শনিবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ৭১’ ছিলো আমাদের চেতনা ব্যক্তি স্বাধীনতা, আর্থিক স্বাধীনতা এবং নিজেকে গড়ে তোলার স্বাধীনতা
৭১’ ছিলো আমাদের চেতনা ব্যক্তি স্বাধীনতা, আর্থিক স্বাধীনতা এবং নিজেকে গড়ে তোলার স্বাধীনতা
রাঙামাটি :: পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাঙামাটির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বোর্ডের প্রধান কার্যালয়সহ সদর উপজেলাস্থ স্থাপিত বঙ্গবন্ধরু ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পনসহ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা, চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর নেতৃত্বে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সূর্যাদয়ের সাথে সাথে ৬.৩৫ মিনিটে রাঙামাটির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বোর্ডের প্রধান কার্যালয়সহ রাঙামাটি সদর উপজেলস্থ স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (যুগ্মসচিব), সদস্য প্রশাসন মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব), বোর্ডের উপপরিচালক মংছেনলাইন রাখাইন, নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমাসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৯টায় বোর্ডের প্রধান কার্যালয়স্থ মাইনী মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২৩ এর কর্মসূচির অংশ হিসেবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা, চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (যুগ্মসচিব)।
অনুষ্ঠানটি বোর্ডের তথ্য অফিসার ডজী ত্রিপুরা এর উপস্থাপনায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ স্বাধীনতা মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল বীর শহীদ, জীবিত মুক্তিযোদ্ধা ও দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা বোনদের প্রতি গভীর বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন ও ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অতঃপর আলোচনা সভা শুরুতে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে প্রধান অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ মঞ্চে আসন গ্রহণ এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্য শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সকল শহীদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন যে, ৭১’ ছিলো আমাদের চেতনা ব্যক্তি স্বাধীনতা, আর্থিক স্বাধীনতা এবং নিজেকে গড়ে তোলার স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা বিজয় অর্জিত হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশ একটি দারিদ্র মুক্ত,ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ে তোলার।
তিনি আরও বলেন যে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন সোনার বাংলা আজ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে রূপান্তর করার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো সেটাকে পরিপূর্ণভাবে অর্জন করতে হলে দেশের একদশমাংশ পার্বত্য চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ বিশাল এলাকাকে বাদ দিয়ে জাতীয় উন্নয়ন তরান্বিত করা সম্ভব নয়। তাই তিনি পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ যাতে উন্নয়নের সুফল পায় সেলক্ষ্যে উপস্থিত সকলকে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধুসহ বীর শহীদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে ভাইস চেয়ারম্যান বলেন যে, তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান এদেশের মানুষকে কথা বলার চিন্তা করার, চাকুরি করার, অর্থনৈতিক এবং ন্যায্য দাবী আদায়ের স্বাধীনতা দেয়নি। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল পেশাজীবি মানুষ অংশ গ্রহণ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো। আজ মহান বিজয় দিবস। এদিনটি সকলের জন্য একটি বিশেষ দিন। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় যাতে বৃথা না যায় সেলক্ষ্যে তিনি সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
এসময় বোর্ডের সদস্য প্রশাসন মোঃ জসীম উদ্দিন, বোর্ডের উপপরিচালক মংছেনলাইন রাখাইন, কাইংওয়াই ম্রো গবেষণা কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাগর পাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, জুয়েল বড়–য়া হিসাব রক্ষক প্রমুখ মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন। মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বোর্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় রাঙামাটির তবলছড়িস্থ আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ প্রার্থনা, দুপুরে বোর্ডের জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহ্ফিলসহ তবারক বিতরণ এবং সন্ধ্যায় তবলছড়িস্থ শ্রী শ্রী রক্ষা কালি মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলার ইউনিট কার্যালয়সহ বোর্ডের আওতাধীন ৪টি আবাসিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়।