মঙ্গলবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » সন্তু লারমা গ্রুপের হামলায় প্রসিত গ্রুপের নিহত দুই ইউপিডিএফ সদস্যের দাহক্রিয়া সম্পন্ন
সন্তু লারমা গ্রুপের হামলায় প্রসিত গ্রুপের নিহত দুই ইউপিডিএফ সদস্যের দাহক্রিয়া সম্পন্ন
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলার সাজেকে পিসিজেএসএস সন্তু লারমা গ্রুপ কর্তৃক প্রসিত গ্রুপের ইউপিডিএফের দুই সদস্য দীপায়ন ও আশীষ চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে সাজেকে নিহতদের মহদেহের কফিন বহন করে গণবিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ দুপুরে ইউনিাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রট (ইউপিডিএফ-মূল) এর বাঘাইছড়ি ইউনিটের উদ্যোগে এ গণবিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে আগামীকাল ৭ ফ্রেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার সাজেকের পর্যটন সড়কসহ সাজেক ইউনিয়নে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর ১২টার সময়ে মাচলং ব্রিজ পাড়া গ্রামে সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা উক্ত দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে।
ঘটনার পর সাজেক থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ময়না তদন্ত শেষে গতকাল ৫ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সন্ধ্যায় তাদের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।
এরপর তাদের দুজনের মরদেহ মৈত্রী পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে আশিষ ও দীপায়ন চাকমার মরদেহের কফিন ইউপিডিএফ’র দলীয় পতাকায় আবৃত করে রাখা হয়।
আজ মঙ্গলবার ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ দুপুর ১২টায় নিহত আশীষ ও দীপায়ন চাকমার মরদেহের কফিন সহকারে মৈত্রী পাড়া থেকে একটি গণবিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি মাচলং সেনাক্যাম্প ও সাজেক থানা এলাকা প্রদক্ষিন করে মাচলং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ২/৩ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশ শুরুর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউপিডিএফ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পিসিপি, নারী সংঘ, শহীদ পরিবারবর্গ ও এলাকাবাসী নিহতদের মরদেহের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সেখানে পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্যালুট দিয়ে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
পরে শহীদদের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে ইউপিডিএফ-মূল সংগঠক সুমন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের সাজেক ইউনিটের প্রধান সংগঠক অডিট চাকমা, গণতান্ত্রক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি নিউটন চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জলা চাকমা।
ইউপিডিএফ নেতা অডিট চাকমা বলেন, আশিষ ও দীপায়ন চাকমা জুম্ম জাতির অধিকার আদায়ের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম করে যে শহীদ হয়েছেন জাতি তাদের কখনো ভুলতে পারবে না। জুম্ম জাতির কাছে তারা চির অমর হয়ে থাকবেন।
তিনি এ যাবত পার্টির সাড়ে তিনশ’র অধিক শহীদ হয়েছেন উল্লেখ করে অতীতে সন্তু গ্রুপ কর্তৃক সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরেন।
তিনি এসব হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার-প্রশাসনেকে নিতে হবে উল্লেখ করে বলেন, সরকার-প্রশাসনের ইন্ধনেই জেএসএস সন্তু গ্রুপ সহ ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা এই হত্যার ঘটনা ঘটাচ্ছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সন্তু লারমা গ্রুপের সন্ত্রাসীরা যেভাবে দিন দুপুরে আশীষ ও দীপায়ন চাকমাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এর দায় প্রশাসন এড়াতে পারে না।
সরকার-প্রশাসন যদি পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে রক্তের হোলিখেলা খেলতে চায় তাহলে সকল পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায় নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সমাবেশ থেকে তিনি আশীষ ও দীপায়ন চাকমার হত্যাকারী সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার সাজেকের পর্যটন সড়কসহ সাজেক ইউনিয়নে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে আশীষ ও দীপায়ন চাকমার মরদেহ তাদের স্ব স্ব গ্রামে নিয়ে দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে গণবিক্ষোভ মিছিল ও দাহক্রিয়া অনুষ্ঠান বানচাল করে দেয়ার লক্ষ্যে গতকাল থেকে বাঘাইহাট জোনের সেনা সদস্যরা বাঘাইহাট বাজারের সকল প্রকার যানবাহন জোনের ফুটবল খেলার মাঠে নিয়ে রাখে।
আজ সকাল থেকে সেনাদের বাধার কারণে কোন গাড়ি চলাচল করতে দেয়নি। শুধুমাত্র পর্যটনের গাড়িগুলো সেনাদের পাহারায় চলতে দেওয়া হয়েছে।