বৃহস্পতিবার ● ৬ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » ঢাকা » বাজেট জনগণের দীর্ঘশ্বাস আর হাহাকার আরও প্রলম্বিত করবে
বাজেট জনগণের দীর্ঘশ্বাস আর হাহাকার আরও প্রলম্বিত করবে
আজ জাতীয় সংসদে নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে গণমাধ্যম প্রদত্ত বক্তব্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কোন খবর নেই। বাজেট বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কোন সুখবর দিতে পারেনি। জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয় কমাতে বাজেটে বিশ্বাসযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেই; বরং মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় ও ক্রয়ক্ষমতা আশংকাজনকভাবে কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ঋণের ভারে জর্জরিত এই বাজেট প্রস্তাবনা স্ববিরোধী ও বেসামাল।এই বাজেট জনকল্যাণের পরিবর্তে জীবন জীবিকায় জনদুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেবে। ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে ২লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি পোষাতে ব্যাংক ব্যবস্থা আরও বেসামাল ও ঝুঁকির মধ্যে পডবে।আর এই ঘাটতির শেষ অভিঘাত এসে পড়বে সাধারণ মানুষের উপর। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকার উপর যাবে কেবল ঋণের সুদ পরিশোধেই। আর বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্রে আরও হাত বাড়ালে তারও ভুক্তভোগী হবে সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, টাকার মূল্যমান অস্বাভাবিক কমিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল - আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক দাতাদের খুশী রেখেই এই বাজেট প্রনয়ণ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কাংক্ষিত ঋণ ও বিনিয়োগ পাওয়া অনিশ্চিত।
তিনি উল্লেখ করেন, নতুন অর্থ বছরের বাজেট যে ১১ টি বিশেষ অগ্রাধিকার উল্লেখ করা হয়েছে বাজেটে তা বাস্তবায়ন করার দৃশ্যমান ও কার্যকরি কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা।
তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, লাগামহীন দূর্নীতি ও অর্থপাচার রোধ করতে বাজেটে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন,পুঁজি পাচারের মত অর্থনীতির বড় সমস্যার সমাধান, হুন্ডি কমিয়ে আনার ব্যাপারেও বাজেটে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই।তিনি বলেন,ব্যাংক ঋণের এক বড় অংশ পাচার হয়ে গেলেও বাজেটে এই নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্চ নেই।
তিনি বলেন, দেশের একটি অর্থনৈতিক দুঃসময়ে যে ধরনের সমতাধর্মী আশাবাদের বাজেট দরকার ছিল তা বাজেট প্রস্তাবনায় অনুপস্থিত। খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য কমবে কিনা ও জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয়ভার কমবে কিনা বাজেটে এরকম কোন আশাবাদী প্রস্তাব নেই। মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি পাবে কিনা তারও কোন নির্দেশনা নেই।
তিনি বলেন বাজেটে রাজস্ব ব্যয়সহ অনুৎপাদনশীল ব্যয় কমিয়ে আনার কোন প্রস্তাবনা নেই। তিনি বলেন, শিল্প,কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত মৌলিক খাতগুলোতে এবারও বরাদ্দ অপ্রতুল।
তিনি বলেন, করের আওতা বৃদ্ধি করে ও বিত্তবানদের উপর বর্ধিত কর আদায় করে রাজস্ব বৃদ্ধির দৃশ্যমান ও বিশ্বাসযোগ্য কোন প্রস্তাবনা বাজেটে নেই।
তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যুনতম মজুরি কমিশন ঘোষণা ও মহার্ঘ ভাতা চালুর ব্যাপারেও বাজেটে কোন প্রস্তাব নেই।
তিনি বলেন,”স্মার্ট বাংলাদেশে”র জন্য নাগরিকদের ভোটের অধিকারসহ যে সক্ষমতা দরকার অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনায় এই ব্যাপারেও কোন আশাবাদ নেই।
তিনি বলেন, এই বাজেট দারিদ্র্য ও নিঃস্বকরন প্রক্রিয়াকে পরোক্ষভাবে আরও জোরদার করবে এবং জনগণের দীর্ঘশ্বাস ও হাহাকার আরও প্রলম্বিত করবে।