শুক্রবার ● ১৫ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা
ঝিনাইদহে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.২০মিঃ) ঝিনাইদহে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাপান খেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন ৷ ঝাপান খেলা দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো দর্শক হাজির হন ৷ ঢাক-ঢোলের বাদন আর নাচ গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন ৷
কয়েকজন সাপুড়ে জানান, তারা বিভিন্ন স্থানে ঝাপান খেলায় অংশ নেন৷ মনসা ও নাগের জন্ম, দেবতার তুষ্টি, স্বামী ভক্তি কাহিনী সম্বলিত আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী গানের নাম ঝাপান গান ৷ বেহুলা লখিন্দারের জীবন বাঁচাতে দেবপুরীতে পৌঁছে সাপের সঙ্গে নেচে গেয়ে স্বগের্র দেবতাদের খুশি করে ৷
দেবতাদের অনুরোধে মনসা লখিন্দরসহ চাঁদের অন্য সন্তানদের জীবন ফিরিয়ে দেয়৷ বেহুলা সবকিছু নিয়ে বাড়ি ফেরে৷ হাজারো দর্শকের ভিড়ে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর যেন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ৷
সাপুড়েকে নিজে নাচতে হয় আর সাপও তার সঙ্গে হেলে দুলে নাচে ৷ কোন তন্ত্র মন্ত্র নেই এ খেলাতে ৷ নানা অঙ্গ ভঙ্গি করে সাপকে ফনা তুলে দীর্ঘক্ষণ রাখতে হয় মঞ্চে ৷ যার সাপ যত বেশি উচুঁ হয়ে বেশি সময় মঞ্চে থাকতে পারে সেই সাপুড়ে বেশি পয়েন্ট পাবেন ৷
ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে আসা সাপুড়ে সবুজ এবং ঝিনাইদহের ওস্তাদ শহিদুল ইসলাম প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান তারিককে বলেন, ‘এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা ৷ আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারন করতেন ৷ আমরা বাংলাদেশের এক প্রানত্ম থেকে অন্য প্রান্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই ৷ ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার জানান,
কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে ৷ কিন্তু ঝাপান গানের কোনো হেরফের হয়নি ৷ সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটি ৷