংক), এগ্রোভিট +( শিকড়বর্ধক), শক্তি ম্যাগসার (ম্যাগনেসিয়াম সালফেট), বিডিসি জিপসাম, কৃষি জিপসাম, কারেন্ট (জিব্রলিক এসিড), অটোজিম (হরমন), দশবিশ ১০ ইসি, বি লিডার ২.৫ ইসি ১২, হিট পাওয়ার ৫৫ ইসি ১৩, বি ম্যালাথিয়ন ৫৭ইসি ১৪, এষ্টার ৫এস জি ১৫, রকেট প্লাস ৪০ ডব্লিউ জি১৬, হিট শট ২০এস এল (ইমিডাক্লোরোপিড), কারেন্ট প্লাস (পাইমেট্রিক২০%নাইট্রেনপাইরন২০%), কৃষিফুরান ৫জি (কার্বোফুরান), কৃষিডায়াজিনন ১০জি, ইমিডর ৭০ ডব্লিউ জি (ইডিক্লোরোপিড), হিটজল ৫এস সি (হেক্সাকোনাজল), বিয়োভিট ৮০ডব্লিউ জি২৩, এনষ্টারটপ ৩২৫ইসি, পানাডা ৩৩ইসি (পেন্ডিমিথাইল), পানামা ৪৮এস এল ২.৪ডি, বনমারা ২০এসএল (প্যারাকোয়াট) বীজ সহ এ্যাকুয়া কীটনাশক তৈরি করে বাজারজাত করছেন। এ বিষয়ে তাহার স্ত্রীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমরা বিভিন্ন কোম্পানির থেকে কাঁচামাল ক্রয় করে আমাদের কোম্পানির মোড়ক লাগিয়ে বাজারে বিক্রয় করি আমাদের এটা ভেজাল না। বিআরপি এগ্রো কোম্পানির প্রোপাইটার পিয়ার আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার কোম্পানির কীটনাশক ভেজাল না আমি কোন কোম্পানির মাল ভেজাল করি না আপনারা যা পারেন করেন। মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুন বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ভেজাল কীটনাশকের সত্যতা পাওয়া যায়। নকল কীটনাশক বাজারের বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জরিমানাসহ কীটনাশক জব্দ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভেজালের সত্যতা পাওয়া যায়।কতজন কৃষক এ ভেজাল কীটনাশক ব্যবহারে ক্ষতির শিকার হয়েছেন এর সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। ভেজাল কীটনাশক বিক্রি বন্ধ এবং কৃষকদের বাঁচাতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।